প্রতীকী ছবি।
এত দিন বিজ্ঞানীদের জানা ছিল না, এমন একটি পথ ধরেও মানব দেহকোষে ঢুকতে পারে সার্স-কোভ-২ ভাইরাস। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা শেষ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের মানবকোষে ঢোকার গোপন দরজাটির হদিশ পেয়েছেন। গত দেড় বছরের অতিমারি পর্বে সার্স-কোভ-২ ভাইরাস নিয়ে কোনও গবেষণাই প্রবেশপথের খবর জানতে পারেনি। ফলে, এখনও পর্যন্ত যে সব টিকা বাজারে এসেছে বা যে সব ওষুধের জন্য গবেষণা চলছে তার কোনওটিতেই মানবকোষের এই গোপন দরজাটির কথা মাথায় রাখা হয়নি। ফলে, কোনও ভাবে যদি সেই গোপন দরজা দিয়ে সার্স-কোভ-২ ভাইরাস মানবকোষে ঢোকে তা হলে তা রুখতে টিকা বা ওষুধ তৈরির জন্য কী কৌশলের প্রয়োজন এ বার তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘সেল রিপোর্টস’-এ।
এত দিন বিজ্ঞানীদের জানা ছিল, সার্স-কোভ-২ মানব দেহকোষে ঢুকতে চাইলে ভাইরাসের বাইরের স্তরে থাকা শুঁড়ের মতো স্পাইক প্রোটিনই তাকে সাহায্য করে। এটাও জানা ছিল, সার্স-কোভ-২-এর স্পাইক প্রোটিনকে কোষে ঢোকার জন্য সাহায্যের হাতটা বাড়িয়ে দেয় মানবকোষের একটি রিসেপ্টর প্রোটিন। তার নাম ‘এসিই-২’। বিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছে এত দিন জানা ছিল, মানবকোষে ভাইরাসের ঢোকার এটাই এক ও একমাত্র দরজা। তাই সেই দরজা বন্ধ করারই চেষ্টা হয়েছে, চেষ্টা চলছে এখনও টিকা বা ওষুধ তৈরির মাধ্যমে।
কী ভাবে এই গোপন দরজার হদিশ পেলেন গবেষকরা?
গবেষকরা জানিয়েছেন, তাঁরা গবেষণাগারে ক্যানসার কোষ নিয়ে পরীক্ষা চালান। দেখেন, যে ক্যানসার কোষে এসিই-২ রিসেপ্টর প্রোটিন নেই, সেই কোষও সার্স-কোভ-২ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। এটা থেকেই আঁচ মিলেছে, মানবকোষে ঢোকার জন্য আরও কোনও গোপন দরজার সাহায্য নিতে পারে সার্স-কোভ-২। এসিই-২ রিসেপ্টর প্রোটিন না থাকলেও। এই নতুন দরজা খুঁজে বার করে নিতে ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনেও কয়েকটি মিউটেশন হয়েছে। সেই মিউটেশোনের মাধ্যমেই ভাইরাস মানব দেহকোষে প্রবেশের নতুন দরজা খুঁজে নিচ্ছে।