Sun Gun

মহাকাশে বসবে বিশাল আতশকাচ, সূর্যের আগুনে ঝলসে যাবে শহর! ধ্বংসের ছক কষেছিল নাৎসিরা

যুদ্ধের কাজে মহাকাশকে ব্যবহারের পরিকল্পনা শুরু হয় বিশের দশকে। ভাবনার জন্ম জার্মানিতে। শত্রুকে বিনাশ করতে অভিনব উপায়ে সূর্যকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল নাৎসিরা।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৫৫
Share:
০১ ১৭

পৃথিবীর গণ্ডি পেরিয়ে মানুষের মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার ইতিহাস অনেক পুরনো। ১৯৫৭ সালে মানুষের তৈরি প্রথম মহাকাশযানটি পৃথিবীর মাটি ছাড়ে। সোভিয়েত রাশিয়ার সেই সাফল্যের পর মহাকাশ সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল।

০২ ১৭

মহাকাশ নিয়ে খুঁটিনাটি গবেষণা কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছিল আরও আগে থেকেই। প্রথম সফল মহাকাশ অভিযান পঞ্চাশের দশকে হলেও দীর্ঘ দিন ধরে তার প্রস্তুতি চলেছে। এমনকি, মহাকাশকে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার কাজে ব্যবহারের কথাও ভেবে ফেলা হয়েছে বিশের দশকেই।

Advertisement
০৩ ১৭

সালটা ১৯২৯। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের রেশ তখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ইউরোপ। শক্তিশালী দেশগুলি একে অপরকে আক্রমণের ছক কষছে গোপনে। যুদ্ধ-পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দায় সারা বিশ্বে হাহাকার। সেই পরিস্থিতিতে প্রথম যুদ্ধের কাজে মহাকাশকে ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

০৪ ১৭

শত্রুকে বিনাশ করার জন্য সূর্যকে কাজে লাগানোর কথা ভাবা হয়েছিল। এই ভাবনার জন্ম মূলত জার্মানিতে। জার্মান পদার্থবিদ হার্মান ওবার্থ সূর্যের তাপের মাধ্যমে শত্রুপক্ষকে ধ্বংস করার উপায় বার করেছিলেন।

০৫ ১৭

আতশকাচে সূর্যরশ্মিকে কেন্দ্রীভূত করে আগুন জ্বালানোর কৌশল সকলেরই জানা। ঘরে বসেই রোদের মধ্যে ছোট আতশকাচ ধরলে কিছু ক্ষণ পর নীচে রাখা কাগজ জ্বলে ওঠে। সূর্যের প্রচণ্ড তাপ এক জায়গায় এনে আগুন ধরাতে সাহায্য করে কাচ।

০৬ ১৭

এই পদ্ধতিকেই কাজে লাগানোর কথা ভেবেছিলেন জার্মান বিজ্ঞানীরা। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সূর্যরশ্মির মাধ্যমে একটি ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন হিটলার স্বয়ং।

০৭ ১৭

এই অস্ত্রের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘সান গান’ বা ‘সূর্য-বন্দুক’। এই বন্দুক বা আগ্নেয়াস্ত্রে কোনও এক শত্রু নয়, ধ্বংস করে দেওয়া যায় শত্রুর আস্ত শহর বা দেশটাই।

০৮ ১৭

পদার্থবিদ ওবার্থ একটি ১০০ মিটার চওড়া আতশকাচের পরিকল্পনা করেছিলেন। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে কোনও নির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করে সেখানেই বসাতে চেয়েছিলেন এই বিশাল কাচ।

০৯ ১৭

কী ভাবে কাজ করে এই ‘সূর্য-বন্দুক’? ওবার্থের পরিকল্পনা অনুযায়ী, মহাকাশে একটি স্পেস স্টেশন তৈরি করা হবে। সেখানে বসানো হবে ১০০ মিটারের শক্তিশালী আতশকাচ। সূর্যের আলো সেই কাচে প্রতিফলিত হয়ে প্রবেশ করবে পৃথিবীর একাংশে।

১০ ১৭

শত্রু দেশের কোনও শহরের উপর ওই আতশকাচের মুখ ঘুরিয়ে দিলেই কাজ শেষ। সূর্যের আলো ওই নির্দিষ্ট শহরটির উপর কেন্দ্রীভূত হবে। এর ফলে প্রচণ্ড তাপে ধীরে ধীরে ঝলসে যাবে শহরটি।

১১ ১৭

১৯২৯ সালে ‘সূর্য-বন্দুক’ শুধু ভাবনার পর্যায়েই ছিল। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন এই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করার প্রক্রিয়া শুরু হয় সেই জার্মানিতেই। শোনা যায়, হিটলারের তত্ত্বাবধানে নাকি এই ‘সূর্যাস্ত্র’ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল।

১২ ১৭

জার্মানির এক দল বিজ্ঞানী এবং জার্মান সেনার একাংশ হিলারস্‌লেবেন গ্রামে একত্রিত হয়ে বিধ্বংসী এই অস্ত্র তৈরির তোড়জোড় করেন। ওবার্থের ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা সৌরশক্তিকে যুদ্ধের কাজে ব্যবহারের পথে পা বাড়িয়েছিলেন।

১৩ ১৭

পরিকল্পনা অনুযায়ী, পৃথিবীর মাটি থেকে অন্তত ৮ হাজার ২০০ কিলোমিটার উচ্চতায় স্পেস স্টেশন তৈরি করার কথা ছিল। আতশকাচটি অন্তত ৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত রাখা হত।

১৪ ১৭

ধাতব সোডিয়াম দ্বারা তৈরি সেই আতশকাচ এতই শক্তিশালী যে, সমুদ্রের জল ফুটন্ত গরম করে দেওয়া যেত তার দ্বারা। অনায়াসে জ্বালিয়ে দেওয়া যেত শহরের পর শহর।

১৫ ১৭

তবে ‘সূর্য-বন্দুক’ তৈরির কাজ সফল হয়নি। জার্মানরা পরে জানিয়েছিলেন, এই ধরনের অস্ত্র তৈরি করতে অন্তত ৫০ থেকে ১০০ বছর সময় লাগবে। তাই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।

১৬ ১৭

হলিউডের একাধিক সিনেমায় এই ‘সূর্য-বন্দুক’-এর প্রসঙ্গ টানা হয়েছে। জেমস বন্ড থেকে শুরু করে স্টার ওয়ার্স— বিভিন্ন কাল্পনিক ছবিতে সৌরশক্তির বিধ্বংসী রূপ প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে বার বার।

১৭ ১৭

নাৎসিদের পরিকল্পনা সফল হয়নি। প্রযুক্তির দুর্বলতায় ‘সূর্য-বন্দুক’ অধরাই থেকে গিয়েছে। যদি চল্লিশের দশকে বিশ্বযুদ্ধের আবহে এই অস্ত্র তৈরি করা যেত, তবে পৃথিবীর অস্তিত্বই যে সঙ্কটের মুখোমুখি হত, তাতে সন্দেহ নেই বিজ্ঞানীদের।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement