দেশের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভুয়ো বলে চিহ্নিত করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সম্প্রতি সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে কমিশনের ওয়েবসাইটে।
প্রতি বছরই শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগে ইউজিসির তরফে ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশিত হয়ে থাকে। সেইমতো এই বছরও দেশ জুড়ে মোট ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভুয়ো বলে চিহ্নিত করেছে ইউজিসি।
পশ্চিমবঙ্গের দু’টি প্রতিষ্ঠানের নামও রয়েছে তালিকায়। তবে সবচেয়ে বেশি ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে দিল্লিতে।
এই তালিকায় দিল্লির ১০টি, উত্তরপ্রদেশের চারটি, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের দু’টি করে এবং মহারাষ্ট্র ও পুদুচেরির একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ইউজিসি জানিয়েছে, ভুয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে রাজ্য সরকারগুলিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যেই।
এই বিষয়ে ইউজিসির তরফে জানানো হয়েছে, বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেগুলি ইউজিসির আইন ভেঙে ডিগ্রি দিচ্ছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দেওয়া ডিগ্রি উচ্চশিক্ষা বা কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে স্বীকৃত বা বৈধ বলে গ্রাহ্য হবে না। আদতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কোনও ডিগ্রি দেওয়ার ক্ষমতা নেই।
ইউজিসির তরফে ওই ২২টি ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকার প্রথমেই রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরের ক্রাইস্ট নিউ টেস্টামেন্ট ডিমড ইউনিভার্সিটি।
অন্ধ্রপ্রদেশের আরও একটি বিশ্ববিদ্যালয় এই তালিকায় রয়েছে। সেটি হল, বাইবেল ওপেন ইউনিভার্সিটি অফ ইন্ডিয়া। বিশাখাপত্তনমে এই ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়টি রয়েছে।
তালিকায় পশ্চিমবঙ্গেরও দু’টি ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে— ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অল্টারনেটিভ মেডিসিন এবং ইনস্টিটিউট অফ অল্টারনেটিভ মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ। এর মধ্যে ইনস্টিটিউট অফ অল্টারনেটিভ মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ বিশ্ববিদ্যালয়টি রয়েছে ঠাকুরপুকুরে ডায়মন্ড হারবার রোডে।
কেরলের যে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভুয়োর তালিকায় রেখেছে ইউজিসি সেগুলি হল, কিসানত্তমের সেন্ট জন ইউনিভার্সিটি এবং কোঝিকোড়ের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেটিক মেডিসিন।
মহারাষ্ট্রের নাগপুরের রাজা আরবিক ইউনিভার্সিটি এবং পুদুচেরির ভাজুথাভুর রোডের শ্রী বোধি অ্যাকাডেমি অফ হায়ার এডুকেশনও রয়েছে ইউজিসির ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায়।
উত্তরপ্রদেশের মোট চারটি বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসির ভুয়ো তালিকায় রয়েছে। সেগুলি হল— ভারতীয় শিক্ষা পরিষদ, গান্ধী হিন্দি বিদ্যাপীঠ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বিশ্ববিদ্যালয় (মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়) এবং মহামায়া টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি।
এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের হদিস পাওয়া গিয়েছে দিল্লিতেই। মোট ২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দিল্লিতেই রয়েছে ১০টি।
দিল্লির ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে রয়েছে, অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক অ্যান্ড ফিজ়িক্যাল হেলথ সায়েন্সেস (এআইআইপিএইচএস), দরিয়াগঞ্জের কমার্শিয়াল ইউনিভার্সিটি লিমিটেড, ইউনাইটেড নেশনস ইউনিভার্সিটি, ভোকেশনাল ইউনিভার্সিটি, এডিআর-সেন্ট্রিক জুরিডিক্যাল ইউনিভার্সিটি।
এ ছাড়াও দিল্লির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, বিশ্বকর্মা ওপেন ইউনিভার্সিটি ফর সেলফ এমপ্লয়েমেন্ট, আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়ার্ল্ড পিস অফ ইউনাইটেড নেশনস ইউনিভার্সিটি, ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর নাম রয়েছে তালিকায়।
অভিযোগ, দিল্লির কোটলা মুবারকপুরের ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এমন কিছু ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি নিচ্ছে, যা ইউজিসি অ্যাক্ট, ১৯৫৬-এর বিধি ভঙ্গ করছে। ইউজিসি ওই প্রতিষ্ঠানকে ‘সেলফ স্টাইলড ইনস্টিটিউশন’ হিসাব চিহ্নিত করেছে।