Trump on Khashoggi Controversy

লক্ষ কোটি ডলারে ধুয়ে গেল খাশোগি হত্যার ‘পাপ’, লড়াকু জেট কিনে ট্রাম্পের মুখ বন্ধ করলেন আরবের ‘খুনি’ যুবরাজ?

সাত বছরের মাথায় আমেরিকা সফরে গিয়ে লক্ষ কোটি ডলার লগ্নির আশ্বাস দিলেন সৌদি আরবের যুবরাজ তথা প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ বিন সলমন। এর পরেই জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে উল্টো সুর শোনা গিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গলায়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:৫১
Share:
০১ ১৮

ফের টাকার কাছে ‘বিবেক বিক্রি’। লক্ষ কোটি ডলার ছড়িয়ে সাংবাদিক হত্যার ‘পাপ’ ধুয়ে ফেললেন আরব দেশের যুবরাজ! অন্য দিকে মোটা লগ্নি হাতে আসায় পুরনো নীতি থেকে ১৮০ ডিগ্রি বেঁকে যেতে দেখা গেল ‘সুপার পাওয়ার’ দেশের প্রেসিডেন্টকে। শুধু তা-ই নয়, এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের কড়া কড়া প্রশ্নবাণে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন তিনি। অন্য দিকে গোটা বিষয়টিতে উদ্বেগ বেড়েছে ইহুদিদের। যদিও তাদের চিন্তার কোনও কারণ নেই বলে স্পষ্ট করেছেন ‘মহাশক্তিধর’ রাষ্ট্রপ্রধান।

০২ ১৮

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সৌদি আরবের যুবরাজ তথা প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ বিন সলমন। চলতি বছরের ১৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের ঐতিহ্যবাহী ‘শ্বেত প্রাসাদ’-এ (পড়ুন হোয়াইট হাউস) দু’জনের সাক্ষাৎ পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতিতে বড় বদল আনতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, গত সাত বছর একরকম ‘একঘরে’ ছিলেন উপসাগরীয় দেশটির ধনকুবের যুবরাজ। এ বারের আমেরিকা সফরে সেই খোলস ঝেড়ে ফেললেন তিনি। বিপুল মুনাফা হয়েছে ট্রাম্পেরও।

Advertisement
০৩ ১৮

এ বারের সফরে হোয়াইট হাউসে সৌদি যুবরাজের অভ্যর্থনা ছিল বেশ জাঁকজমকপূর্ণ। তাঁকে স্বাগত জানাতে লাল কার্পেট বিছিয়ে হাজির ছিলেন স্বয়ং ট্রাম্প। সলমন গাড়ি থেকে নামলে ‘ফ্লাই পাস্টে’ তাঁকে সামরিক সম্মান জানায় মার্কিন বিমানবাহিনী। ওই সময় তাঁর মাথার উপর দিয়ে উড়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের গর্বের ‘এফ-৩৫ লাইটনিং টু’ লড়াকু জেট। এর পর বেশ কিছু ক্ষণ রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন দুই রাষ্ট্রনেতা। পরে রিয়াধ থেকে এক লক্ষ কোটি ডলারের বিনিয়োগ আসছে বলে ঘোষণা করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।

০৪ ১৮

‘শ্বেত প্রাসাদ’-এর ওভাল অফিসে সলমনের পাশে বসে ট্রাম্প বলেন, ‘‘সৌদির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মজবুত করতে পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ শ্রেণির এফ-৩৫ লড়াকু জেট সরবরাহ করবে আমেরিকা।’’ যদিও তার সংখ্যা উল্লেখ করেননি তিনি। সংবাদসংস্থা ‘রয়টার্স’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী দিনে মোট ৪৮টি এফ-৩৫ পাবে রিয়াধের বিমানবাহিনী। এ ছাড়া ৩০০ ট্যাঙ্ক ওই উপসাগরীয় আরব দেশটিকে বিক্রির অনুমোদন দিয়েছেন ট্রাম্প। এর জেরে ওয়াশিংটনের প্রতিরক্ষা শিল্প যে যথেষ্টই চাঙ্গা হয়ে উঠবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

০৫ ১৮

সৌদি যুবরাজকে শুধুমাত্র এফ-৩৫ বিক্রির কথা বলে চুপ থাকেননি ট্রাম্প। আরব দেশটিকে নেটো-বহির্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন তিনি। ঠিক তখনই তাঁর দিকে ধেয়ে আসে মার্কিন গণমাধ্যম ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর প্রাবন্ধিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে একাধিক বাঁকা প্রশ্ন। তা কানে যেতেই মেজাজ হারান আমেরিকার বর্ষীয়ান প্রেসিডেন্ট। জবাব চাওয়া মহিলা সাংবাদিককে দাবড়ে চুপ করিয়ে দেন ট্রাম্প। তাঁর প্রতিষ্ঠান ভুয়ো খবর প্রকাশ ও প্রচার করছে বলে দাবিও করেন।

০৬ ১৮

ওভাল অফিসে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা সাংবাদিকটি হলেন মেরি ব্রুস। বর্তমানে ‘এবিসি নিউজ়ে’ কর্মরত রয়েছেন তিনি। সলমনের সামনেই তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেন, ‘‘আমেরিকার গোয়েন্দারা সৌদি রাজপরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রাবন্ধিক খুনে জড়িত থাকার একাধিক প্রমাণ পেয়েছেন। কিন্তু, তা সত্ত্বেও আপনার পরিবার রিয়াধের সঙ্গে বাণিজ্য করছে। এর কী ব্যাখ্যা দেবেন আপনি?’’ এর পরই জবাব দিতে গিয়ে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে খিঁচিয়ে ওঠেন ট্রাম্প।

০৭ ১৮

জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘খাশোগির ব্যাপারে সৌদির যুবরাজ কিছুই জানেন না। আমাদের এটা এড়িয়ে যাওয়া উচিত। কারণ, এই ধরনের প্রশ্ন আমাদের অতিথিকে বিব্রত করতে পারে। এখন সেটার কোনও দরকার নেই। মনে রাখতে হবে রিয়াধের থেকে বিপুল বিনিয়োগ পেতে চলেছে আমেরিকা। সেটা বন্ধ হোক এটা নিশ্চয়ই কাম্য নয়।’’ তাঁর এই মন্তব্যের ফলে খাশোগি হত্যাকাণ্ডে যুবরাজ সলমন ‘ক্লিনচিট’ পেলেন বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা।

০৮ ১৮

সৌদি নাগরিক খাশোগি দীর্ঘ দিন ধরেই থাকছিলেন আমেরিকায়। ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে’ নিয়মিত রিয়াধের রাজপরিবারে কুকীর্তির একাধিক খবর প্রকাশ করতেন তিনি। ২০১৮ সালে বিয়ে উপলক্ষে তুরস্কের শহর ইস্তানবুলে যান তিনি। সেখানে সৌদি দূতাবাসে তাঁর ঢোকার ভিডিয়ো রয়েছে। কিন্তু ওই দফতর থেকে কেউ তাঁকে আর বেরিয়ে আসতে দেখেননি। খাশোগি পরিবারের অভিযোগ, যুবরাজ সলমনের নির্দেশে দূতাবাসের ভিতরেই তাঁকে নৃশংস ভাবে খুন করে গুপ্তঘাতকেরা। পরে প্রমাণ লোপাটে গুম করা হয় তাঁর মৃতদেহ।

০৯ ১৮

২০১৭-’২১ সাল পর্যন্ত প্রথম দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প। খাশোগির করুণ পরিণতির খবর পেয়ে চুপ করে বসে থাকেননি তিনি। সৌদির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুঙ্কার দিতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। তাঁর নির্দেশেই সংশ্লিষ্ট হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে কোমর বেঁধে লেগে পড়েন মার্কিন গোয়েন্দারা। ফলে আমেরিকা সফরের ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি যুবরাজ সলমন। ওয়াশিংটনে গেলে গ্রেফতার হতে পারেন, এই ‘আতঙ্কে’ ভুগছিলেন তিনি।

১০ ১৮

ট্রাম্পের উত্তরসূরি জো বাইডেনের জমানাতেও পরিস্থিতির তেমন বদল হয়নি। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ সেনা ইউক্রেন আক্রমণ করলে ঘুরে যায় যুবরাজ সলমনের ভাগ্যের চাকা। পূর্ব ইউরোপে লড়াই শুরু হওয়ার কয়েক দিনের মাথাতেই সৌদি সফর করেন বাইডেন। কারণ, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক বাজারে খনিজ তেলের দাম ঠিক রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। সলমনের সঙ্গে অবশ্য করমর্দন করেননি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দু’জনকে মুষ্টিবদ্ধ হাত মেলাতে দেখা যায়। ফলে ওয়াশিংটন ও রিয়াধের মধ্যে সব কিছু ঠিক চলছে না বলে মনে করা হয়েছিল।

১১ ১৮

এ বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় বারের জন্য ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে আরও বদলায় পরিস্থিতি। গত মে মাসে সৌদি আরব দিয়ে বিদেশ সফর শুরু করেন তিনি। বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিপুল বিনিয়োগের লোভ দেখালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যে খাশোগি হত্যার প্রসঙ্গে ডিগবাজি খাবেন, তখনই তার আঁচ পেয়ে যান যুবরাজ সলমন। সেই মতো মেপে পদক্ষেপ করেন তিনি। ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর রিয়াধের প্রাসাদে দাঁড়িয়ে ৮০ হাজার কোটি ডলার লগ্নির কথা ঘোষণা করতে শোনা যায় তাঁকে। এর মধ্যে ছিল বিপুল হাতিয়ার কেনার প্রসঙ্গও।

১২ ১৮

সলমনের এ-হেন পদক্ষেপে বেজায় খুশি হন ট্রাম্প। দেশে ফিরে ‘ফক্স নিউজ়’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘খাশোগির হত্যা তদন্তে সৌদি রাজপরিবারের জড়িত থাকার বিষয়টি কিন্তু নিশ্চিত নয়। আমি গোয়েন্দা রিপোর্ট খতিয়ে দেখেছি। তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে আমার কথাও হয়েছে। তাঁরা কেউ এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি। যুবরাজ সলমন গোটা ব্যাপারটাই অস্বীকার করেছেন। এই পরিস্থিতিতে বিপুল বিনিয়োগ ছেড়ে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।’’

১৩ ১৮

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ২০১৯ সালে খাশোগির রহস্যমৃত্যুর ঘটনাকে ‘ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড’ বলে তোপ দেগেছিলেন ট্রাম্প। তবে কখনওই সৌদির আর্থিক গুরুত্বকে অস্বীকার করেননি তিনি। আগামী দিনে পশ্চিম এশিয়ার ওই দেশে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করবে আমেরিকা। এ ব্যাপারে ট্রাম্পকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন যুবরাজ সলমন, খবর সূত্রের।

১৪ ১৮

বর্তমানে আরব দুনিয়ায় একমাত্র ইজ়রায়েলের কাছেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম প্রজন্মের ‘স্টেলথ’ শ্রেণির এফ-৩৫ লড়াকু জেট। ফলে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শত্রুর আকাশ দখলে তেমন সমস্যা হচ্ছে না ইহুদি বিমানবাহিনীর। আর তাই যুক্তরাষ্ট্র রিয়াধকে ওই যুদ্ধবিমান বিক্রি করবে জানতে পেরে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তেল আভিভ। এতে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে মনে করছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার।

১৫ ১৮

যদিও ইজ়রায়েলের এই আশঙ্কা অমূলক বলে মনে করছে ট্রাম্প সরকার। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, সৌদিকে কম শক্তিসম্পন্ন এফ-৩৫ লড়াকু জেট সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া রিয়াধ পাবে না এআইএম-২৬০ কৌশলগত এয়ার টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র। ১৯০ কিমি পাল্লার এই হাতিয়ারটির সাহায্যে চোখের দৃষ্টির বাইরেও (বিয়ন্ড ভিস্যুয়াল রেঞ্জ) নিখুঁত নিশানায় হামলা করতে পারেন যোদ্ধা পাইলট। ফলে ইহুদিদের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে না হলে দাবি করেছেন তিনি।

১৬ ১৮

সৌদি যুবরাজের থেকে ট্রাম্প শুধুমাত্র বিনিয়োগ আদায় করেছেন, এমনটা নয়। তিনি চাইছেন, ইজ়রায়েলকে রাষ্ট্র হিসাবে মান্যতা দিক রিয়াধ। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই প্রত্যাশা পূরণের ইঙ্গিত দিয়েছেন সলমন। ওভাল অফিসে বসে তিনি বলেন, ‘‘ইহুদি-প্যালেস্টাইন সমস্যা মেটাতে আমরা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে থাকছি।’’ যদিও সরকারি ভাবে এখনও এ ব্যাপারে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি সৌদি সরকার।

১৭ ১৮

২০২০ সালে ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইজ়রায়েলের সঙ্গে আব্রাহাম চুক্তিতে সই করে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং বাহরাইন। সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী ইহুদি রাষ্ট্রটিকে মান্যতা দেয় ওই দুই আরব দেশ। পরবর্তী কালে একই রাস্তায় হাঁটতে দেখা গিয়েছে মরক্কো এবং সুদানকে। ফলে পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থান মজবুত করতে সক্ষম হয় তেল আভিভ। সংশ্লিষ্ট আরব দেশগুলি ইজ়রায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কও স্থাপন করেছে। ইহুদি রাষ্ট্রটিকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম উপসাগরীয় দেশ অবশ্য ছিল জর্ডন।

১৮ ১৮

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, সৌদি আরবকেও ওই আব্রাহাম চুক্তির অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছেন ট্রাম্প। সেই কারণেই দ্বিরাষ্ট্র তত্ত্বের কথা বলতে শোনা যাচ্ছে যুবরাজ সলমনের গলায়। এ ছাড়া প্যালেস্টাইনের গাজ়ার ব্যাপারে ‘বোর্ড অফ পিস’ তৈরি এবং তার সভাপতি থাকার অনুমতি পেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ফলে সেখানেও রিয়াধের একাধিক সংস্থা লগ্নির সুযোগ পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement