Cloudburst Cause

কেন হয় মেঘভাঙা বৃষ্টি? কখন, কী পরিস্থিতিতে ‘ভাঙে’ মেঘ? বিন্দু জমে আকাশে কখন তৈরি হয় ‘সিন্ধু’?

তিস্তার ভয়ঙ্কর রূপে এখনও ত্রস্ত পাহাড়। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে সিকিমের লোনক হ্রদ ফেটে গিয়ে এই বিপর্যয় নেমে এসেছে। কিন্তু কেন মেঘ ‘ভাঙল’? কী ভাবে হয় এই বিপর্যয়?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২০
Share:
০১ ১৭

সিকিমের সাম্প্রতিক বিপর্যয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২৫ ছাড়িয়েছে। তিন দিন পরেও নিখোঁজ বহু মানুষ। মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাহাড়ে আটকে আছেন অনেক পর্যটক।

০২ ১৭

মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে সিকিমে। তার অভিঘাত এতটাই তীব্র ছিল যে লোনক হ্রদ ফেটে যায়। হুড়মুড়িয়ে বইতে থাকে জল। স্রোতের মুখে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ভেসে যায়। ফুঁসে ওঠে তিস্তা নদী।

Advertisement
০৩ ১৭

তিস্তার ভয়ঙ্কর রূপে এখনও ত্রস্ত পাহাড়। বুধবার গোটা দিন জুড়ে সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে এই নদী। অনেক সেনা জওয়ানের খোঁজ মেলেনি। উদ্ধার করা হয়েছে একের পর এক দেহ।

০৪ ১৭

কিন্তু সিকিমে কেন হল এত বড় বিপর্যয়? কেন ভেঙে যায় মেঘ? কী ভাবেই বা তার জেরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়? ভূগোলে মেঘভাঙা বৃষ্টির ব্যাখ্যা রয়েছে।

০৫ ১৭

ভারতে প্রতি বছর জুন মাসের পর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মেঘভাঙা বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে এই ধরনের বৃষ্টি দেখা যায়।

০৬ ১৭

প্রচুর পরিমাণে উষ্ণ মৌসুমি বায়ু যখন কনকনে ঠান্ডা বায়ুর সংস্পর্শে আসে, তখন অনেকটা এলাকা জুড়ে ঘন মেঘের সৃষ্টি হয়। ভূপ্রকৃতিগত কিছু বৈশিষ্ট্যও এই মেঘ তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

০৭ ১৭

আবহবিদেরা জানিয়েছেন, উষ্ণ বাতাস উপরের দিকে উঠতে থাকায় মেঘে সঞ্চিত জলকণা বৃষ্টি হয়ে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ঝরে পড়তে বাধা পায়। ঝরে পড়া বৃষ্টিবিন্দুগুলিকেও শুষে নিয়ে উপরে ওঠে গরম বাতাস।

০৮ ১৭

স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বৃষ্টি না হওয়ার ফলে মেঘের মধ্যেই জল জমতে থাকে। আরও ভারী হতে থাকে বৃষ্টিবিন্দু। মেঘের ঘনত্বও ক্রমে বাড়তে থাকে।

০৯ ১৭

একসময় হাওয়ার ধাক্কায় মেঘ আর সেই জল ধরে রাখতে পারে না। তখন একসঙ্গে অনেকটা জল মেঘ ফেটে বেরিয়ে আসে। সেই জল আর বিন্দু বিন্দু বৃষ্টির আকারে থাকে না। জলের ধারা নেমে আসে মেঘের বুক থেকে।

১০ ১৭

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে আক্ষরিক অর্থে মেঘে কোনও ‘বার্স্ট’ বা ‘বিস্ফোরণ’ হয় না। প্রবল বৃষ্টিকেই এক অর্থে মেঘভাঙা বৃষ্টি বলে চিহ্নিত করা হয়। তবে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সঙ্গে তার ফারাক আছে।

১১ ১৭

সাধারণত, মেঘভাঙা বৃষ্টি হয় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০০-২৫০০ মিটার উচ্চতায়। এই বিপর্যয়ের নেপথ্যে রয়েছে কিউমুলোনিম্বাস মেঘ। বৃষ্টির ফোঁটাগুলি এতটাই বড় এবং সংগঠিত হয় যে, আলাদা করে বিন্দু হিসাবে তাদের বোঝা যায় না।

১২ ১৭

জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মেঘভাঙা বৃষ্টির ঠিক পর পরই প্রবল শিলাবৃষ্টি এবং বজ্রপাতের আশঙ্কা তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে এই বিপর্যয়ের সময় শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবও দেখা গিয়েছে।

১৩ ১৭

মেঘভাঙা বৃষ্টি হলে হড়পা বান অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। পাহাড়ি নদীতে একসঙ্গে অনেকটা জল এসে পড়ায় দু’কূল ছাপিয়ে বইতে থাকে স্রোত। তার মুখে মানুষ থেকে শুরু করে বাড়িঘর, খড়কুটোর মতো ভেসে যায় সব।

১৪ ১৭

মেঘভাঙা বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন হলেও একেবারে অসম্ভব নয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ডপলার র‌্যাডারের মাধ্যমে আগে থেকে এই বিপর্যয়ের আভাস পাওয়া যেতে পারে বলে জানান বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

১৫ ১৭

মেঘভাঙা বৃষ্টি পাহাড়ি অঞ্চলে হয়। কিন্তু হিমালয়ের সর্বত্র ডপলার র‌্যাডার নেই। তাই পূর্বাভাস বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাওয়া যায় না। হিমালয়ে মোট সাতটি এই ধরনের র‌্যাডার রয়েছে।

১৬ ১৭

জম্মু ও কাশ্মীরে দু’টি, উত্তরাখণ্ডে দু’টি এবং অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরায় একটি করে ডপলার র‌্যাডার রয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে মোট র‌্যাডারের সংখ্যা মাত্র ৩৪টি।

১৭ ১৭

স্বল্প জায়গায় অতি সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। এই ধরনের বিপর্যয়ের পূর্বাভাস দেওয়া বেশ কঠিন বলে দাবি মৌসম ভবনের। এই পূর্বাভাসের জন্য আরও উন্নত প্রযুক্তি এবং বেশি সংখ্যক র‌্যাডার প্রয়োজন।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement