প্লুটোর জলে নজর নাসার

প্লুটোয় জলের উপস্থিতি নিয়ে নিশ্চিত নাসা।সদ্য প্রকাশিত পেপারে সে কথাই ঘোষণা করলেন বিজ্ঞানীরা। নিউ হরাইজনস মহাকাশযানকে প্লুটোর পাড়ায় পাঠানোর পর থেকে এখনও পর্যন্ত সামনে এসেছে যে সব নতুন তথ্য, তা নিয়েই প্রকাশিত হয়েছে এই সায়েন্স পেপার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৫ ১৪:৩৪
Share:

প্লুটোয় জলের উপস্থিতি নিয়ে নিশ্চিত নাসা।সদ্য প্রকাশিত পেপারে সে কথাই ঘোষণা করলেন বিজ্ঞানীরা। নিউ হরাইজনস মহাকাশযানকে প্লুটোর পাড়ায় পাঠানোর পর থেকে এখনও পর্যন্ত সামনে এসেছে যে সব নতুন তথ্য, তা নিয়েই প্রকাশিত হয়েছে এই সায়েন্স পেপার। নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নিউ হরাইজনসের পাঠানো ছবিতে প্লুটোর পৃষ্ঠে ছোট-বড় নানা আকারের বরফ হয়ে থাকা জলাশয় দেখা গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসছে প্লুটোয় প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনার প্রশ্নও।

Advertisement

নিউ হরাইজনসের প্রাথমিক কাজ ছিল বিশদ পর্যবেক্ষণ। সেই পর্ব শেষ। নাসার অসামান্য ক্ষমতাশালী মহাকাশযানটির ক্যামেরা এই প্রাথমিক পর্বে যে সব ছবি পৃথিবীতে পাঠিয়েছে, তা নিয়েই প্রকাশিত হয়েছে নাসার নতুন সায়েন্স পেপার। নাসা বলছে, প্লুটোয় নানা রকমের বরফ রয়েছে। নাইট্রোজেন বরফ, কার্বন মনোক্সাইড বরফ, মিথেন বরফ। একই সঙ্গে রয়েছে জলের বরফও। সৌরমণ্ডলের সুদূর বামন গ্রহ প্লুটোকে দূর থেকেই দেখতে অভ্যস্ত ছিলেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা। কিন্তু, নিউ হরাইজনস মিশনের দৌলতে প্লুটো এখন যেন পৃথিবীর প্রতিবেশী।

নাসার পাঠানো নিউ হরাইজনস অনেকটা জানলার কাজ করছে। এই জানলা দিয়ে উঁকি দিলেই একেবারে চোখের সামনে প্লুটোর অন্দরমহল। দূর থেকে বামন গ্রহকে ধূসর লাগলেও, নিউ হরাইজনস কাছ থেকে ছবি তুলে দেখিয়েছে, নানা রঙের সমাহার প্লুটোর বুকে। কোথাও গাঢ় লাল, কোথাও হলুদ, কোথাও ফ্যাকাশে নীল, কোথাও কমলা। এই নানা রঙের সমাহারের মধ্যে একটু ধোঁয়াটে সাদা রঙের একটি বিশাল সমতল খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। প্লুটোর বুকে এক বিশাল এলাকা জুড়ে হৃদয়ের আকারে ছড়িয়ে রয়েছে ঐ রং। বিজ্ঞানীরা ঐ অংশকে প্লুটোর হৃদয় বলেই ডাকছেন। সেই হৃদয়ে অবশ্য উষ্ণতা নেই। গোটাটাই বরফ। বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ বলছে, প্লুটোর হৃদয় তৈরি হয়েছে নাইট্রোজেন বরফ, কার্বন মনোক্সাইড বরফ আর মিথেন বরফের সমাহারে।

Advertisement

জল রয়েছে অন্য অংশে। নিউ হরাইজনস মহাকাশে যাওয়ার আগে প্লুটোর জলের অস্তিত্ব নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না বিজ্ঞানীদের। মহাকাশযানের পাঠানো ছবি এখন স্পষ্ট দেখিয়ে দিচ্ছে ছোট জলাশয়, সুবিশাল হ্রদ বা কোথাও তার চেয়েও বড় আকারের এলাকা জুড়ে জল জমে বরফ হয়ে রয়েছে। সূর্য থেকে অনেক অনেক দূরে অবস্থানের কারণে প্লুটোর তাপমাত্রা সাংঘাতিকভাবে কম। সেখানে জলের তরল রূপ সাধারণ অবস্থায় কল্পনাই করা যায় না। কিন্তু, কঠিন আকারে হলেও বামন গ্রহে জলের উপস্থিতি প্লুটোকে নিয়ে আরও নানা ধরনের গবেষণার পথ খুলে দিল, মনে করছে নাসা।

প্লুটোর মাটির নীচে বা গর্ভেও প্রচুর জল রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। পৃষ্ঠদেশে না হলেও প্লুটোর গর্ভে মহাসাগরের উপস্থিতি রয়েছে বলে আঁচ পেয়েছে নাসা। নিউ হরাইজনসকে সেই মহাসাগরের খোঁজে কোনও ভাবে কাজে লাগানো যায় কি না, তা নিয়েও চলছে ভাবনা-চিন্তা। নাসার হাতে আসা এই নতুন এবং চাঞ্চল্যকর তথ্য নিশ্চিত ভাবে উস্কে দেবে প্লুটোয় প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণার উৎসাহ।

প্লুটোর রঙিন হৃদয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন