No return island

‘ভয়ঙ্কর অভিশাপে’ ডুবে যায় আস্ত দ্বীপ, উধাও হয় জনবসতি! এই দ্বীপে পা পড়লে ফেরার রাস্তা বন্ধ

রহস্য, ভয় এবং কুসংস্কারের আড়ালে ঢাকা দ্বীপটির নামের পিছনে জড়িয়ে আছে নানা গল্প ও মিথ। কথিত আছে, এখানে এলে মানুষ আর ফিরে যেতে পারেন না। স্থানীয় জনজাতি গোষ্ঠী তাই এর নাম দিয়েছে ‘না ফেরার দ্বীপ’।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:৩৯
Share:
০১ ১৬

আফ্রিকা মহাদেশের আনাচ-কানাচে লুকিয়ে রয়েছে নানা রহস্য। একে রহস্যের আকর বললেও কম বলা হয়। মহাদেশের অধিবাসী, তাঁদের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতির পরতে পরতে রহস্যময়তার হাতছানি। এ ছাড়াও বিশাল ভৌগোলিক গঠন এবং দুর্গম অরণ্য, জলাভূমিতে সঞ্চিত রয়েছে বহু রহস্য। এর বেশির ভাগের সমাধান আজও করে ওঠা সম্ভব হয়নি।

০২ ১৬

ভারতের নর্থ সেন্টিনাল দ্বীপ, ব্রাজিলের স্নেক আইল্যান্ড এবং মেক্সিকোর পুতুল দ্বীপ (লা ইসলা দে লাস মুনেকাস)-সহ বিশ্বের অনেক দ্বীপের অজানা বিষয় নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। তেমনই রহস্যে মোড়া দু’টি দ্বীপের অস্তিত্ব রয়েছে আফ্রিকার কেনিয়ায়। এই দ্বীপগুলিতে পা রাখলে কেউ নাকি ফিরে আসেন না।

Advertisement
০৩ ১৬

কেনিয়ার ভিক্টোরিয়া হ্রদের মাঝখানে অবস্থিত ‘নো রিটার্ন আইল্যান্ড’ রহস্যময় এবং ভয়ঙ্কর একটি স্থান বলে পরিচিত। আফ্রিকার তিন দেশ— কেনিয়া, তানজ়ানিয়া ও উগান্ডা জুড়ে বিস্তৃত বিশাল ভিক্টোরিয়া হ্রদ। দীর্ঘ দিন এই দ্বীপে পা পড়েনি কোনও মানুষের। একমাত্র পাখিরাই ডানা মেনে মেলে স্বচ্ছন্দে উড়ে বেড়ায় সেখানে। রহস্য, ভয় এবং কুসংস্কারের আড়ালে ঢাকা দ্বীপটির এই নামের পিছনে জড়িয়ে আছে নানা গল্প ও মিথ।

০৪ ১৬

দ্বীপটির অদ্ভুত নাম শুনলেই প্রশ্ন জাগে এই দ্বীপে এমন কী বিশেষত্ব আছে যে এখানে এলে মানুষ আর ফিরতে পারেন না? এই দ্বীপের আসল নাম এমফাঙ্গা। স্থানীয় জনজাতি গোষ্ঠী এর নাম দিয়েছে ‘না ফেরার দ্বীপ’। কিংবদন্তি অনুসারে যাঁরা এখানে যান তাঁদের ফিরে আসার পথ বন্ধ হয়ে যায়।

০৫ ১৬

জন্ম থেকেই যে এই দ্বীপটিতে অভিশাপের ছোঁয়া লেগে গিয়েছিল এমন নয়। স্থানীয় অধিবাসীরা মনে করেন দ্বীপটিতে অশুভ আত্মাদের অবাধ বিচরণ। এই দ্বীপে যাঁরা পা রাখেন তাঁরাই নাকি অতৃপ্ত আত্মার শিকারে পরিণত হন। আশপাশের জনবসতি অঞ্চলের অধিবাসীদের দাবি, নির্জন দ্বীপটি থেকে গভীর রাতে অদ্ভুত শব্দ শোনা যায়।

০৬ ১৬

এ ছাড়া আরও একটি কিংবদন্তি জড়িয়ে রয়েছে দ্বীপের সঙ্গে। কিংবদন্তি অনুসারে এই দ্বীপে একদা বসবাসকারী একটি প্রাচীন উপজাতি স্থানীয় দেবতাদের অপমান করেছিল। দেবতার রোষানল এসে পড়ে বাসিন্দাদের উপর। দৈব অভিশাপে পুরো দ্বীপটি তখন সমুদ্রে ডুবে যায়। বাসিন্দাদের সলিলসমাধি ঘটে।

০৭ ১৬

এক লহমায় দ্বীপের সমস্ত বাসিন্দা অদৃশ্য হয়ে যান এবং দ্বীপটি অভিশপ্ত হয়ে যায়। কালে কালে সেই কিংবদন্তিতে গভীর বিশ্বাস জড়িয়ে যায় আশপাশের বাসিন্দাদের। মাছ ধরতেও কেউ সেখানে পা রাখেন না। ক্রমে ক্রমে ‘না ফেরার দ্বীপ’ বলে কুখ্যাত হয়ে উঠেছে এটি। স্থানীয়দের ধারণা, মারা যাওয়া সেই মানুষগুলির অতৃপ্ত আত্মা ঘুরেফিরে বেড়ায় এই দ্বীপে।

০৮ ১৬

অনেক গবেষক এই রহস্যের সত্য উন্মোচনের চেষ্টা করেছিলেন। গবেষণা করে হ্রদের জলে উচ্চ মাত্রার মিথেনের উপস্থিতি লক্ষ করা গিয়েছে। যখনই হ্রদের তাপমাত্রা হঠাৎ পরিবর্তিত হয়, তখনই মিথেন গ্যাস ভূপৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। ফলে মানুষের শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটে।

০৯ ১৬

কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, হ্রদের নীচে একটি আগ্নেয়গিরি রয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত করে।

১০ ১৬

আফ্রিকার আরও একটি দ্বীপের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে অভিশাপের আখ্যান। এটি কেনিয়ার তুরকানা হ্রদের একটি রহস্যময় এবং পরিত্যক্ত দ্বীপ। নাম এনভাইটনেট। স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের মোলো ভাষায় ‘এনভাইটনেট’ নামটির অর্থ প্রত্যাবর্তন না করা।

১১ ১৬

ছোট দ্বীপটি রুডল্‌ফ হ্রদের (অস্ট্রিয়ার এক যুবরাজের নামে নামকরণ করা) উপর অবস্থিত। দীর্ঘ দিন ধরে এটিকেও একটি অভিশপ্ত স্থান হিসাবে বিবেচনা করে আসছেন স্থানীয়েরা। এক অদ্ভুত জাদুবলে যেন হঠাৎ করেই এক দিন এনভাইটনেটের বাসিন্দারা হাওয়ায় উবে যান।

১২ ১৬

এক শতক আগেও এই কয়েক কিলোমিটার আয়তনের ক্ষুদ্র দ্বীপটিতে জনবসতি ছিল। এনভাইটেনেটের বাসিন্দারা প্রায়শই ব্যবসার জন্য মূল ভূখণ্ডে আসতেন। হঠাৎ করেই তাঁদের আনাগোনা বন্ধ হয়ে যায়। দ্বীপে কী ঘটেছে তা জানার জন্য দু’জন মূল ভূখণ্ড থেকে নৌকা নিয়ে রওনা দেন।

১৩ ১৬

সেখানে পৌঁছে তাঁরা দেখেন জায়গাটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত। রয়েছে কেবল পুড়ে যাওয়া কুঁড়েঘর এবং পচা মাছ। চারিদিকে যেন ছড়িয়ে রয়েছে এক অজানা আতঙ্ক আর ভয়। অদ্ভুত ঘটনা দেখে দু’জন ভীত হয়ে পড়েছিলেন। মূল ভূখণ্ডে ফিরে এসে প্রতিজ্ঞা করেন যে তাঁরা কোনও দিনই ওই দ্বীপে পা দেবেন না।

১৪ ১৬

১৯৩৫ সালে ইংরেজ অভিযাত্রী ভিভিয়ান ফুশ একটি ভূতাত্ত্বিক অভিযানে এই অঞ্চলে যান। তাঁর দলের দুই সদস্য, বিজ্ঞানী মার্টিন শেফলিন এবং বিল ডেসন পরিদর্শনের জন্য চলে যান এনভাইটনেটে। সেই ছিল তাঁদের শেষযাত্রা। এর পর থেকে তাঁদের আর কখনও দেখা যায়নি।

১৫ ১৬

এনভাইটনেটের উদ্দেশে তাঁরা রওনা দেওয়ার দিন পনেরো পর একটি অনুসন্ধানী দল তাঁদের খোঁজে বার হয়। দ্বীপে দুই বিজ্ঞানীর কোনও চিহ্ন ছিল না। ঠিক যেন কর্পূরের মতো উবে গিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের সন্ধানে চিরুনিতল্লাশি চলে।

১৬ ১৬

এমনকি দ্বীপের উপর দিয়ে একটি বিমানও ওড়ানো হয়েছিল। কিন্তু দু’জনের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সেই স্থানটিকে অশুভ বলে মনে করা হয়। ভুল করে কোনও মাছধরা নৌকাও এই দ্বীপে ভিড়তে সাহস করে না। রাতে অনেক দূর থেকে দ্বীপের দিকে তাকাতে বুক কেঁপে যায় পোড়খাওয়া মাঝিরও।

সব ছবি:সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement