দেশ থেকে তাড়াতে হবে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের কন্যা শি মিংজ়েকে! মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠ’ অতি-ডানপন্থী রাজনীতিক লরা লুমারের এ হেন দাবি ঘিরে আমেরিকায় শোরগোল। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে উঠেছে ঝড়। ট্রাম্প সমর্থক নেটাগরিকদের একাংশের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের সুবিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন শি-র মেয়ে। কিন্তু সরকারি ভাবে এই নিয়ে ওয়াশিংটন কোনও বিবৃতি না দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে।
সম্প্রতি শি-কন্যা মিংজ়েকে নিয়ে এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট করেন লরা। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘চিনা প্রেসিডেন্টের মেয়েকে আমাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার সময়ে চলে এসেছে।’’ এর পর মিংজ়ের ব্যাপারে একগুচ্ছ তথ্য দেন ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠ’ এই রাজনীতিক। তাঁর দাবি, বর্তমানে ম্যাসাচুসেটসে থাকেন শি-কন্যা এবং তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। শুধু তা-ই নয়, একটি সূত্রকে উল্লেখ করে লরা এটাও জানিয়েছেন যে, মিংজ়ের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্ব ‘পিপল্স লিবারেশন আর্মি’ বা পিএলএ-কে দিয়ে রেখেছে ‘কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়না’ (সিপিসি)।
লরার যুক্তি, মার্কিনভূমিতে মিংজ়ে বসবাস এবং পড়াশোনা করায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে দেশের নিরাপত্তা। সেই কারণে অবিলম্বে তাঁকে চিনে ফেরত পাঠানো উচিত। এই ইস্যুতে ‘হ্যাশট্যাগ’ আন্দোলন চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) করা পোস্টটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োকে ট্যাগ করেন ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠ’ এই রাজনীতিক। ফলে ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে তিনি যে আরও সুর চড়াবেন, তা একরকম স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
মিংজ়ের ব্যাপারে লরা গলা ফাটালেও বর্তমানে শি-কন্যা আদৌ আমেরিকায় রয়েছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। ২০১৫ সালে তাঁকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’। সেখানে বলা হয়, ‘‘নীরবেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন মিংজ়ে। আর কোনও রকমের হইচই না করে সেখান থেকে বেরিয়েও যান তিনি।’’ হার্ভার্ডে শি-কন্যা কী নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, কত বছর ছিলেন এবং সেখানে তাঁর কোনও ‘বন্ধু’ ছিল কি না, এই ধরনের কোনও তথ্যই প্রকাশ্যে আসেনি।
অন্য দিকে, মিংজ়ের এখনও যুক্তরাষ্ট্রে থাকার ব্যাপারে কোনও প্রমাণ দাখিল করেননি লরা। গোটাটাই ‘গোপন সূত্রে পাওয়া খবর’ বলে চালাচ্ছেন তিনি। নিরাপত্তার স্বার্থে এ ব্যাপারে কোনও রকমের ইঙ্গিত দিতে রাজি নন ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠ’ মার্কিন রাজনীতিক। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এখনও পর্যন্ত শি-কন্যার সম্পর্কে খুব কম তথ্য জানা গিয়েছে। তাঁকে প্রকাশ্যেও খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না। ফলে মিংজ়ের ছবিও ইন্টারনেট বা অন্যত্র উপলব্ধ নয়।
১৯৯২ সালে জন্ম হয় জিনপিং কন্যা মিংজ়ের। তাঁর মা হলেন চিনের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী পেং লিউয়ান। এই দম্পত্তির একমাত্র মেয়ে মিংজ়েকে মা-বাবার সঙ্গেও সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে খুব একটা ছবি তুলতে দেখা যায়নি। তাঁকে বরাবরই লোকচক্ষুর আড়ালে রেখেছেন সিপিসির চেয়ারম্যান জিনপিং। ২০০৮ সালে প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ড্রাগনভূমির সিচুয়ান প্রদেশ। ওই সময়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে শি-কন্যা কাজ করেছিলেন বলে খবর প্রকাশ্যে এসেছিল।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের দাবি, হার্ভার্ডে ইংরেজি সাহিত্য এবং মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন মিংজ়ে। তাঁর আসল পরিচয় প্রায় কেউ জানতেন না বললেই চলে। অতি পরিচিতদের মধ্যে কয়েক জন এ ব্যাপারে অবগত ছিলেন। সেই সংখ্যাটি ১০-এর কম বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। এ ব্যাপারে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ থাকায় সঠিক তথ্য পাওয়া যে কঠিন হবে, তা বলাই বাহুল্য।
যদিও এত কিছুর তোয়াক্কা করছেন না ট্রাম্পের সমর্থকেরা। লরার পোস্টকে সত্যি মেনে নিয়ে সমাজমাধ্যমে শি-কন্যা বলে দাবি তুলে বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি, তৈরি হয়েছে মিমও। কিন্তু সময় গড়াতেই জানা যায় সেগুলির কোনটাই মিংজ়ের ছবি নয়। মার্কিন বংশোদ্ভূত বছর ২৪-এর অভিনেত্রী মিখাইলা জ়ি-কে জিনপিং-কন্যা বলে ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়েছে। মিংজ়ের সত্যিকারের ছবি পাওয়া দুষ্কর বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠ’র হঠাৎ করে শি-কন্যাকে নিশানা করার নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, চিনের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধে নেমে পিছিয়ে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। এ ব্যাপারে বেজিঙের সঙ্গে সমঝোতার রাস্তায় হেঁটেছে তাঁর সরকার। ফলে তাঁকে ‘টাকো’ বলে খোঁচা দিতে শুরু করেছে বিরোধীরা। এর অর্থ হল, ‘ট্রাম্প সর্বদাই বাজে বকবক করেন’ (ট্রাম্প অলওয়েজ চিকেন্স আউট)।
আগামী দিনে আমেরিকায় মিড টার্ম নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে চিন ইস্যুতে আমজনতার চোখে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ছবি খারাপ হোক, তা কিছুতেই চাইছে না তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টি। উল্টে তাঁকে শক্তিশালী নেতা হিসাবে তুলে ধরতে এই ধরনের পোস্ট করছেন লরা, দাবি বিশ্লেষকদের। ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠ’ এই রাজনীতিকের বিরুদ্ধে এর আগে বেশ কয়েক বার বর্ণবৈষম্যমূলক মন্তব্য করার অভিযোগও উঠেছে।
চলতি বছরের ২৮ মে ভিসা নীতিতে বড় বদলের কথা ঘোষণা করেন মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো। তিনি বলেন, ‘‘আগামী দিনে আক্রমণাত্মক ভাবে চিনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বিপুল সংখ্যায় বাতিল করা হবে।’’ ফলে বর্তমানে মান্দারিনভাষী যে ছাত্র-ছাত্রীরা যুক্তরাষ্ট্র পড়াশোনা করছেন, তাঁদের ভবিষ্যৎও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। যদিও ওই পড়ুয়াদের ভিসা এখনই বাতিল করা হবে কি না, তা নিয়ে সরকারি ভাবে কিছু বলেনি ওয়াশিংটন। বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বেজিং।
বিদেশসচিব রুবিয়ো জানিয়েছেন, ড্রাগনভূমির যে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে ‘কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়না’ বা সিপিসির সামান্যতম যোগাযোগও রয়েছে, তাঁরা কোনও ভাবেই মার্কিন ভিসা পাবেন না। তাঁর ওই ঘোষণার পর মান্দারিনভাষী পড়ুয়াদের একাংশ এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) ‘সুদিন গিয়েছে’ বলে পোস্ট করতে থাকেন। বিশ্লেষকদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতির ফলে যে কোনও চিনা ছাত্র-ছাত্রীর পক্ষেই ভিসা পাওয়া বেশ দুষ্কর। কারণ, ড্রাগনভূমিতে একটিই রাজনৈতিক দল রয়েছে।
কমিউনিস্ট চিনে সিপিসির সদস্যসংখ্যা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক রয়েছে। পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, বর্তমানে ড্রাগনভূমির শাসনক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলটিতে সক্রিয় কর্মী ১০ কোটি। ফলে সেখানকার মান্দারিনভাষী পড়ুয়াদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সিপিসির সদস্যপদ থাকাটাই স্বাভাবিক। এই যুক্তি দেখিয়ে এখন তাঁদের সকলের ভিসা বাতিল করতে পারে আমেরিকা। রুবিয়োর ঘোষণার পর এই আতঙ্ক তীব্র হয়েছে।
অন্য দিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের জেরে আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কারণ বিদেশি পড়ুয়াদের টিউশন ফি থেকে বিপুল অর্থ উপার্জন করে থাকে তারা। শুধু তা-ই নয়, বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিক্ষেত্রের গবেষণা চালিয়ে নিয়ে যেতে এই টাকার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল আমেরিকার বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়। চিনা পড়ুয়াদের ভিসা বিপুল সংখ্যায় বাতিল হলে সেই প্রকল্পগুলি থমকে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সেখানকার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি হওয়া বিদেশি পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ২.৭ লক্ষ। এদের একটা বড় অংশ চিনা নাগরিক বলে জানা গিয়েছে। নতুন ভিসা নীতির বিবৃতিতে রুবিয়ো একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তা হল, কোনও অবস্থাতেই ড্রাগনভূমির পড়ুয়ারা জটিল প্রযুক্তির গবেষণায় যুক্ত থাকতে পারবেন না। ফলে গত বছর যাঁরা সেখানকার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ওই ধরনের গবেষণার কাজে যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের শিক্ষা অসমাপ্ত রেখেই যে আমেরিকা ছাড়তে হবে, তা স্পষ্ট।
রুবিয়ো জানিয়েছেন, চিনা পড়ুয়াদের ভিসা বাতিল করতে ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’ বিভাগের (পড়ুন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বা স্বরাষ্ট্র) সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করবে মার্কিন বিদেশ দফতর। এতে মোট কত জন শিক্ষার্থীর উপর কোপ পড়বে এবং কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে ওয়াশিংটনের তরফে বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের দেওয়া ভিসার ২৫.২ শতাংশ পান ড্রাগনভূমির বাসিন্দারা। ভারতীয়দের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ছিল ৩০.১ শতাংশ। বাকি ৪৪.৬ শতাংশ অন্যান্য দেশের পড়ুয়াদের মধ্যে বিলি করে মার্কিন প্রশাসন।
বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, ভিসা নীতিতে এ হেন বদল যে কতটা জরুরি ছিল, তা প্রমাণ করতে লরাকে আসরে নামিয়েছে ট্রাম্প। কারণ, তাঁর এই সিদ্ধান্তের প্রবল সমালোচনা করেছে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে অন্যতম হল হার্ভার্ড। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মনে করেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকেই দেশ জুড়ে ছড়াচ্ছে ইহুদি-বিদ্বেষ এবং কমিউনিস্ট ভাবাদর্শ।
এ বছরের মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে জনপ্রিয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি ছাত্র ভর্তি নিয়ে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করে ট্রাম্প সরকার। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ছ’দফা দাবি মানার নির্দেশ দেয় মার্কিন প্রশাসন। অন্যথায় আগামী শিক্ষাবর্ষে বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের আর ভর্তি করা যাবে না বলেও ওই নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছিল। পাশাপাশি, বর্তমানে যে বিদেশি শিক্ষার্থীরা সেখানে রয়েছেন, তাঁদের এক মাসের মধ্যে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার নির্দেশ ওই বিজ্ঞপ্তিতে ছিল। নির্দেশ অমান্য করলে স্টুডেন্ট ভিসা বাতিলের হুমকি দেয় ট্রাম্প সরকার।
এই নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ম্যাসাচুসেটসের বস্টনে ফেডারেল আদালতের দ্বারস্থ হয় হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। গত ২৩ মে ওই আবেদন মঞ্জুর করে সংশ্লিষ্ট আদালত। পরে ট্রাম্পের সরকারকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি ছাত্র ভর্তি এবং স্টুডেন্টস ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ জারি না করার নির্দেশ দেন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট বিচারক অ্যালিসন বুরোস। ফলে সেখানকার চিনা পড়ুয়াদের আপাতত আশঙ্কার কিছু নেই বলে মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে বিদেশসচিব রুবিয়োর ঘোষণায় নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, চিনা পড়ুয়াদের তাড়াতে আদালতে জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিতে পারে ট্রাম্প সরকার। সে ক্ষেত্রে মান্দারিনভাষীদের ক্যাম্পাসে রেখে দেওয়ার দাবি আদৌ পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। সেই লক্ষ্যপূরণেই শি-কন্যা মিংজ়ের নাম বাজারে ভাসিয়ে দেওয়া হল কি না, তার উত্তর দেবে সময়।