সাগরে ঝাঁপ দিল তিয়াংগং ১

রাতের আকাশে উল্কাপাতের মতো মহাজাগতিক দৃশ্য ধরা পড়তে পারে বলে যে সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা, তেমনটা ঘটেনি। প্রশান্ত মহাসাগরে যখন স্পেসল্যাব ভেঙে পড়ে, সেখানে তখন দিন, সকাল ৮টা ১৫।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫৪
Share:

যেমনটা ভাবা হয়েছিল, তেমনই হল। আগুনে পুড়ে খাক হয়ে ‘চিনের প্রাসাদ’ শেষমেশ ঝাঁপ দিল দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে।

Advertisement

গত কালই বিজ্ঞানীরা জানিয়ে ছিলেন, সোমবার পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে চিনের স্পেসল্যাব ‘তিয়াংগং ১’ (যার নামের অর্থ স্বর্গীয় প্রাসাদ)। এ-ও জানানো হয়েছিল, ঘণ্টায় ২৬ হাজার কিলোমিটার গতিবেগে বায়ুমণ্ডলে ঢোকার সময়ে বায়ুস্তরের সঙ্গে ঘর্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে মহাকাশ গবেষণাগারটি। কিন্তু কখন, কোথায় গিয়ে সেই জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড আছড়ে পড়বে, সে বিষয়ে আলোকপাত করতে পারেননি তাঁরা। তবে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ভয়ের কিছু নেই। কারণ পৃথিবীর মাটি ছোঁয়ার আগেই ভস্মীভূত হয়ে যাবে প্রাসাদ। তবু যে হেতু স্পেসল্যাবের ভেঙে পড়ার গোটা ব্যাপারটাই চিনের বিজ্ঞানীদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল, তাই কিছুটা হলে হইচই পড়ে গিয়েছিল। গোটা দুনিয়ার মহাকাশ গবেষকদের নজর ছিল তিয়াংগংয়ের দিকে।

‘হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’-এর জ্যোতির্পদার্থবিদ জনাথন ম্যাকডোয়েল বলেন, ‘‘এমনটাই তো অনুমান করা হয়েছিল। অবিকৃত অবস্থায় পড়লেই অবাক হতাম।’’ তবে রাতের আকাশে উল্কাপাতের মতো মহাজাগতিক দৃশ্য ধরা পড়তে পারে বলে যে সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা, তেমনটা ঘটেনি। প্রশান্ত মহাসাগরে যখন স্পেসল্যাব ভেঙে পড়ে, সেখানে তখন দিন, সকাল ৮টা ১৫।

Advertisement

প্রাক্তন মার্কিন নভশ্চর লেরয় শিয়াও (চার বার মহাকাশে গিয়েছেন) বলেন, ‘‘তিয়াংগং খুবই ছোট মহাকাশযান ছিল। ফলে একটুও কিছু বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব। আর থাকলেও সমুদ্রের নীচে।’’

আরও পড়ুন: পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে চিনের ‘প্রাসাদ’

২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল ‘তিয়াংগং ১’কে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত কাজ করেছিল সে। চিনা নভশ্চরদের তিনটি দল ১২দিন করে কাটিয়েছিল মহাকাশের ওই প্রাসাদে। ওয়াং ইয়াপিং নামে একটি মহিলা নভশ্চর ‘তিয়াংগং ১’ থেকে চিনের স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে কথাও বলেন। ২০১৭ সালে চিন সরকার রাষ্ট্রপুঞ্জকে জানায়, ‘তিয়াংগং ১’ অভিযান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তার আগের বছর মে মাসেই। যদিও তত দিনে ‘তিয়াংগং ২’কে পাঠানো হয়ে গিয়েছে (২০১৬ সালে)। চিনের আসল উদ্দেশ্য, ২০২২ সালের মধ্যে মহাকাশে স্থায়ী ডেরা বানিয়ে ফেলা। তার জন্য ইতিমধ্যেই গা গরম করছেন চিনা বিজ্ঞানী ও নভশ্চরেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন