Countries holding most gold

এ দেশে নাকি ‘সোনাদানা ঠাসাঠাসি’! বিশ্বের কোন আট দেশে সবচেয়ে বেশি হলুদ ধাতু মজুত রয়েছে? ভারত কত নম্বরে?

সোনা যে শুধু গয়নার বাক্সে নিশ্চিন্তে বসত করে, এমনটা নয়। অর্থনীতির উজ্জ্বল মেরুদণ্ডও বলা যেতে পারে সোনাকে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সম্পদ ও ক্ষমতার সর্বজনীন প্রতীক হিসাবে পরিচিত সোনা। বর্তমান যুগকে অনেকাংশেই ক্রিপ্টো ও ডিজিটাল লেনদেনের যুগ বলা যেতে পারে। অথচ এই সময়ও সোনা তার চিরন্তন মর্যাদা ধরে রেখেছে নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি হলুদ ধাতু মজুত করে রেখেছে যে আটটি দেশ, তার মধ্যে ভারতেরও নাম রয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৩
Share:
০১ ১৯

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ অনুযায়ী কলকাতায় ১০ গ্রাম পাকা সোনার বাটের দাম ১,১২,০০০ টাকা। ১০ গ্রাম খুচরো পাকা সোনার দাম ১,১২,৬০০ টাকা। আর ১০ গ্রামের হলমার্ক সোনার গহনার দাম হয়েছে ১,০৭,০০০ টাকা। অর্থাৎ, যত দিন যাচ্ছে সোনার দামও বেড়ে চলেছে।

০২ ১৯

প্রায় পাঁচ থেকে ছ’হাজার বছর আগে সোনার অলঙ্কার পরতেন মিশর, মেসোপটেমিয়া ও সিন্ধু সভ্যতার সময়কালের মানুষেরা। সে সময় মুদ্রা বা আধুনিক বাজারব্যবস্থা বলে তেমন কিছু ছিল না। তাই সোনার কোনও নির্দিষ্ট দামও ছিল না। বিনিময়ের মাধ্যম এবং ক্ষমতার প্রতীকও ছিল সোনা।

Advertisement
০৩ ১৯

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অর্থনীতির উজ্জ্বল মেরুদণ্ড সোনা। সোনা এখন আর কেবলমাত্র গয়নার বাক্সে সীমিত নেই। বহু মানুষ সোনায় বিনিয়োগও করেন।

০৪ ১৯

সোনা এক বিরল ধাতু। এটি সীমিত পরিমাণে রয়েছে পৃথিবীতে। প্রতি টন মাটিতে গড়ে মাত্র কয়েক মিলিগ্রাম সোনা পাওয়া যায়। এটিকে কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা প্রায় অসম্ভব, কারণ সোনার মৌলিক গঠন (৭৯ প্রোটনযুক্ত পরমাণু) বদলাতে হলে জটিল পারমাণবিক বিক্রিয়া দরকার, যার খরচ বাজারমূল্যের বহু গুণ।

০৫ ১৯

অন্য বেশ কিছু ধাতুর মতো এতে মরচে ধরে না। ঝলমলে রং, সহজে যে কোনও আকার দেওয়ার ক্ষমতা এবং হাজার বছরেও নষ্ট না হওয়া— এ সব বৈশিষ্ট্যের জন্য সোনা আজও দুর্লভ ও মূল্যবান ধাতু হিসাবে জায়গা ধরে রেখেছে।

০৬ ১৯

সোনাকে সব সময়ই নিরাপদ বিনিয়োগ বলে ধরা হয়। সোনা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের মুদ্রার দর নিয়ন্ত্রণেও সোনার ভূমিকা রয়েছে। তাই বিশ্ববাজারে বাড়ছে সোনার চাহিদা ও দাম। কোনও দেশে যখন অর্থনৈতিক দিক থেকে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন সেই পরিস্থিতি বদলে দেয় জমিয়ে রাখা সোনা।

০৭ ১৯

বিরল এই ধাতুর সম্ভার বিশ্বের কয়েকটি দেশের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি রয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের আটটি দেশের রাজকোষে টন টন সোনা রয়েছে। তার মধ্যে ভারতেরও নাম রয়েছে।

০৮ ১৯

রাজকোষে সবচেয়ে বেশি সোনা রয়েছে আমেরিকার। ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (এপ্রিল থেকে জুন) অনুযায়ী ৮,১৩৩.৪৬ মেট্রিক টন সোনা রয়েছে আমেরিকার কাছে।

০৯ ১৯

তালিকায় নাম রয়েছে জার্মান, ফ্রান্স, ইটালিরও। তবে, ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, এই তিনটি দেশ মিলিয়ে যে পরিমাণ সোনা রয়েছে, আমেরিকার কাছে একক ভাবে তার চেয়ে বেশি সোনা রয়েছে।

১০ ১৯

মুদ্রার মান স্থিতিশীল রাখতে এবং আর্থিক সঙ্কটের মোকাবিলা করতে ১৯৩৪ সালে আমেরিকায় ‘গোল্ড রিজ়ার্ভ অ্যাক্ট’ জারি করা হয়। এর ফলে সাধারণ মানুষকে বাধ্য করা হয় তাদের সোনা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বা সরকারের কাছে জমা দিতে। পাশাপাশি সে দেশে সোনা রফতানিও নিষিদ্ধ ছিল। যদিও ১৯৭৪ সালের পর এই আইন অনেকটাই শিথিল করে দেওয়া হয়।

১১ ১৯

আমেরিকার পর দ্বিতীয় স্থানে নাম রয়েছে জার্মানির। তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে সে দেশে ৩,৩৫০.২৫ মেট্রিক টন সোনা মজুত ছিল। বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে মজুত ছিল সামান্য বেশি সোনা, ৩,৩৫১.২৮ মেট্রিক টন।

১২ ১৯

আমেরিকা, জার্মানির পরে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইটালি। ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে দেশটির স্বর্ণভান্ডার ২,৪৫১.৮৪ মেট্রিক টন, যা প্রথম ত্রৈমাসিকের সমান। বলা যায়, হলুদ ধাতু সঞ্চিত রাখার ক্ষেত্রে ইটালি তার স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে।

১৩ ১৯

সোনা জমানোর নিরিখে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক অনুযায়ী ফ্রান্সের কাছে সোনা রয়েছে ২,৪৩৭ মেট্রিক টন। ২০০২ সালে তাদের মজুত সোনার পরিমাণ ৩,০০০ মেট্রিক টনের বেশি ছিল। ২০১২ সালে সেটি ২,৪৩৫.৩৮ মেট্রিক টনে নেমে আসে। বর্তমানে, ফ্রান্সের স্বর্ণভান্ডার স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।

১৪ ১৯

‘গোল্ড রিজ়ার্ভ’-এর দিক থেকে পঞ্চম স্থানে রয়েছে এশিয়ার মহাশক্তিধর চিন। ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক অনুযায়ী এ দেশের গোল্ড রিজ়ার্ভের পরিমাণ ২,২৯৮.৫৩ মেট্রিক টন।

১৫ ১৯

চিনের পর ষষ্ঠ স্থানে নিজের জায়গা করে নিয়েছে সুইৎজ়ারল্যান্ড। ২০২৪ সালের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী এই দেশে ১০৪০ মেট্রিক টন হলুদ ধাতু সঞ্চিত রয়েছে। যদিও ২০২৫ সালের কোনও তথ্য ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তরফে প্রকাশ করা হয়নি।

১৬ ১৯

ডলার ও অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল কমিয়ে সোনা জমানোর পথে হাঁটছে ভারত। সপ্তম স্থানে রয়েছে এশিয়ার এই দেশ। শীর্ষ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতে সোনা মজুত রয়েছে ৮৭৯.৯৮ মেট্রিক টন।

১৭ ১৯

আন্তর্জাতিক মুদ্রাভান্ডারের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে আরবিআই ৭৭ টন সোনা কিনেছে, যা বাকি ৭টি দেশের তুলনায় বেশি।

১৮ ১৯

ভারতের পর অষ্টম স্থানে রয়েছে জাপান। যদিও দু’বছর আগে পর্যন্তও ভারতের আগে স্থান ছিল জাপানের। তবে, ২০২৪ সালে সারা বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি যে পরিমাণ সোনা কিনেছিল তার ৪৮ শতাংশই ছিল ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের। তাই জাপানের স্থান শেষ বছর থেকেই অষ্টমে চলে যায়। ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক রিপোর্ট অনুযায়ী জাপানের কাছে ৮৪৫.৯৭ মেট্রিক টন সোনা রয়েছে।

১৯ ১৯

এই আটটি দেশের পর রয়েছে নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড-সহ আরও বেশ কিছু দেশ। তবে পৃথিবীতে এমন দেশও রয়েছে যাদের কাছে এক ফোঁটাও সোনা সঞ্চিত নেই। তার মধ্যে অন্যতম আর্মেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, নরওয়ে এবং কানাডা।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement