Pasta

Rarest Pasta: এ খাবার খেতে ‘তীর্থ’ করতে হয়, রাতের আঁধারে ৩২ কিমি হেঁটে আসেন ভোজনরসিকরা

সামান্য উপকরণ। অতি পরিচিতও। সুজির আটা, জল এবং নুন। কিন্তু সে তো সব রান্নাঘরেই মজুত।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২১ ১১:২৩
Share:
০১ ১৬

কষ্ট করেই বোধ হয় অভীষ্টকে পেতে হয়। তবেই পেয়ে পরিতৃপ্তি আসে। পাওয়ার পর মনে হয় ধন্য হওয়া গেল। ইতালির এক প্রত্যন্ত গ্রামে তৈরি এক বিরল খাবার চেখে দেখার আগে তাই দলে দলে খাদ্যরসিক কৃচ্ছ্র সাধন করেন।

০২ ১৬

ইতালির ওই গ্রামের নাম লুলা। সার্ডিনিয়া দ্বীপের ভূমধ্যসাগর লাগেয়া এই জনপদের সবচেয়ে কাছে নুয়োরো শহর। তবে তার দূরত্বও প্রায় ২০ মাইল। কিলোমিটারে মাপলে কিছু কম বেশি ৩২ কিলোমিটার।

Advertisement
০৩ ১৬

গ্রামের রাস্তা, তবে গাড়ি যায়। টানা পথে সময় লাগে ৩২ মিনিট। দিনে একটা করে ট্রেনও চলে। গন্তব্যে পৌঁছে দেয় ৪৫ মিনিটে। চাইলে কেউ সাইকেল বা বাইক নিয়ে পৌঁছতে পারেন কম সময়ে। তবে বছরের দু’টো দিন এ সব সুবিধার ধার দিয়েও যান না এক দল মানুষ।

০৪ ১৬

দীর্ঘ পথ তাঁরা হেঁটে আসেন। রাতের অন্ধকারে সার বেঁধে হাজারো মানুষ পা মেলান একসঙ্গে। খিদে বা ঘুমের পরোয়া না করেই। প্রায় সাত থেকে সাড়ে সাত ঘণ্টা হেঁটে পৌঁছন গন্তব্যে।

০৫ ১৬

সাধারণত অভীষ্টলাভে তীর্থ করতেই এত কষ্ট সাধন করেন মানুষ। সার্ডিনিয়ায় যার জন্য এত কিছু সেটিও ইষ্টের চেয়ে কম নয়। এমনকি তার নামেও রয়েছে ঈশ্বর।

০৬ ১৬

খাবারের নাম সু ফিলিন্দু। ইটালীয় শব্দ। ইংরেজিতে বলা হয় ‘থ্রেডস অফ গড’। যার বাংলা অর্থ ঈশ্বরের সূত্র। তবে এই সূত্র বা সুতো আসলে পাস্তা।

০৭ ১৬

মিহি সুতোর মতো দেখতে বলেই হয়তো এই নাম। আর এই পাস্তা খেতেই মাইলের পর মাইল হেঁটে তীর্থ করেন ভোজনপ্রেমীরা। প্রকৃত অর্থেই পেটপুজো যাকে বলে।

০৮ ১৬

কী দিয়ে তৈরি হয় এই পাস্তা? অতি পরিচিত এবং সামান্য উপকরণ— সুজির আটা, জল এবং নুন। কিন্তু সে তো সব রান্নাঘরেই মজুত। তবে মা-ঠাকুমার রান্নাঘরের তীর্থক্ষেত্র হয়ে উঠতে বাধা কীসের!

০৯ ১৬

বাধা বা জাদুকরী আসলে পাস্তা তৈরি করার প্রক্রিয়ায়। যা এতটাই জটিল যে, গোটা পৃথিবীতে কেবল তিন জন মাত্র মহিলা ওই খাবার বানাতে পারেন। আর এই তিন জনই সার্ডিনিয়ার বাসিন্দা।

১০ ১৬

২১ শতকের যন্ত্রবহুল যাপনে ব্যাপারখানা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। ‘থ্রেডস অফ গডস’কেও যন্ত্রে তৈরির চেষ্টা করা হয়নি, তা নয়। পাস্তা প্রস্তুতকারী নামী সংস্থা বারিলা পাস্তা কোম্পানি ওই জটিল প্রক্রিয়া নকল করার যন্ত্র বানানোর চেষ্টা করেছিল একাধিকবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।

১১ ১৬

তারকাপ্রতিম রন্ধনশিল্পী জেমি অলিভারও সার্ডিনিয়ার ওই গ্রামে গিয়েছিলেন শুধু ওই বিশেষ পাস্তা তৈরির প্রক্রিয়া শিখবেন বলে। টানা দু’ঘণ্টা চেষ্টা করার পর তিনিও হাল ছাড়েন।

১২ ১৬

কী এমন জটিল প্রক্রিয়া? যা নকল করা যায় না! সু ফিলিন্দু তৈরির সেরা শিল্পী পাওলা আবরাইনি জানিয়েছেন, সবচেয়ে কঠিন হল হাতের স্পর্শে আটার তালের চরিত্র বোঝা। আটার তালটিকে ততক্ষণ ঠেসতে হবে, যতক্ষণ না সেটি মূর্তি তৈরির মাটির মতে মিহি হয়ে যায়। তারপর শুরু হয় সেটিকে গোল পাকানোর প্রক্রিয়া।

১৩ ১৬

আটার তালের টান ভাব ছাড়তে শুরু করলেই নুন জলে হাত ডোবান পাওলা। আবার নরম করার দরকার হলে ছিটে দেন সাধারণ জলের। পাওলার কথায় এই দু’রকম জলের ভারসম্য বুঝতেই বছরের পর বছর সময় লেগে যেতে পারে। এটা একরকম সাধনা।

১৪ ১৬

আটার তাল কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌঁছলে তাকে দু’হাতে টেনে টেনে তৈরি হয় পাস্তার এক একটি সূতো। এক একটি আটার তাল থেকে আট দফায় একের পর এক স্তর তৈরি করে হাতে আসে মোট ২৫৬টি ‘ঈশ্বরের সূত্র’।

১৫ ১৬

তারপর সেই সুতো আড়াআড়ি জড়ানো হয় কাঠের পাটাতনে।

১৬ ১৬

কাঠে জড়ানোর পর রোদে শুকিয়ে তৈরি হয় বিশ্বের বিরলতম পাস্তা সু ফিলিন্দু। ঈশ্বরের সূত্র। যা খেয়ে দেখা ঈশ্বরকে ছুঁয়ে দেখারই শামিল। অন্তত তাই মনে করেন ভোজনরসিকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement