Murder

Murder: মুণ্ডহীন দেহ গাছে হেলান দেওয়া, জিভ কাটা কুচিকুচি করে! কেন এ ভাবে খুন হলেন ব্র্যান্ডন

গ্রামের পাশের জঙ্গল থেকে মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয়েছিল ব্র্যান্ডনের। খবর পেয়েই মা সংজ্ঞা হারিয়েছিলেন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২১ ১২:০৯
Share:
০১ ১০

রোজ সকাল হলেই হাঁটতে বেরিয়ে যেতেন একাই। ঠিক সময়ে বাড়িও ফিরে আসতেন। কিন্তু সে দিনটা একেবারে অন্যরকম ছিল। সকাল পেরিয়ে বিকেল হয়ে গেলেও তিনি ঘরে ফেরেননি। ভয়ে বুক শুকিয়ে এসেছিল মায়ের। খোঁজ-খবর করেও সন্ধ্যা পর্যন্ত ছেলের সন্ধান না পেয়ে শেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।

০২ ১০

এর কয়েক দিন পর গ্রামের পাশের জঙ্গল থেকে মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয় ছেলের। গাছে পিঠ রেখে তখনও বসে ছেলে। খবর পেয়েই মা সংজ্ঞা হারিয়েছিলেন। তারপর শুরু হয় তাঁর আলাদা সংগ্রাম। খুনিকে ধরার জন্য নেতা-পুলিশের দরজার দরজায় ঘুরতে শুরু করেন তিনি। পাঁচ বছর হল ছেলে খুন হয়েছেন, কিন্তু এখনও খুনের কিনারা হয়নি। উপরন্তু প্রমাণের অভাবে সেই তদন্ত বন্ধ করে দিচ্ছে পুলিশ। মায়ের মন আরও অস্থির হয়ে ওঠে। বিচারের আশায় আজও দরজায় দরজায় কড়া নাড়িয়ে চলেছেন তিনি।

Advertisement
০৩ ১০

২০১৬ সালের ঘটনা। ২২ বছরের কলেজ পড়ুয়া ব্র্যান্ডন গঞ্জালভেস খুনের সেই মর্মান্তিক ঘটনা ভুলতে পারেনি গোটা গ্রাম। সম্প্রতি মুম্বই পুলিশ খুনের কিনারা করতে না পেরে এবং উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তদন্ত বন্ধের আর্জি জানিয়েছে আদালতে।

০৪ ১০

সে দিন ছিল ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬। রোজকারের মতো সে দিনও ঘুম ভাঙলে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে যান ব্র্যান্ডন। পশ্চিম গুরগাঁওয়ের বাসিন্দা ছিলেন ব্র্যান্ডন। রোজ হেঁটে অ্যারে কলোনি পর্যন্ত যেতেন তিনি। তারপর ফের বাড়ি ফিরে আসতেন। সব মিলিয়ে ঘণ্টা খানেক সময় লাগত তাঁর। সে দিন আর ফেরেননি। বিকেল পর্যন্ত ছেলের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন তাঁর মা। তারপরই থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশও বহু খোঁজ চালিয়েছিল। বন্ধুবান্ধব, পরিজন, প্রাক্তন প্রেমিকা সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করে। ব্র্যান্ডনের সন্ধান মেলেনি।

০৫ ১০

এর তিন দিন পর অ্যারে কলোনির এক বাসিন্দা জঙ্গলের মধ্যে মুণ্ডহীন দেহ দেখতে পান। কাঁধ থেকে দেহটি যেন কেউ যত্ন করে গাছে হেলান দিয়ে বসিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। শরীর ছিল সম্পূর্ণ নগ্ন। যার ২০ মিটার দূরে কাটা মুণ্ডু এবং জামা-কাপড় উদ্ধার হয়। এর থেকে আবার কিছু দূরে একটি আয়না, নারকেল, জুতো, দড়ি, হলুদ এবং কুমকুম উদ্ধার হয়। পুজোর আরও কিছু সরঞ্জামও ছিল।

০৬ ১০

সেটিই ছিল ব্র্যান্ডনের দেহ। ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, তাঁর জিভ, স্বরযন্ত্র (ভয়েস বাক্স) এবং চিবুক থেকে বুকের ছাতি পর্যন্ত ভিতরের কোনও প্রত্যঙ্গ ছিল না। সেগুলো পরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছিল। মুণ্ডচ্ছেদ করার কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল, রিপোর্ট দেন চিকিৎসকেরা।

০৭ ১০

এ ছাড়া কপালে এবং ডান হাতে দু’টো ক্রস চিহ্ন করা ছিল। যা কোনও ধারালো কিছু দিয়ে বানানো হয়েছিল। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে আরও নানা রকম চিহ্ন আঁকা ছিল।

০৮ ১০

ব্র্যান্ডনের দেহ দু’বার কাটা হয়েছিল। চিকিৎসেরা জানিয়েছিলেন, প্রথমে ধড় থেকে গলা-সহ মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। তারপর চিবুক থেকে গলা পর্যন্ত অংশ আলাদা করে কেটে ফেলা হয়েছিল। এর পর ব্র্যান্ডনের জিভকে ছোট ছোট করে কাটা হয়েছিল। চিবুক থেকে চামড়াও ছাড়িয়ে নেওয়া হয়েছিল। এই খুনের ভয়াবহতা দুঁদে অফিসারদেরও কাঁপিয়ে দিয়েছিল।

০৯ ১০

তদন্তকারীদের কাছে এটা পরিষ্কার ছিল যে, কালো জাদুর কোনও আচার পালনের জন্যই ব্র্যান্ডনকে খুন করা হয়েছিল। কিন্তু কে বা কারা এমন কাজ করেছিলেন, তা আজও জানতে পারেননি তাঁরা। উপরন্তু ব্র্যান্ডনের ডায়েরির খাতায় এবং ঘরের দেওয়ালে কিছু অদ্ভুত আঁকা ছবি দেখেছিলেন তাঁরা। তার প্রত্যেকটিই একটি চরিত্রের, যে বিভিন্ন প্রাণীদের মাথা কেটে ধড় থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। ব্র্যান্ডন তাঁর এমন পরিণতির কথা আগে থেকেই জানতেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন জাগে তদন্তকারীদের মনে।

১০ ১০

প্রশ্ন অনেক। সে সমস্ত প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি। আজও খুনের কোনও কিনারা করে উঠতে পারেননি তাঁরা। কোনও সন্দেহভাজনকেও গ্রেফতার করতে পারেননি এই পাঁচ বছরে। উপরন্তু তথ্য-প্রমাণের অভাবে পুলিশ সম্প্রতি তদন্ত বন্ধের আর্জি জানিয়েছেন মুম্বইয়ের আদালতে। ছেলের খুনের কিনারা করতে, অপরাধীদের শাস্তি দিতে আজও নেতা-পুলিশের দরজায় কড়া নেড়ে চলেছেন তাঁর মা। প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement