আমার সমস্যাগুলি হল— ১) আমি খুব চঞ্চল। একটু পরে পরেই মোবাইল ঘাঁটতে ইচ্ছে করে। ২) রসায়নের সমীকরণ মনে রাখতে অসুবিধা হয়। ৩) বাংলায় বাক্য লিখতে গিয়ে চলিত ও সাধু ভাষা মিশিয়ে ফেলি। ৪) ইংরেজিতে বাক্য লিখতে গিয়ে বেশির ভাগ সময়ই ক্রিয়াপদটি বাদ চলে যায়। ৫) ইতিহাস পড়তে কোনও আগ্রহ আসে না। ৬) পড়তে বসলে নানান চিন্তা মাথায় আসে। ৭) পরীক্ষায় কেয়ারলেস মিসটেক করি। ৮) আমি বেশি কথা বলতে পছন্দ করি। ৯) ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোই। মনে হয় ঘুমটা আমার বেশিই। কী করব?
অরুণিমা মুখোপাধ্যায়। দশম শ্রেণি, বৈঁচী বীণাপানি বালিকা বিদ্যালয়
অরুণিমা, তোমার সমস্যাগুলির উত্তর একে একে দিচ্ছি। ১) মোবাইল ঘাঁটা বন্ধ করতে হবে। ওটা নেশার মতো। প্রথম প্রথম অসুবিধে হবে। তার পর ঠিক হয়ে যাবে। ২) বারে বারে লিখে চেষ্টা করবে। দরকার হলে ছবি এঁকে নেবে। ৩) এটাও অভ্যাস করতে হবে। বারে বারে ভুল শুধরে নিলে, ঠিক জিনিসটা শেখা হয়ে যাবে। চলিত বাক্য সাধু ভাষায় বেশ কয়েক বার লিখবে। ৪) তুমি কি চাও বাক্যের কর্তা কোনও কাজ করবে না? সুতরাং আবারও বাক্যটি পড়বে। কর্তাকে প্রশ্ন করবে, তুমি কী করছ? তা হলেই ক্রিয়াপদের কথা মনে পড়ে যাবে। ৫) শুধু সন, তারিখ মুখস্থ করে পড়লে ইতিহাসে আগ্রহ আসবে না। কোনও এক ঘটনা কেন ঘটল, তার কারণ কী, তার ফলাফল কী হল, সেটা জানার কৌতূহল নিয়ে পড়ো, ইতিহাস ভাল লাগবে। ৬) পড়ায় আগ্রহ তৈরি করো, অন্য চিন্তা মাথায় এলে জোর করে সরিয়ে আবার পড়ায় মন দাও। কিছু ক্ষণ পরে মনোযোগ আসবে। ৭) পরীক্ষাকে তুমি খুব গুরুত্ব দাও না, তাড়াতাড়ি লিখে শেষ করার দিকে মন থাকে। তা হলে তো ভুল হবেই। পরীক্ষাকে গুরুত্ব দাও, পরীক্ষার সময় অন্য কথা ভাববে না, ভুলের সংখ্যা কমে যাবে। ৮) কম বলার চেষ্টা করো। কিছু বলার কথা থাকলে সেটা না বলে ডায়েরিতে লিখে ফেলো। ৯) না, তোমার ঘুম বেশি নয়। তোমার বয়সে এতটা ঘুমোনো প্রয়োজন।
আমি প্রাথমিক স্তরে ভাল ছাত্র ছিলাম। হাইস্কুলে এসে পড়াশুনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি, পড়াশোনা আয়ত্ত করতে পারছি না। কিছু ভাল লাগছে না। গান শোনা, ছবি আঁকা ইত্যাদি সব রকমের চেষ্টা করেও সমস্যার সমাধান করতে পারছি না।
স্নেহাশীষ দত্ত। অষ্টম শ্রেণি, মাথাভাঙা হাইস্কুল, কোচবিহার
স্নেহাশীষ, আমার মনে হয় তোমার একটু কাউন্সেলিং-এর প্রয়োজন আছে। তুমি নিজে নিজে অনেক চেষ্টা করেও যখন পারছ না, অথচ পড়াশোনা করতে চাইছ, তখন কোনও কাউন্সেলর তোমাকে সাহায্য করতে পারেন। হয়তো এমন কিছু তোমার মনে চলছে, যা তুমি নিজে সমাধান করতে পারছ না। সুতরাং দেরি না করে একটু প্রফেশনাল হেল্প নিলে ভাল হয়।
খামে ভরো মুশকিল
পড়াশোনা, শিক্ষক বা বন্ধুদের নিয়ে তোমার যা মুশকিল, জানাও আমাদের। চিঠির উত্তর দেবেন সাইকো-অ্যানালিস্ট পুষ্পা মিশ্র, বেথুন কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
চিঠিতে তোমার নাম আর ক্লাস জানাতে ভুলো না। খামের উপরে লেখো:
ইসকুলে মুশকিল,
রবিবারের আনন্দমেলা, আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬, প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১