solar power

Solar-powered plane: বিনা জ্বালানিতে ভেসে থাকতে পারে এক বছর! আমেরিকার নয়া গুপ্তচর উপগ্রহ এই বিমান?

গভীর সমুদ্রে মাছের ঝাঁকের সন্ধান বা জঙ্গলের দাবানল নেভানোর পাশাপাশি গুপ্তচর উপগ্রহ বা হামলাকারী ড্রোনের কাজও করতে পারে সৌরশক্তি চালিত বিমান ‘সোলার ইমপালস ২’।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২২ ১২:০৬
Share:
০১ ২০

উদ্দেশ্য ছিল, জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কাটিয়ে দূষণহীন পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তির ব্যবহার। আর সেই লক্ষ্যেই বার্ট্রান্ড পিকার্ড এবং আন্দ্রে বরশবার্গ বানিয়েছিলেন সৌরশক্তি চালিত বিমান ‘সোলার ইমপালস ২’।

০২ ২০

সুইৎজারল্যান্ডের ওই দুই বিজ্ঞানী ২০০৩ সালে সৌরশক্তি চালিত বিমান বানানোর চেষ্টা শুরু করেছিলেন। বাজেট ছিল ৯ কোটি ইউরো (প্রায় ৭২৬ কোটি টাকা)। লক্ষ্য ছিল— এক দশকের মধ্যে সাফল্য অর্জন।

Advertisement
০৩ ২০

২০০৯ সালে প্রথম সফল পরীক্ষামূলক উড়ান হয় ‘সোলার ইমপালস ২’-র। মাটি থেকে মিটার দেড়েক উঁচু দিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশো মিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়েছিল বিমানটি।

০৪ ২০

২০১৩ সালে প্রথম দূরপাল্লার যাত্রা করেছিল ‘সোলার ইমপালস ২’। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার একটি বিমানঘাঁটি থেকে ভোর ৬টায় যাত্রা শুরু করে টানা ১৮ ঘণ্টা পাড়ি দিয়ে রাত সাড়ে ১২টায় পৌঁছেছিল অ্যারিজোনা প্রদেশের রাজধানী ফিনিক্সে।

০৫ ২০

২০১৫ সালে তাঁদের তৈরি বিমান নিয়ে বিশ্ব পরিক্রমায় বেরিয়েছিলেন পিকার্ড এবং বরশবার্গ। এসেছিলেন ভারতেও। আমেরিকা থেকে রওনা হয়ে প্রথমে অতলান্তিক পেরিয়ে দক্ষিণ ইউরোপ। তার পর উত্তর আফ্রিকা হয়ে পশ্চিম এশিয়ায়।

০৬ ২০

আবু ধাবি হয়ে টানা উড়ানে আমদাবাদে পৌঁছেছিল ‘সোলার ইমপালস ২’। এর পর উড়ে গিয়েছিলেন বারাণসীতে। মায়ানমার, চিন হয়ে ফের আমেরিকায় ফিরে যান দুই সুইস বিজ্ঞানী।

০৭ ২০

সোলার সেলের সারি থাকার কারণে সৌরশক্তি চালিত এই বিমানের ডানার বিস্তার প্রায় একটি বোয়িং-৭৪৭ জেটের সমান। কিন্তু কার্বন ফাইবারের তৈরি বলে ওজন খুবই কম। একটি এসইউভি-র চেয়ে সামান্য বেশি!

০৮ ২০

বিমানের পিঠের উপর রয়েছে ৭২ মিটার টানা লম্বা ডানা। তার উপর বসানো ১৭,২৪৮টি সোলার সেল বা সৌরকোষ। যারা শুষে নিতে পারে সূর্যের শক্তি। আর সেই শক্তিকে রসদ করেই পাড়ি দেয় বিমান।

০৯ ২০

দিনের বেলায় সোলার সেলগুলিতে যে সৌরশক্তি জমা হয়, তাতে নির্ভর করে রাতেও উড়তে পারে ‘সোলার ইমপালস ২’। বিমানের সর্বোচ্চ গতিবেগ ভূপৃষ্ঠ থেকে ২৮,০০০ ফুট উপরে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার।

১০ ২০

শুধু ওড়াই নয়। বিনা জ্বালানিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আকাশে স্থির হয়ে ভেসে থাকতে পারে ওই সৌরবিমান। আর এই অভিনব প্রযুক্তিগত কৌশল তাকে এই নতুন ভূমিকায় কার্যকর করে তুলেছে।

১১ ২০

২০১৯ সালে এই সৌরবিমানের স্বত্ব কিনে নেয় আমেরিকান-স্পেনীয় সংস্থা ‘স্কাইডোয়েলার অ্যারো’। তারা এই ‘সোলার ইমপালস ২’-এর ভেসে থাকার গুণ কাজে লাগিয়ে সেটিকে একটি উপগ্রহ হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা নেয়।

১২ ২০

‘ছদ্ম উপগ্রহ’ হিসেবে বিমানকে ব্যবহারের এই পরিকল্পনা সফল হলে টেলি যোগাযোগ, ভূপৃষ্ঠ, ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, দুর্যোগ মোকাবিলা, সমুদ্র ও মহাকাশ গবেষণা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের খোঁজের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে। খরচও কমবে।

১৩ ২০

‘স্কাইডোয়েলার অ্যারো’-র সিইও রবার্ট মিলারের দাবি, বিনা জ্বালানিতে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলে (ট্রপোস্ফিয়ার) টানা এক বছর পর্যন্ত এক জায়গায় স্থির ভাবে ভেসে থাকতে পারে এই সৌরবিমান।

১৪ ২০

পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্য ব্যবহার হয় না ‘সোলার ইমপালস ২’-তে। ফলে পরিবেশ দূষণের কোনও সম্ভাবনা নেই। আশঙ্কা নেই পৃথিবীকে ঘিরে থাকা ওজোন স্তরের কোনও ক্ষতিরও। জীবাশ্ম-নির্ভর জ্বালানি চালিত রকেট ওজোন স্তরের ক্ষতি করে।

১৫ ২০

মহাকাশে ভেসে থাকা উপগ্রহগুলির কার্যকাল শেষ হয়ে গেলেও অনেক সময়ই সেটি পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা যায় না। মহাকাশবর্জ্য হিসেবে ভেসে বেড়ায় সেগুলি। অন্য উপগ্রহ বা মহাকাশযানের সঙ্গে সংঘর্ষে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে। এ ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা নেই।

১৬ ২০

‘সোলার ইমপালস ২’-এর স্বত্ব কেনার পরবর্তী দেড় বছরে আধুনিকীকরণ সংক্রান্ত গবেষণায় কয়েক কোটি ডলার ব্যয় করে ‘স্কাইডোয়েলার অ্যারো’। ২০২০ সালের নভেম্বরে হয় নতুন রূপটির প্রথম পরীক্ষামূলক উড়ান।

১৭ ২০

দক্ষিণ-পূর্ব স্পেনে সংস্থার বিমান গবেষণাকেন্দ্রে এখনও পর্যন্ত সৌরবিমানের নয়া সংস্করণটির এক ডজনেরও বেশি পরীক্ষামূলক উড়ান হয়েছে। হয়েছে আরও কিছু পরিবর্তন।

১৮ ২০

মিলার জানিয়েছেন, ‘সোলার ইমপালস ২’-এর চালকহীন সংস্করণও তৈরি করতে চান তাঁরা। এর ফলে ভবিষ্যতে নজরদারি বা হামলাকারী ড্রোন হিসেবেও এই সৌরবিমানকে ব্যবহার করা যাবে।

১৯ ২০

২০২৩ সাল থেকেই এই বিমানের বাণিজ্যিক ব্যবহার সম্ভব হবে বলে আশাবাদী ‘স্কাইডোয়েলার অ্যারো’-র কর্ণধার। তাঁর মনে, জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির পাশাপাশি আগামী দিনে গুপ্তচরবৃত্তি এবং সামরিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বিমানটি।

২০ ২০

সৌরবিমানের কার্যকারিতা দেখে প্রাথমিক ভাবে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আমেরিকা সেনা। মিলারের সংস্থার সঙ্গে ১ কোটি ১৪ লক্ষ ডলারের চুক্তিও করেছে তারা। বর্তমানে আমেরিকার কোনও ড্রোনই টানা ৩০ ঘণ্টার বেশি উড়তে পারে না। সেই সমস্যা মেটাতে পারে ‘সোলার ইমপালস ২’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement