Saturn

পৃথিবীর মতো শনির চাঁদের মহাসাগরেও তীব্র আলোড়ন হয়, থাকে ঘূর্ণিও

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার জিওসায়েন্স’-এ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২১ ১৮:৩৫
Share:

-ফাইল ছবি।

পৃথিবীর মতোই শনির চাঁদ ‘এনসেলাডাস’-এর সুবিশাল মহাসাগরের জল প্রতি মুহূর্তে আলোড়িত হচ্ছে। ঘূর্ণিও হচ্ছে সেই মহাসাগরে। শনির চাঁদের মহাসাগরের জল গরম হয়ে গিয়ে ওজনে তুলনায় হাল্কা হয়ে উপরে উঠে আসছে। তার পর চাঁদের পিঠের হাড়জমানো ঠান্ডার জেরে তা ফের শীতল হয়ে নেমে যাচ্ছে নীচে। এই ভাবে প্রতি মুহূর্তেই আলোড়িত হচ্ছে শনির একটি চাঁদ এনসেলাডাসের মহাসাগর। মহাসাগরের এই উথালপাথাল তার সক্রিয় থাকারই প্রমাণ।

Advertisement

সদ্য প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র এই খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার জিওসায়েন্স’-এ।

২০১০-এ শনির মুলুকে পাঠানো মহাকাশযান ‘ক্যাসিনি’ যে খবর পাঠিয়েছিল, তাতে পৃথিবীর মহাসাগরগুলির গড় গভীরতা যেখানে ৩.৭ কিলোমিটার, সেখানে এনসেলাডাসের মহাসাগরের গড় গভীরতা কম করে ৩০ কিলোমিটার। যার মধ্যে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঢাকা পুরু বরফের আস্তরণে। সেই বরফের আস্তরণটি রয়েছে এনসেলাডাসের ভূপৃষ্ঠের নীচের ক্রাস্টে।

Advertisement

তার অনেক আগেই অবশ্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অবাক করে দিয়েছিল এনসেলাডাস। ১৯৮১-তে সৌরমণ্ডল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথে শনির চাঁদের কান ঘেঁষে যাওয়ার সময় নাসার মহাকাশযান ‘ভয়েজার-২’ দেখেছিল শনির চাঁদের পিঠ থেকে উঠে আসছে ছোট ছোট বরফের গোলক। যা সূর্যের আলোয় চকমক করছে। সেই প্রথম বোঝা গিয়েছিল ভূতাত্ত্বিক রদবদল এখনও প্রতিনিয়তই চলছে শনির চাঁদের মুলুকে।

২০১০-এ ‘ক্যাসিনি’ ছবি পাঠিয়েছিল এনসেলাডাসের পিঠের বরফে ফাটল ধরায় তার ফাঁকফোকড় দিয়ে উঠে আসছে তরল জলের ধারা। যেগুলিকে ‘গেসার’ বলা হয়।

শনিকে এক বার প্রদক্ষিণ করতে এনসেলাডাসের সময় লাগে পৃথিবীর এক দিনের আয়ুর একটু বেশি। ১.৩৭ দিন। প্রদক্ষিণ করার পথে কাছে এলে শনির অভিকর্ষ বলের টান জোরালো হয় এনসেলাডাসের উপর, দূরে গেলে তা কমে। এই বাড়া-কমার ফলে শনির চাঁদের অন্দরে তৈরি হয় প্রচণ্ড তাপ। সেই তাপই নীচের বস্তুকে ঠেলে উপরে তুলে দেয়। উপরের ঠাণ্ডা বস্তুকে নামায় নীচে। একে বলে ‘জিওথার্মাল অ্যাক্টিভিটি’। এই সবের জন্যই এনসেলাডাসের পিঠ আর তার নীচের পুরু বরফের আস্তরণে ফাটল ধরে। আর তখনই সেই ফাটলের ফাঁক গলে নীচের অতলান্ত মহাসাগরের জল ফোয়ারার মতো উঠে আসে উপরে। তার পর ঠাণ্ডায় জমে গিয়ে তা বরফে পরিণত হয়।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এনসেলাডাসের অন্দরের প্রচণ্ড তাপই নীচের মহাসাগরের জলকে তরল অবস্থায় রাখে। তা জমে গিয়ে বরফ হতে দেয় না। আর সেই তাপের জন্যই এনসেলাডাসের অন্দরে থাকা মহাসাগরের জলের স্তরের ওঠা-নামা হয়। নীচের উষ্ণ জল উপরে উঠে আসে। উপরের শীতল জল নীচে নেমে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন