Cell Cleansing Process

শরীরের ভিতর বর্জ্য বমি করে কোষ! ক্ষত সারানোর চমকপ্রদ কৌশল জানা গেল এত দিনে, তবে রয়েছে ক্যানসার-শঙ্কাও

আমাদের শরীরে কোনও আঘাত লাগলে বা কোনও রোগ হলে কোষের কাজ স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় তা সারিয়ে তোলা। ক্ষত সারানোর নতুন এক পদ্ধতি সম্প্রতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৩৪
Share:

মানবদেহের কোষীয় কার্যকলাপের নতুন হদিস দিল গবেষণা। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

শরীরের ভিতর নাকি বর্জ্য ‘বমি’ করে বিভিন্ন কোষ। সেটাই ক্ষত সারানোর অন্যতম এক প্রক্রিয়া। এমনকি, একে ক্ষত সারানোর ‘শর্টকাট’ও বলা যায়। কিন্তু এত দিন এই প্রক্রিয়ার কথা বিজ্ঞানীদের জানা ছিল না। সম্প্রতি ইঁদুরের উপর একটি গবেষণা এ বিষয়ে আলোকপাত করেছে।

Advertisement

আমেরিকার সেন্ট লুইয়ের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন এবং বেলর কলেজ অফ মেডিসিনের অধ্যাপকেরা ইঁদুরের উপর একটি গবেষণা করে দেখেছেন। আমাদের শরীরে কোনও আঘাত লাগলে বা ভিতরে কোনও সংক্রমণ হলে কোষগুলি নিজে থেকেই তা সারানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। সেটাই কোষের কাজ। সাধারণত এ সব ক্ষেত্রে কোষ একটি আত্মঘাতী প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে এগোয়। মৃত বা ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলিকে সরিয়ে ফেলা হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে পুরনো কোষগুলি পূর্বের অবস্থায় ফিরে গিয়ে সুস্থ টিস্যু গড়ে তুলতে সাহায্য করে। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে কোনও আঘাত বা রোগে ক্ষতিগ্রস্ত কোষ আগে বর্জ্য ঠেলে বার করে দেয়। তার পর ধীরে ধীরে স্টেম-সেলের মতো পর্যায়ে পৌঁছোয়। একে ‘ক্যাথারটোসাইটোসিস’ নাম দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বর্জ্য নিষ্কাশনের প্রক্রিয়াকে ‘বমি’র সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। ‘সেল রিপোর্ট্‌স’ নামক জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক জেফ্রি ব্রাউন বলেছেন, ‘‘যে কোনও আঘাতের পর আমাদের কোষের কাজ হল সেই আঘাত সারিয়ে তোলা। কিন্তু সাধারণ ভাবে পরিণত কোষীয় ব্যবস্থা এই কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ঠিক তখনই কোষের বর্জ্য নিষ্কাশনের পদ্ধতিটি কাজে লাগে। এর ফলে কোষটি দ্রুত ছোট অবস্থায় পৌঁছে যেতে পারে, যা ক্ষত নিরাময়ে সক্ষম। আমরা পৌষ্টিক নালিতে এই পদ্ধতি দেখেছি। তবে আমাদের ধারণা, অন্য টিস্যুর ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি প্রযোজ্য।’’

Advertisement

তবে কোষের এই ‘শর্টকাট’ পদ্ধতিতে একটি নেতিবাচক বিষয়ও চোখে পড়েছে গবেষকদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, ‘ক্যাথারটোসাইটোসিস’ একটি দ্রুত প্রক্রিয়া। কিন্তু একই সঙ্গে এটি বিশৃঙ্খলও বটে। কী ভাবে ক্ষত বেড়ে যায়, বিশেষত দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার ক্ষেত্রে কী ভাবে কোষ ভুল কাজ করে ফেলে, ‘ক্যাথারটোসাইটোসিস’ সে দিকে আলোকপাত করে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে কোনও সংক্রমণের কথা। সংক্রমণ হলে কোষ যে ভাবে তার মোকাবিলা করে, তাতে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ তৈরি হতে পারে। এখান থেকেই জন্ম নিতে পারে ক্যানসারও। এমনকি, বিজ্ঞানীদের মতে, ‘ক্যাথারটোসাইটোসিস’-এর ফলে নির্গত কোষীয় বর্জ্যের জঞ্জাল ক্যানসার চিহ্নিত করার অন্যতম উপায় হয়ে উঠতে পারে। এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement