Rusting in Moon

চাঁদে মরচে পড়ে যাচ্ছে! পৃথিবী থেকেই ‘লিক’ করছে অক্সিজেন, কী ভাবে? অবশেষে রহস্য উদ্ঘাটন

চাঁদে অক্সিজেন থাকলেও তা গ্যাস আকারে নেই। তাই কয়েক বছর আগে যখন চাঁদের মাটিতে হেমাটাইটের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হল, তখন বিজ্ঞানীরা বেশ অবাক হয়েছিলেন। কী ভাবে চাঁদে মরচে পড়ছে?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৫
Share:

চাঁদের মেরু অঞ্চলে মরচে পড়ছে। ছবি: সংগৃহীত।

শ্বাস নেওয়ার মতো অক্সিজেন নেই। তবু দিনের পর দিন মরচে পড়ছে চাঁদে! অক্সিজেনের সঙ্গে নিত্য ঘটে চলেছে লোহার বিক্রিয়া! কী ভাবে তা সম্ভব? দীর্ঘ দিন ধরে এ বিষয়ে গবেষণা করছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে উত্তর পেলেন। বিক্রিয়ার নেপথ্যে দায়ী করলেন পৃথিবীকেই।

Advertisement

লোহা জারিত হয়ে যে খনিজ তৈরি করে, তার নাম হেমাটাইট (Fe2O3)। একে চলতি কথায় মরচে ধরা বলে। কিন্তু লোহার জারণের জন্য প্রয়োজন হয় অক্সিজেন। চাঁদে অক্সিজেন থাকলেও তা গ্যাস আকারে নেই। তাই কয়েক বছর আগে যখন চাঁদের মাটিতে হেমাটাইটের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হল, তখন বিজ্ঞানীরা বেশ অবাক হয়েছিলেন। কী ভাবে চাঁদে মরচে পড়ছে? তা নিয়ে কৌতূহল ক্রমশ বেড়েছে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দাবি, পৃথিবী থেকে অক্সিজেন ‘লিক’ করছে। তা চাঁদে পৌঁছে মরচে ধরাচ্ছে উপগ্রহটির মেরু অঞ্চলে।

চাঁদে সৌরবাতাসের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজেন ঢোকে। হাইড্রোজেন যে পদার্থের সংস্পর্শে আসে, তাকে ইলেকট্রন দান করে। আবার ইলেকট্রন হ্রাসই অক্সিডেশন বা জারণের প্রধান শর্ত। ফলে জারণের সমস্ত উপাদান চাঁদে প্রস্তুত থাকলেও সেখানে সাধারণ উপায়ে মরচে পড়া সম্ভব নয়। কারণ, হাইড্রোজেন সেই জারণে বাধা দেয়। সব দিক বিবেচনা করে বিজ্ঞানীরা একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন— পৃথিবী কলকাঠি না নাড়লে চাঁদে মরচে পড়া সম্ভব নয়।

Advertisement

বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, সৌরবাতাসের ধাক্কায় পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র সূর্যের বিপরীত দিকে সরে যায়। পূর্ণিমার সময় স্থলজ অক্সিজেনের আয়নগুলি পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে বয়ে যায়। কিছু কিছু কণা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের টান ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় চাঁদ পর্যন্ত। এই সময় চাঁদ থাকে সূর্যের বিপরীত দিকে, পৃথিবীর ছায়ায়। ফলে সৌরবাতাসের মাধ্যমে হাইড্রোজেন চাঁদে ঢুকতে পারে না। চাঁদে অন্তত পাঁচ দিন করে এই প্রক্রিয়া চলে। এতেই মরচে (হেমাটাইট) তৈরি হয়।

গবেষণাগারে বিজ্ঞানীরা লোহামিশ্রিত খনিজকে অক্সিজেন আয়নের সংস্পর্শে এনে দেখেছিলেন। উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন সেই সমস্ত খনিজ, যা চাঁদে পাওয়া যায়। গবেষণাপত্রে তাঁরা লিখেছেন, ‘‘অক্সিজেন আয়নের বিকিরণের মাধ্যমে চাঁদে হেমাটাইট তৈরি হতে পারে। আমাদের পরীক্ষার ফল থেকে তা আরও স্পষ্ট হল। এখানে জারক হিসাবে কাজ করে পৃথিবীর বাতাস।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement