Science News

গভীরতম প্রশান্ত মহাসাগরের অতল অন্ধকারেও প্রাণের হদিশ মিলল এই প্রথম

ভূমি থেকে এত দূরে আর কোনও জায়গা নেই প্রশান্ত মহাসাগরে। দূরত্বটা ২ হাজার ৬৮৮ কিলোমিটার (বা, ১ হাজার ৬৭০ মাইল)।

Advertisement

সুজয় চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২০ ১৭:০২
Share:

প্রশান্ত মহাসাগরের সেই গভীরতম এলাকা ‘পয়েন্ট নেমো’। -ফাইল ছবি।

যা কল্পনাও করা যায়নি কস্মিনকালে, তা-ই ঘটল। গভীরতম প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণে সেই অতল অন্ধকারের জায়গা ‘পয়েন্ট নেমো’-তেও মিলল প্রাণের হদিশ। খুব সামান্য পরিমাণে হলেও।

Advertisement

ভূমি থেকে এত দূরে আর কোনও জায়গা নেই প্রশান্ত মহাসাগরে। দূরত্বটা ২ হাজার ৬৮৮ কিলোমিটার (বা, ১ হাজার ৬৭০ মাইল)। জার্মানির ‘ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর মেরিন বায়োলজি’র তত্ত্বাবধানে পাঠানো জাহাজ ‘এফএস-সোনে’ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর ঢুঁড়ে সেই অতল অন্ধকারে সেঁধিয়ে থাকা অজানা প্রাণীদের সন্ধান পেয়েছে। ‘আনন্দবাজার ডিজিটাল’কে বুধবার এ খবর দিয়েছেন ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর পোলার অ্যান্ড ওশ্‌ন রিসার্চ (এনসিপিওআর)’-এর অধিকর্তা এম রবিচন্দ্রন।

তিনি জানিয়েছেন, সেই অভিযান চালানো হয়েছিল প্রশান্ত মহাসাগরের ৩ কোটি ৭০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার (বা, ১ কোটি ৪০ লক্ষ বর্গ মাইল) এলাকা জুড়ে। ২০১৫-র ডিসেম্বর থেকে ২০১৬-র জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ৬ মাস ধরে। চিলি থেকে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত।

Advertisement

পৃথিবীর গভীরতম সেই অতল অন্ধকারের জায়গা ‘সাউথ প্যাসিফিক গায়ার’। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে।

গভীরতম প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণাংশে সেই গভীরতম এলাকার অতল অন্ধকারে কোনও প্রাণীর বেঁচে থাকার প্রমাণ মেলেনি এর আগে। সে জন্যই জায়গাটির অন্য নাম- ‘ওশ্‌নিক পোল অফ ইনঅ্যাকসেসিবিলিটি’ বা লাতিন শব্দে ‘পয়েন্ট নেমো’। যার অর্থ ‘কেউ নেই যেখানে’। কোনও প্রাণ নেই ভেবে এত দিন প্রশান্ত মহাসাগরের ওই এলাকাটিকে বলা হত, ‘মরুভূমি’।

সে জন্যই অকেজো, অচল হয়ে পড়া বা আয়ু ফুরিয়ে যাওয়া মহাকাশযানগুলিকে যেখানে বিসর্জনের ভাবনাটা কিছু দিন ধরে ভাবতে শুরু করেছে নাসা।

সৌরমণ্ডল ছাড়িয়ে আরও দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ার স্বপ্নটা আমাদের অনেক পুরনো। কিন্তু এই পৃথিবীতেই যেখানে পৌঁছনোর কথা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি এখনও পর্যন্ত, গভীরতম প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণে সেই অতল অন্ধকারের জায়গা ‘পয়েন্ট নেমো’তেও প্রাণীরা রয়েছে বলে এ বার জানা গেল। এই প্রথম।

রবিচন্দ্রন জানিয়েছেন, গবেষকদল দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ওই গভীরতম এলাকার ২০ থেকে ৫ হাজার ফুট গভীরতা (বা, ৬৫ ফুট থেকে ১৬ হাজার ৪০০ ফুট) পর্যন্ত ওই প্রাণীগুলির দেখা পেয়েছেন। তবে খুবই সামান্য পরিমাণে। আর হাতেগোনা কয়েকটি সামুদ্রিক প্রজাতির। ওই গভীরতায় আলো ও অক্সিজেন পৌঁছনো সম্ভব নয় বলে এত দিন সেখানে প্রাণ থাকতে পারে বলে তেমন জোরালো বিশ্বাস ছিল না বিজ্ঞানীদের।

যে ভাবে চালানো হয়েছে অভিযান: দেখুন ভিডিয়ো

কোন কোন প্রাণীর হদিশ মিলেছে?

রবিচন্দ্রন এও জানিয়েছেন, ২০টি প্রজাতির ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। হদিশ মিলেছে ‘এসএআর১১’, এসএআর১১৬’ এবং ‘প্রোক্লোরোকক্কাস’ প্রজাতির ব্যাকটেরিয়াও। পাওয়া গিয়েছে ‘এইজিইএএন-১৬৯’ প্রজাতির একটি ব্যাকটেরিয়ারও। এর আগের গবেষণায় মহাসাগরের ৫০০ মিটারের বেশি গভীরতায় যাদের সন্ধান মেলেনি এর আগে।

ফাইল ছবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন