Miracle Baby Girl

কিডনি নেই, জন্মের আগেই চিকিৎসকেরা জানান বাঁচবে না শিশু! কন্যাকে নতুন জীবন দেয় মায়ের লড়াই

চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, বাঁচার আশা প্রায় নেই। শেষ পর্যন্ত সব প্রতিকূলতাকে জয় করে দিব্যি বড় হচ্ছে সে। একরত্তিকে জীবন দিয়েছেন মা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৫০
Share:
০১ ১৭

‘মির‌্যাকল’ শিশু তাকে বলাই চলে। কিডনি ছাড়াই জন্মেছিল সে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, বাঁচার আশা প্রায় নেই। শেষ পর্যন্ত সব প্রতিকূলতাকে জয় করে দিব্যি বড় হচ্ছে সে। একরত্তিকে জীবন দিয়েছেন মা।

০২ ১৭

২০২১ সালের মার্চে জন্ম হয় এমি হোপ মাহোনির। মা অ্যান্ডি মাহোনিকে জানানো হয়, তাঁর মেয়ে বাঁচবে না। এখন সেই এমির বয়স দু’বছর। আর পাঁচটা বাচ্চার মতোই বড় হচ্ছে সে।

Advertisement
০৩ ১৭

ফ্লোরিডার জ্যাকসনভিলের বাসিন্দা অ্যান্ডি। সন্তানধারণের পর সব স্বাভাবিকই ছিল। ২০ সপ্তাহের মাথায় ২০২০ সালের নভেম্বরে স্ক্যান করে ধরা পড়ে গর্ভস্থ ভ্রূণের বাইল্যাটারাল রেনাল এজনেসিস রয়েছে। অর্থাৎ তার কিডনি কখনও পরিণত হবে না।

০৪ ১৭

জন্মের সময় আমেরিকায় প্রতি সাড়ে ৪ হাজার শিশুর মধ্যে এক জনের এই সমস্যা দেখা যায়। তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশেরই মৃত্যু হয় গর্ভে। যারা জীবিত অবস্থায় জন্মায়, তাদের আয়ু হয় কয়েক ঘণ্টা।

০৫ ১৭

অ্যান্ডি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন, তিনি সন্তানকে বাঁচাবেনই। প্রথম বার স্ক্যান করে ধরা পড়ার পরেই তিনি যোগাযোগ করেন এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে। তিনি থাকেন মায়ামিতে। জ্যাকসনভিল থেকে ছ’ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে মায়ামি পৌঁছন অ্যান্ডি।

০৬ ১৭

চিকিৎসক তাকে এ ধরনের শিশুর সমস্যাটা বুঝিয়ে দেন। জানান, কিডনি না থাকায় এই শিশুরা মূত্রত্যাগ করতে পারে না। সে কারণে তরল গ্রহণও করতে পারে না। কেন এ রকম হয়, তার কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে জিনগত কারণে এ রকম হতে পারে।

০৭ ১৭

বাইল্যাটারাল রেনাল এজনেসিস বা পটার সিনড্রোমে শিশুর ফুসফুসেরও বিকাশ হয় না। শিশুকে গর্ভে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নানা রকম তরল প্রবেশ করানো হত অ্যান্ডির শরীরে।

০৮ ১৭

অ্যান্ডি যখন ৩৪ সপ্তাহের গর্ভবতী, তখন অ্যামনিয়োটিক স্যাক (যে থলিতে ভ্রূণ থাকে) ফেটে যায়। তখনও প্রসববেদনা শুরু হতে অনেক দিন বাকি। এই পরিস্থিতিতে গর্ভস্থ শিশুর সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

০৯ ১৭

অ্যান্ডি জানতে পারেন, ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ডের একটি হাসপাতাল পটার সিনড্রোম থাকা শিশু প্রসব করাতে পারদর্শী। অ্যামনিয়োটিক স্যাক ফেটে যাওয়ার পর তড়িঘড়ি তিনি বিমানে চেপে জ্যাকসনভিল থেকে ক্যালিফোর্নিয়ায় যান।

১০ ১৭

জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই এমিকে অস্ত্রোপচারের জন্য পাঠিয়ে দেন চিকিৎসকেরা। একরত্তিকে দেখারও সুযোগও পাননি মা। অ্যান্ডি জানিয়েছেন, সে সময় শুধুই প্রার্থনা করে চলেছিলেন তিনি। ভাবছিলেন, আর কোনও দিন কি দেখতে পারবেন নিজের সন্তানকে?

১১ ১৭

এমির ফুসফুস ছিল অপরিণত। সব মানুষের দুটো কিডনি থাকে। এমির একটিও কিডনি ছিল না। এই অঙ্গ শরীর থেকে বর্জ্য বার করে দেওয়ার কাজে লাগে। তা না থাকায় প্রাণসংশয় তৈরি হয় এমির।

১২ ১৭

চিকিৎসকেরা জানান, একটি কিডনি পেলে বেঁচে যেতে পারে ছোট্ট এমি। শুনে মা অ্যান্ডি আর দ্বিধা করেননি। সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেন, মেয়েকে কিডনি দেবেন তিনি।

১৩ ১৭

কিন্তু দেব বললেই তো কিডনি দেওয়া যায় না। দাতা এবং গ্রহীতার রক্তের কিছু বিষয়ে মিল থাকতে হয়। সৌভাগ্যবশত এমি আর অ্যান্ডির সে সব মিলে যায়।

১৪ ১৭

তবে এমির কিডনি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বয়স। চিকিৎসকেরা জানান, অন্তত আড়াই বছর বয়স না হলে তাঁর অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। অ্যান্ডির মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে।

১৫ ১৭

চিকিৎসকেরা জানান, যত দিন না কিডনি প্রতিস্থাপন হচ্ছে, তত দিন ডায়লিসিস করাতে হবে এমির। ছ’মাস বয়স পর্যন্ত হাসপাতালেই ভর্তি ছিল এমি। তার পর ছাড়া পায়।

১৬ ১৭

এর পর আড়াই বছর পর্যন্ত নিয়মিত এমিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডায়লিসিস করাতেন অ্যান্ডি। এই প্রক্রিয়ায় রক্ত থেকে দূষিত পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল শরীর থেকে বার করে দেওয়া হয়।

১৭ ১৭

মেয়ের ডায়লিসিসে সুবিধার জন্য জর্জিয়ার হাসপাতালের কাছেই বাড়ি নেন অ্যান্ডিরা। ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই কিডনি প্রতিস্থাপন হয় এমির। এখন আর পাঁচটা সাধারণ বাচ্চার মতোই সুস্থ জীবন যাপন করছে সে। অ্যান্ডির মনে হয়, এ সবই যেন স্বপ্ন!

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement