আকাশের আঙুলে হিরের আংটি
১৯৯৫ সালের ২৪ অক্টোবর। মঙ্গলবার। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের দিন। ঘটনাটা কেবলমাত্র ওই দশকে নয়, বলতে গেলে শতাব্দীর বিরলতম ঘটনা ছিল। সমস্ত মহাজাগতিক ঘটনা পৃথিবীর সব দেশ থেকে একই সঙ্গে দেখা যায় না। এ দিনের এই ঘটনাটিও এমনকী পশ্চিমবঙ্গের সব রাজ্য থেকেও দেখা গেল না। পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কয়েকটি জায়গার মানুষেরা প্রকৃতির এই দুর্লভ দৃশ্য দেখার সাক্ষী হয়েছিলেন। আমার সৌভাগ্য, ওদের সঙ্গে শামিল হয়েছিলাম আমিও।
কিছু দিন আগে থেকেই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমগুলি প্রচার চালাচ্ছিল। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরাও বিভিন্ন অঞ্চলের ক্লাবগুলির সাহায্য নিয়ে গ্রামে গ্রামে মানুষজনদের এ বিষয়ে সচেতন করে তুলছিলেন। অভাবনীয় এই মহাজাগতিক ঘটনাটিকে খালি চোখে দেখতে গিয়ে যাতে সাধারণ মানুষ চোখ না খারাপ করে ফেলে, সে জন্য তাঁরা বারবার সতর্ক করছিলেন সবাইকে। এমনকী নির্দিষ্ট দিনে হাট-বাজারের মতো প্রশস্ত জায়গায়, প্রাইমারি স্কুল বা কলেজের সামনের মাঠে দূরবিন, নীল কাচ, পুরনো এক্স-রে প্লেটের টুকরো ইত্যাদি তীব্র আলো-নিরোধক স্বচ্ছ ফাইবারের জিনিসপত্র সবার হাতে হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা।
গ্রামে আমাদের বাড়ির সামনে বিরাট একটা আকাশছোঁয়া মাঠ। ওই সময় পুরো মাঠটা ছিল সবুজ ধানগাছে ভরা। মাঠের এ-পারে বিরাট পুকুর, তার জলে সারা দিন সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়। পুকুরের বাঁধানো ঘাট ছুঁয়ে চওড়া পাড়টা মাঠে নেমে গেছে। ২৪ অক্টোবর সকালে বাচ্চা-বুড়ো সবার যেন একটা মেলা বসে গিয়েছিল মাঠে। আমি চেষ্টা করছিলাম ছোট নীল কাচের টুকরো ওদের সবার হাতে তুলে দিতে। সবাইকে দেওয়া গেল না। ক্যামেরার ফিল্মের নেগেটিভ ছোট ছোট করে কেটে, দুটো-তিনটে পর পর সাজিয়ে অনেকের হাতে ধরিয়ে দিলাম।
বাংলার আকাশে সূর্যের ডায়মন্ড রিং।
শুধু নব্বইয়ের দশক নয়, এটি গোটা শতাব্দীরও এক অনন্য ঘটনা।
বাড়ির বৃদ্ধা ঠাকুমাকে নিয়ে পড়লাম মহা বিড়ম্বনায়। কাচ বা ফিল্মের টুকরো, উনি ও-সব কিছুই েনবেন না। বরং একটা বড় থালায় হলুদ-জল ভরে উঠোনের রোদে দিয়ে রাখলেন। তার মধ্যে আবার একটা আস্ত হলুদ সোঁটা ডুবিয়ে দিলেন। আর মাঝে মাঝে তাকাতে লাগলেন ওই হলুদ-জলে। আমাদেরও একই জিনিস করতে বলছিলেন। বৃদ্ধা ঠাকুমার শাসন তখনও আমাদের পরিবারে ছিল। কিন্তু সে দিন ওঁর কথা অমান্য করলাম। এর পর উনি পড়লেন খাওয়া নিয়ে। বাড়ির বাচ্চা আর বউদের কোনও কিছু খেতে দিলেন না। ওঁর নিদান, গ্রহণ না কাটা পর্যন্ত কোনও কিছু খাওয়া যাবে না। কোনও ভাবেই সে দিন ওঁকে বোঝাতে পারিনি যে গ্রহণ একটা প্রাকৃতিক ঘটনা, এর সঙ্গে রাহুগ্রাসের কোনওই সম্পর্ক নেই। তা ছাড়া এ ধরনের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ আকছার ঘটে না। ঠাকুমাকে বললাম, তুমিও যে এই বয়সে এই জিনিস নিজের চোখে দেখে যাচ্ছ, এ তোমার সৌভাগ্য। বললাম বটে, কিন্তু ভবি ভুলবার নয়। শেষে ঘরের অশান্তি আর না বাড়িয়ে পুকুরপাড়ে গিয়ে দাঁড়ালাম।
দেখতে দেখতে গ্রহণের সময়টা ঘনিয়ে এল। ঘড়িতে তখন সকাল আটটা। দিনের আলো কিছুটা ম্লান হল। সূর্যের আলো ক্রমশ কমে এল। দেখতে দেখতে উজ্জ্বল সকালটা হয়ে উঠল গোধূলি। পাখিরা, যারা সাতসকালে খাবারের সন্ধানে শহরমুখী হয়েছিল, তারাও যেন বিভ্রান্ত। এ-দিক ও-দিক তাকিয়ে আঁধার ঘনানোর আগেই বাসায় ফিরতে শুরু করল। কৃষ্ণপক্ষে যেমন চন্দ্রকলা ক্ষয়ে যেতে থাকে, ঠিক তেমনই, সূর্যটাও কমতে শুরু করল, কেবল অনেক দ্রুত গতিতে। রঙিন কাচ কিংবা ফিল্মের ভিতর দিয়ে সবাই ঠায় দেখতে থাকল
সেই দৃশ্য। ঠাকুমার চোখ কিন্তু সেই হলুদ থালায় পড়া সূর্যের প্রতিবিম্বের দিকে।
খুব একটা বেশি দেরি হল না। মাঠের ও-পার থেকে অন্ধকারের কালো চাদরটা এগিয়ে এসে গোটা অঞ্চলটার দখল নিল। কালপুরুষ, লুব্ধক সহ সব নক্ষত্রেরা জেগে উঠল একে একে। সন্ধ্যাপ্রদীপ হাতে নিয়ে তুলসীতলায় কেউ না গেলেও চার দিক থেকে বেজে উঠল শাঁখ।
কী অপূর্ব সেই দৃশ্য! ছোট্ট চাঁদের ছায়ায় বিরাট সূর্যটা ঢাকা পড়ে গেল। তবে পুরোপুরি না। সূর্যের পরিধির প্রান্তরেখায় তখন জেগে উঠেছে ডায়মন্ড রিং। তার পর যেন একটা ক্ষীণ আলোর বেড়ি। পরে জেনেছিলাম, ওটাকে বলে বেলি-র মালা, ‘বেলি’জ বিড্স’। চারদিকে তখন ঝিঁঝির ডাক। বাড়ির আশেপাশে শোনা যাচ্ছিল শেয়ালের ডাক। অসময়ে অন্ধকার দেখে রাস্তার কুকুরগুলোও কেঁদে উঠছে বেসুরে। ঠাকুমা বললেন, ‘দেখলি তো, সাতসকালে শেয়াল ডাকছে। অমঙ্গল! দেশটা অনাচারে ভরে গেছে না!’ সে দিকে তখন কারও খেয়াল নেই, সবার চোখ আকাশে। মুহূর্তের মধ্যে যে অপূর্ব দৃশ্যটা দেখা গেল, কোনও দিন তা ভুলতে পারব না। চাঁদটা সূর্যকে মুক্তি দিতে শুরু করল তার পূর্ণগ্রাস থেকে। ফের আকাশে জেগে উঠল অপূর্ব ডায়মন্ড রিং! সূর্যের চার দিকে, পরিধির প্রান্তরেখায় সূক্ষ্ম অথচ উজ্জ্বল আলোর বেড়ির একটা কিনারে, সূর্যের প্রথম আলোর বিচ্ছুরণ, হিরের ঝলমলে দ্যুতি নিয়ে ধরা দিল। শরতের পরিষ্কার নীল আকাশের চাঁদোয়ার ওপর সূর্যের ওই রূপ এক বিরলতম দৃশ্য হয়ে থাকল ।
চন্দ্রকলার বেড়ে ওঠার মতোই, সূর্যেরও পূর্ণাবয়বে ফিরে আসতে বেশি সময় লাগল না অবশ্য। তার পর থেকে বছরে প্রায় দু’বার করে পৃথিবীতে সূর্যগ্রহণ হচ্ছে। কোনওটা দেখা যায়, কোনওটা অদৃশ্য। তবে সে দিনের অপূর্ব সেই ডায়মন্ড রিং আজও যেন চোখের সামনে স্পষ্ট দেখতে পাই।
গোবর্ধন জানা, বৃন্দাবনপুর, মেচেদা
নইয়ের দশকের কোনও ঘটনার সঙ্গে নাড়ির যোগ আছে? লিখুন এই ঠিকানায়: হ্যালো 90’s, রবিবাসরীয়, আনন্দবাজার পত্রিকা, ৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০ ০০১। বা, লেখা pdf করে পাঠান এই মেল-ঠিকানায়: robi@abp.in
বাড়িতে চৌবাচ্চা রাখার চল ফিরে আসতে চলেছে। বিশ্ব-উষ্ণায়নের ফলে বর্ষা এ বার জুলাইয়ের শেষে আসবে। তাই দেখা দিয়েছে তীব্র জলসংকট। এই অবস্থায় সরকার ঘোষণা করেছে, জল সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক। তার জন্য প্রতিটি বাড়ির ছাদে চৌবাচ্চা বসানোর নির্দেশ দিয়েছে। সেখানে বৃষ্টির জল জমানো হবে। সরকারি বিজ্ঞাপনে বিখ্যাত অভিনেত্রী বলছেন, ‘দিনকাল হবে আচ্ছা, যদি বসাও চৌবাচ্চা।’ সরকারি আবাসনগুলির ছাদে বিশাল চৌবাচ্চা বসানোর কাজ চলছে। বিরোধীরা এই প্রকল্পে বিপুল সিমেন্ট-বালি কেলেংকারির অভিযোগ এনেছে। একটি বেসরকারি ফান্ডিং সংস্থা ‘জল জমাও’ প্রকল্প ঘোষণা করে বলছে, প্রতি বছর ৫০ হাজার লিটার করে জমালে, পরের বছরই তারা ৪০ লাখ প্লাস্টিক মানি ফেরত দেবে। এ দিকে কলকাতার রাস্তার প্রতিটি কলের সামনে প্রতিদিন একশোটি করে বালতি রাখা থাকে। সরকার জানিয়েছে, হলুদ রঙের বালতি (শাসক দলের রং) ব্যবহার করলে একের জায়গায় দু’বালতি জল নেওয়া যাবে। যেহেতু শ্যাম্পু, সাবান মাখতে বেশি জল লাগে, তাই আগামী কেন্দ্রীয় বাজেটে এই পণ্যগুলির দাম আকাশছোঁয়া করা হতে পারে। প্রসাধন প্রস্তুতকারকেরা বিশেষ ডিয়োডোরেন্ট বাজারে ছেড়েছে, এতে এক সপ্তাহ চান না করলেও গায়ের উটের মতো উটকো গন্ধ কেউ টের পাবে না। যেহেতু পেটখারাপেও স্নানঘরে জল বেশি লাগে, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশুদের বিনা মূল্যে ডায়েরিয়া-টিকা দেওয়া হচ্ছে। বহুমূত্র রোগীদের কিনতে হচ্ছে মূত্র থেকে জল ‘রিসাইকেল’ করবার যন্ত্র। এক বিজ্ঞানী বলেছেন, সারফেস-টু-ক্লাউড মিসাইল ছুঁড়ে মেঘ ফাটিয়ে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত সম্ভব। সরকার জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনের পরে প্রকল্পটি রূপায়িত হতে পারে। পশুপ্রেমী সরকার এও ঘোষণা করেছে— তেষ্টার চোটে তারস্বরে চেঁচানো কাক ও নেড়ি কুকুরদের নিয়মিত জল দেওয়া হবে।
বিশ্বজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রীভূমি, কলকাতা
লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের রিপোর্ট? ঠিকানা: টাইম মেশিন, রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০ ০০১।
অথবা pdf করে পাঠান এই মেল-ঠিকানায়: robi@abp.in
ছেলের পাপ, ঘায়েল বাপ
সুস্নাত চৌধুরী
বি হারের দলিত নেতা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি এসসি। ইন্দো-পাক যুদ্ধের সময় দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ইন্দিরা গাঁধীর একদা বিশ্বস্ত সেনাপতি। এ হেন ‘বাবুজি’-র রাজনৈতিক কেরিয়ারে সরষে ফুল ফুটিয়েছিল এক যৌন-কেলেংকারি। অথচ সে কেচ্ছার ভিলেন তিনি ছিলেন না, ছিলেন তাঁর একমাত্র ছেলে সুরেশ রাম। আর রগরগে কেচ্ছাটিকে মিডিয়ার চড়া আলোয় এনেছিলেন মানেকা গাঁধী!
সাতাত্তরে ইন্দিরার ভরাডুবির পর কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন জগজীবন। নিজের দল গড়ে জনতা দলের সঙ্গে হাত মেলান। মোরারজি দেশাই-এর সরকারে তিনি তখন উপপ্রধানমন্ত্রী। চোখে প্রধানমন্ত্রিত্বের স্বপ্ন। সেটা ১৯৭৮। ইন্দিরার পুত্রবধূ মানেকা সে সময় রাজনীতি-বিষয়ক ‘সূর্য’ পত্রিকার সম্পাদক। ‘সূর্য’-র একটি সংখ্যায় পাতা জুড়ে প্রকাশিত হল বেশ কয়েকটি ছবি। সেগুলিতে যৌনক্রীড়ারত অবস্থায় জগজীবনের ছেলে সুরেশ রাম ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী সুষমা চৌধরী। কারও দেহে পোশাকের চিহ্নমাত্র নেই। দিল্লির রাজনৈতিক মহলে শোরগোল! হকারদের হাতে ‘সূর্য’ হটকেক! হিন্দিবলয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে পত্রিকার কপি বিলি করল কংগ্রেস। শোনা যায়, স্রেফ ছবিগুলির কপিও নাকি দিল্লির চাঁদনি চক এলাকা থেকে বিক্রি হয় দেদার। জগজীবন বেইজ্জতের একশেষ। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন খাটে মারা গেল!
রগরগে নগ্নছবি দুম করে ছেপে দেওয়া তখন কোনও কাগজের পক্ষে চাট্টিখানি কথা ছিল না। সুরুচির পরিচায়কও হয়তো ছিল না। তা হলে মানেকা ছাপলেন কেন? মুখ্য কারণ এটাই যে, সাস-বহু সম্পর্কের মধু তখনও মিঠে ছিল। ‘সূর্য’-কে হাতিয়ার করে ইন্দিরার হারানো রাজপাট ফিরিয়ে দিতে লড়ে যাচ্ছিলেন মানেকা। এক দিকে দলত্যাগী জগজীবন রামের কেরিয়ার শেষ করা, অন্য দিকে কেন্দ্রের শাসক দলকেও কিছুটা চাপে ফেলে কংগ্রেসকে বাড়তি অক্সিজেন জোগানো— এক ঢিলে দুই পাখি মারার এমন সুযোগ মানেকা হাতছাড়া করেননি। কেলেংকারি ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা দেখামাত্রই নাকি ইন্দিরার কাছে পৌঁছেছিল জগজীবনের গোপন বার্তা— ছবিগুলি ছাপা না-হলে মোরারজিকে ছুড়ে ফেলে, ফের তিনি ইন্দিরার সঙ্গে হাত মেলাবেন। ইন্দিরার জবাবও নাকি ছিল স্পষ্ট— আগে উনি মোরারজিকে ছুড়ে ফেলুন, তা হলেই ছবিগুলি আর ছাপা হবে না। শেষমেশ তা আর ঘটেনি, তাই কেচ্ছাও চাপা থাকেনি।
অনেকেই মনে করেন, সুরেশ রাম মোটেই সুবিধের লোক ছিলেন না। সুরেশের স্ত্রী কমলজিৎ কউর ডিভোর্সের মামলায় বলেছিলেন, অন্য মহিলাদের পিছনে তাঁর স্বামী হাজার হাজার টাকা উড়িয়ে থাকেন। এমনকী স্বয়ং জগজীবনও যে ধোয়া তুলসীপাতা ছিলেন না, এমন ধারণাও রয়েছে। বাবার রাজনৈতিক ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে দিন দিন রসের নাগর হয়ে উঠেছিলেন বছর চল্লিশের সুরেশ। মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময়ের ছবি তুলে রাখার নাকি অভ্যেস ছিল তাঁর। এ ছবিগুলোও ছিল সম্ভবত তাঁর নিজের সেল্ফ-টাইম্ড ক্যামেরাতেই তোলা। কিন্তু তা মিডিয়া পর্যন্ত পৌঁছে গেল কী ভাবে? রাজনীতির খেলা! মোরারজি সরকারের আর এক উপপ্রধানমন্ত্রী চরণ সিংহ ও জগজীবন রামের রাজনৈতিক খেয়োখেয়ির ফল। অনুমান, চরণ সিংহের লোকজনই ছবিগুলি জোগাড় করে মিডিয়ার হাতে তুলে দিয়েছিল। এফআইআর দায়ের করে সুরেশ বলেছিলেন, তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। বন্দুকের নল উঁচিয়ে তাঁকে সুষমার সঙ্গে পোজ দিতে বাধ্য করা হয়, তার পর তুমুল মারধরে বেহুঁশ করে দেওয়া হয়। এ অভিযোগ সাচ্চা হোক বা ঝুটা, পুত্রের যৌনতার আঁচে বাবুজির পোড়া-মুখের জন্য উপযুক্ত শুশ্রূষার জোর অন্তত তাতে ছিল না। কাজেই, রেকর্ড-গড়া সংসদীয় যাত্রাপথের মাঝে দগদগে এক ঘা-এর যন্ত্রণা আমৃত্যু সইতে হয়েছিল জগজীবন রামকে।