Saradha Chit Fund Case

নিলামে উঠছে সারদার স্থাবর সম্পত্তি, ২০১৩ থেকে চলা সুদীপ্ত-দেবযানীর মামলা কত দূর এগোল?

২০১৩-এর ২৩ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের সোনমার্গ থেকে সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনকে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেফতার হন সুদীপ্তের সঙ্গী দেবযানী মুখোপাধ্যায়কেও।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২২ ১৬:০৬
Share:
০১ ২০

সারদা মামলায় সারদা গ্রুপ অফ কোম্পানিজের যাবতীয় স্থাবর সম্পত্তি নিলামে উঠছে। ররিবার সেবির তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে আগামী ৯ নভেম্বর এই ‘ই-অকশন’ অনুষ্ঠিত হবে।

০২ ২০

৯ নভেম্বরের নিলামে অংশ নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ৩ নভেম্বরের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। শুধু সারদাই নয়, সংস্থার ডিরেক্টরদের যাবতীয় স্থাবর সম্পত্তিও ওই দিন নিলামে উঠতে চলেছে। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমনই জানিয়েছে সেবি।

Advertisement
০৩ ২০

সারদা-কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর ২০১৩-এর ২৩ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের সোনমার্গ থেকে সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনকে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেফতার হন সুদীপ্তের সঙ্গী দেবযানী মুখোপাধ্যায়কেও। সেই শুরু সারদা মামলার।

০৪ ২০

২০১৪-এর জুনে সুপ্রিম কোর্ট সারদা মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতেই এই তদন্ত হবে বলেও জানিয়ে দেয় শীর্ষ আদালত। সিবিআইকে বৃহত্তর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের তদন্ত করতে বলে আদালত।

০৫ ২০

সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে শুরু হয় সারদা মামলায় সিবিআই তদন্ত। সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন, তাঁর সঙ্গী দেবযানী-সহ ছ’জনকে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই। তদন্তভার হাতে নেওয়ার ৮৪ দিন পর, অক্টোবরে প্রথম চার্জশিট আদালতে জমা দেয় সিবিআই।

০৬ ২০

সিবিআই সূত্রে খবর, ২০০৬-০৭ থেকে এক খণ্ড জমি বা ফ্ল্যাট পাইয়ে দেওয়ার যে প্রকল্প সারদা শুরু করে, তাতে টাকা ঢেলেছিলেন লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষ। তদন্তকারীদের দাবি, জমি, ফ্ল্যাট পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা তুলেছিলেন সুদীপ্ত।

০৭ ২০

ওই প্রকল্প গতি পায় ২০০৮-০৯ সালে। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে অধিকাংশ আমানতের মেয়াদ পূরণ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩-এর এপ্রিল নাগাদ। বকেয়া মেটানোর জন্য ১৬ থেকে ৩০ এপ্রিলের সময় দেওয়া হয়েছিল।

০৮ ২০

কিন্তু ২০১৩-এর ১৬ এপ্রিল থেকেই রাজ্যের সর্বত্র সারদার শাখা কার্যালয়গুলোর ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায়। একই দিনে সম্পূর্ণ বিনা নোটিসে বন্ধ হয়ে যায় সারদার সদর দফতর, সল্টলেকের মিডল্যান্ড পার্কের অফিসটিও।

০৯ ২০

অফিস যে বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সেই খবর হাওয়ার গতিতে ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। দিকে দিকে শুরু হয় বিক্ষোভ। এই সময় সুযোগ বুঝে গা ঢাকা দেন সুদীপ্ত সেন। সঙ্গে দেবযানী। শেষ পর্যন্ত ২৩ এপ্রিল সোনমার্গ থেকে গ্রেফতার।

১০ ২০

সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশ বিভিন্ন জেলায় প্রায় ১৯৪টি মামলা রুজু করে। পরে তদন্তভার হাতে নিয়ে সুদীপ্তের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করে সিবিআই। পাশাপাশি, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং সেবি-ও সুদীপ্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে।

১১ ২০

চারটির মধ্যে সিবিআইয়ের দায়ের করা তিনটি মামলায় সুদীপ্তের ইতিমধ্যেই জামিন হয়েছে। রাজ্য পুলিশের অধিকাংশ মামলাতেও তিনি জামিন পেয়েছেন। তবে আর্থিক অবস্থার কারণে বেশির ভাগ মামলাতেই ‘বেল বন্ড’ জমা দিতে পারেননি সুদীপ্ত।

১২ ২০

এই মামলায় নাম জড়ায় শাসক দলের একাধিক নেতা মন্ত্রীর। ২০১৩-য় রাজ্য সরকারের পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে সিবিআইকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন সুদীপ্ত। সেখানে তিনি কয়েক জন রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে তাঁর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। সিবিআই পরে কয়েক জন নেতাকে গ্রেফতারও করে।

১৩ ২০

পরে জেলে বসে আরও একাধিক চিঠি লেখেন সুদীপ্ত। তারই একটি চিঠিতে বর্তমানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও একগুচ্ছ অভিযোগ করেন সুদীপ্ত। যা নিয়ে বিজেপি এবং শুভেন্দুকে আক্রমণ করে তৃণমূল। যদিও সুদীপ্তকে সব ‘শিখিয়ে পড়িয়ে’ বলানো হচ্ছে বলে পাল্টা দাবি করেন শুভেন্দু।

১৪ ২০

শুভেন্দু ছাড়াও কংগ্রেস, সিপিএমেরও একাধিক প্রথম সারির নেতার বিরুদ্ধে জোর করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ চিঠিতে করেছেন সারদাকর্তা সুদীপ্ত। সেই চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।

১৫ ২০

সারদার সম্পত্তি এবং আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য শ্যামল সেন কমিশন গঠন করেছিল রাজ্য সরকার।

১৬ ২০

সেই কমিশনের কাছে সারদার সম্পত্তির হিসাব রয়েছে। তবে রাজ্য ওই কমিশন বন্ধ করে দেওয়ার পর তাদের রিপোর্ট এখনও জনসমক্ষে আসেনি। আইনজীবী অরিন্দম দাসের দাবি, কলকাতা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে সেই রিপোর্ট জমা রয়েছে।

১৭ ২০

মনে করা হচ্ছে, ১ হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পত্তির খতিয়ান পেয়েছিল শ্যামল সেন কমিশন। তবে সময়ের সঙ্গে অনেক সম্পত্তি হারিয়ে যাচ্ছে।

১৮ ২০

রাজ্য শ্যামল সেন কমিশন বন্ধ করে দেওয়ার পর হাই কোর্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদারের কমিটি গঠন করে দেয়।

১৯ ২০

সেবি বেশ কয়েকটি ধাপে সারদার সম্পত্তি নিলাম করছে। তা থেকে তারা ২৫০-৩০০ কোটি টাকার সম্পত্তি হদিস পেয়েছে। তা তারা নিলাম করে এসপি তালুকদার কমিটির কাছে জমা দেবে। তালুকদার কমিটি আমানতকারীদের ফেরত দেওয়ার কাজ করবে।

২০ ২০

এরই মধ্যে সেবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে সেবির কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বরের বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনপত্র গ্রহণের শেষ সময় ২৮ অক্টোবর এবং ১ নভেম্বর নিলাম হওয়ার কথা থাকলেও উৎসবের মরসুমের প্রেক্ষিতে যাতে আরও বেশি ইচ্ছুক ক্রেতা নিলামে অংশ নিতে পারেন, সে কথা ভেবে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ও নিলামের দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সব ছবি আনন্দবাজার আর্কাইভ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement