LHC

Ghost Particle: ঈশ্বরকণার পর আরও একটি মাইলফলক, ভুতুড়ে কণা নিউট্রিনো ধরা দিল সার্ন-এর গবেষণাগারে

আগামী দিনে এলএইচসি-তে জানা যেতে পারে প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং বা মহা-বিস্ফোরণের পর এই ব্রহ্মাণ্ডে কোন কোন কণার জন্ম হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

ঈশ্বরকণা’র পর এ বার ধরা দিল ‘ভুতুড়ে কণা’ও। জেনিভার অদূরে ‘সার্ন’-এর ভূগর্ভস্থ ‘লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার (এলএইচসি)’-এ। এই প্রথম কোনও পার্থিব প্রযুক্তির ‘জাঁতাকলে’ ধরা দিল ভুতুড়ে কণা।

বিজ্ঞানের ইতিহাসে এই ঘটনা একটি মাইলফলক। কারণ, এর ফলে, আগামী দিনে এলএইচসি-তেই জানা যেতে পারে প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং বা মহা-বিস্ফোরণের পর এই ব্রহ্মাণ্ডে কোন কোন কণার জন্ম হয়েছিল। ব্রহ্মাণ্ডটা ঠিক কী ভাবে তৈরি হয়েছিল, কী ভাবে তার বিকাশ ঘটেছিল। সেই বিকাশের পথে আদিমতম কণাগুলি কী ভাবে বদলেছিল। বিষয়গুলির নিখুঁত ইতিহাস এখনও আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের নাগালের বাইরেই থেকে গিয়েছে। ন’বছর আগে সার্ন-এর এলএইচসি-তেই প্রথম ধরা দিয়েছিল ঈশ্বরকণা। পদার্থবিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম- ‘হিগ্‌স বোসন’। যা পরমাণুর নিউক্লিয়াসে থাকা প্রোটনের চেয়ে বহু গুণ ভারী।

সার্ন-এর ‘ফাসারনু’ প্রকল্পের সহ-প্রধান আমেরিকার আরভিনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদার্থবিজ্ঞানী জোনাথন ফেং বলেছেন, ‘‘এর আগে কোনও পার্থিব প্রযুক্তিতেই নাগাল পাওয়া সম্ভব হয়নি এই ভুতুড়ে কণার। কণা সংক্রান্ত যাবতীয় পরীক্ষানিরীক্ষার এটা ব্রেকথ্রু ফলাফল। এর ফলে আগামী দিনে এই কণাদের খুঁটিনাটি আরও সঠিক ভাবে জানা, বোঝা যাবে। তাতে ব্রহ্মাণ্ডের আদিমতম ইতিহাস জানার কাজটা সহজতর হতে পারে।’’

কোনও আধান নেই। ভর প্রায় নেই বললেই চলে এই ভুতুড়ে কণাদের। ছোটে প্রায় আলোরই গতিবেগে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এদের নাম— ‘নিউট্রিনো’। বিগ ব্যাংয়ের অব্যবহিত পরেই এদের জন্ম হয়েছিল। ব্রহ্মাণ্ডের সর্বত্রই এরা রয়েছে। কিন্তু তাদের দেখা মেলে না। এরা গোটা ব্রহ্মাণ্ডে ছুটে বেড়ায় প্রায় আলোর গতিতে। কিন্তু কেউই এদের পথ রুখে দিতে পারে না। সামনে আসা যে কোনও বস্তুকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়ে এরা উধাও হয়ে যায়। আমাদের শরীর এফোঁড় ওফোঁড় করে এক সেকেন্ডেরও ভগ্নাংশ সময়ে বেরিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে কয়েকশো কোটি ভুতুড়ে কণা বা নিউট্রিনো। আমরা টেরও পাচ্ছি না।

এই ভুতুড়ে কণারা যদিও ভূত নয়। কিন্তু তাদের আচরণ ভুতুড়ে। তাই তারা কারও ‘ঘাড়ে’ চাপে না। ব্রহ্মাণ্ডের কোনও বস্তুই এদের ছোটার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। এদের কাছে গোটা ব্রহ্মাণ্ডই যেন অশরীরী!

Advertisement

ব্রহ্মাণ্ডে এরা ছুটে বেড়ায় প্রচণ্ড শক্তিতে। পৃথিবীতে ঢোকার সময় বায়ুমণ্ডলের কণারা নিউট্রিনোদের টোকা মারলে তা থেকে অন্য কণাদের সৃষ্টি হয়। তাতে নিউট্রিনোদেরও কিছুটা শক্তিক্ষয় হয়। সেই ভাবেই শক্তিক্ষয় হওয়া কয়েকটি ভুতুড়ে কণার হদিশ এর আগে মিলেছিল আন্টার্কটিকায় বসানো ‘আইসকিউব’, জাপানে বসানো ‘সুপার-কামিয়োকান্দে’ ও আমেরিকার ইলিনয়ে ফার্মিল্যাব-এর ‘মিনিবুন’ যন্ত্রগুলিতে। কিন্তু অত্যন্ত উচ্চশক্তিসম্পন্ন মহাজাগতিক নিউট্রনো কোনও পার্থিব প্রযুক্তি দিয়েই এর আগে ধরা সম্ভব হয়নি। এই প্রথম সেই অসাধ্যসাধন হল সার্ন-এর এলএইচসি-তে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন