দক্ষিণী ফিল্মজগতের প্রথম সারির অভিনেতা বলে কথা। ৭০ বছর বয়স হলেও তাঁর অভিনয় নিয়ে প্রশ্ন তোলার জায়গা নেই। পেশাগত জীবন নিয়ে সমালোচনা তেমন না হলেও নায়কের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাটাছেঁড়া চলেছে বিস্তর। দু’টি বিয়ে। এক দশক ধরে নায়িকার সঙ্গে একত্রবাস। এমনকি, প্রেমিকার মায়ের কথা শুনে নাকি সম্পর্কই ভেঙে দিয়েছিলেন কমল হাসন।
সত্তরের দশকে অভিনয়জগতে কেরিয়ারের গাড়ি সদ্য চালাতে শুরু করেছেন কমল। সেই সময় তাঁর আলাপ হয় দক্ষিণী অভিনেত্রী শ্রীবিদ্যার সঙ্গে। তিনিও ছিলেন নবাগতা। একসঙ্গে একাধিক দক্ষিণী ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তাঁরা। পেশাগত সূত্রে দুই তারকার পরিচয় হলেও সেই সম্পর্ক প্রেমে দানা বাঁধে।
কমল এবং শ্রীবিদ্যার সম্পর্ক নিয়ে দক্ষিণী ফিল্মজগতে আলোচনা শুরু হয়। দুই তারকার পরিবার চাইত, তাঁরা যেন তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলেন। কিন্তু ভবিষ্যতের স্বপ্নপূরণে বাদ সাধে কমলের কেরিয়ার।
কৈরালি টিভি নামের স্থানীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় কমলের সঙ্গে সম্পর্ক এবং বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন শ্রীবিদ্যা। কমলের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর যে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তা-ও জানিয়েছিলেন শ্রীবিদ্যা।
শ্রীবিদ্যার দাবি, তিনি কমলের বাবার খুবই আদরের ছিলেন। নায়িকার পরিবারও চাইত যে, কমলের সঙ্গে তাদের কন্যার বিয়ে হয়ে যাক। কিন্তু কমলের কেরিয়ার সেই সময় দ্রুত গতিতে এগোতে শুরু করেছে। তাই তখনই সংসার বাঁধতে চাননি তিনি।
অন্য দিকে তাড়াতাড়ি বিয়ে সেরে ফেলার ইচ্ছা ছিল শ্রীবিদ্যার। কমলকে সে কথা জানাতেই দু’জনের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। শ্রীবিদ্যার সঙ্গে হঠাৎ যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলেন কমল।
দীর্ঘ দিন যোগাযোগ বন্ধ রাখার পর হঠাৎ শ্রীবিদ্যার বাড়ি চলে গিয়েছিলেন কমল। বিয়ে নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই শ্রীবিদ্যার মা তাঁর মতপ্রকাশ করেছিলেন। দুই তারকাকে আরও চার-পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে বলেছিলেন তিনি।
শ্রীবিদ্যা বলেছিলেন, ‘‘আমার মা কমলকে বলেছিল আরও কয়েকটা বছর অপেক্ষা করতে। কারণ আমরা দু’জনেই কেরিয়ার শুরু করেছি। মাত্র ২২ বছর বয়স ছিল আমাদের।’’
শ্রীবিদ্যার মা কমলকে বলেছিলেন, ‘‘তুমি ইন্ডাস্ট্রিতে আরও কিছু দিন কাজ করো। অনেক বড় অভিনেতা হবে তুমি। আমার মেয়েরও অনেকটা পথ হাঁটার রয়েছে। চার-পাঁচ বছর অপেক্ষা করো। হতে পারে, ভবিষ্যতে অন্য কোনও মানুষকে ভাল লাগতে পারে। কম বয়সে তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করলে পরে পস্তাতে হবে।’’
শ্রীবিদ্যার মায়ের কথা শুনে রেগেমেগে প্রেমিকার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন কমল। শ্রীবিদ্যার সঙ্গে সম্পর্কও ভেঙে দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন শ্রীবিদ্যা।
শ্রীবিদ্যার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর নৃত্যশিল্পী বাণী গণপতির প্রেমে পড়েছিলেন কমল। ১৯৭৮ সালে তাঁরা বিয়েও করেন। ১০ বছর পর ১৯৮৮ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।
বিবাহবিচ্ছেদের পর অভিনেত্রী সারিকাকে বিয়ে করেন কমল। সেই সংসারও বেশি দিন টেকেনি। ২০০৪ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের।
কানাঘুষো শোনা যেতে থাকে যে, ২২ বছরের ছোট অভিনেত্রী সিমরন বগ্গার সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন কমল। তবে সেই সম্পর্কও বেশি দিন টেকেনি অভিনেতার।
অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, গৌতমী নামের এক অভিনেত্রীর সঙ্গেও সম্পর্কে ছিলেন কমল। গৌতমী ছিলেন বিবাহবিচ্ছিন্না এবং এক কন্যার মা। তবে গৌতমীকে বিয়ে করেননি কমল।
গৌতমীর সঙ্গে নাকি প্রায় ১০ বছর একত্রবাসে ছিলেন কমল। তবে ২০১৬ সালে দু’জনে তাঁদের এই সম্পর্কে ইতি টেনেছিলেন।
কমলের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ভারতন নামের এক দক্ষিণী পরিচালকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শ্রীবিদ্যা। কিন্তু সেই সম্পর্কের আয়ু বেশি দিনের ছিল না।
জর্জ থমাস নামে দক্ষিণী ফিল্মজগতের এক সহকারী পরিচালককে ১৯৭৮ সালে বিয়ে করেছিলেন শ্রীবিদ্যা। বিয়ের পর অভিনয় ছেড়ে দিলেও আর্থিক অনটনের কারণে পরে আবার বড় পর্দায় অভিনয় শুরু করেছিলেন তিনি। বিয়ের দু’বছর পর ১৯৮০ সালে শ্রীবিদ্যা এবং জর্জের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।