অঙ্কের জন্যই অঙ্ক করতে হবে, শেখালেন বিজ্ঞানী

সপ্তদশ শতাব্দীতে জটিল এক গাণিতিক সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন ফরাসি গণিতজ্ঞ পিয়ের দে ফার্মা। কিন্ত তা সীমাবদ্ধ ছিল শুধু পড়াশোনার জগতে, আমজনতার কোনও কাজে লাগেনি।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৫১
Share:

স্বীকৃতি: পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন গণিতজ্ঞ ঋতব্রত মুন্সি। ছবি: শৌভিক দে।

সপ্তদশ শতাব্দীতে জটিল এক গাণিতিক সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন ফরাসি গণিতজ্ঞ পিয়ের দে ফার্মা। কিন্ত তা সীমাবদ্ধ ছিল শুধু পড়াশোনার জগতে, আমজনতার কোনও কাজে লাগেনি। তা বলে সেই আবিষ্কার হারিয়েও যায়নি। ফার্মার মৃত্যুর প্রায় সাড়ে তিন শতক পরে সেই আবিষ্কার এখন জনজীবনের নিত্যদিনের অঙ্গ। ফার্মার সূত্র ধরেই নেট ব্যাঙ্কিং, এটিএম লেনদেন চলে!

Advertisement

অঙ্ক প্রতিযোগিতা ‘ম্যাথেম্যাজিক’-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে পড়ুয়াদের এমনই ঘটনার কথা শোনালেন বাঙালি গণিতজ্ঞ ঋতব্রত মুন্সি। বললেন, ‘‘অঙ্ক করে কী হবে, তা ভাবার দরকার নেই। অঙ্কের জন্যই অঙ্ক করতে হবে।’’ ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের এই প্রাক্তনী নিজেও তাই করেন। সেই ভাল লাগা থেকেই দেড়শো বছর ধরে চলতে থাকা এক জটিল ধাঁধার সমাধান করেছিলেন তিনি। এবং সেই সুবাদেই তাঁর মুকুটে জুড়েছে শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার।

২০০৪ সাল থেকে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে এই অঙ্ক প্রতিযোগিতা চলছে। ছোটদের মধ্যে অঙ্ককে ভালবাসতে শেখানোটাই যার উদ্দেশ্য। এ দিন ঋতব্রতবাবুর বক্তৃতাতেও ছিল সেই ভালবাসারই কথা। শুনিয়েছেন, আমেরিকার সমীক্ষা অনুযায়ী গণিতজ্ঞেরাই পেশাগত ভাবে সব থেকে সুখী। তাঁর কথায় আবার ফুটে উঠেছে আক্ষেপও। কী সেই আক্ষেপ? অঙ্কের গবেষণায় এ দেশের ঐতিহ্য প্রচুর। কিন্তু গণিতের অধ্যাপকের বক্তব্য, আর্যভট্ট-বরাহমিহির-রামানুজনের দেশে জনসংখ্যার তুলনায় গণিতজ্ঞের সংখ্যা অনেক কম। ‘‘আমেরিকা তো বটেই, অনেক ছোট ছোট দেশেও জনসংখ্যার তুলনায় গণিতজ্ঞের অনুপাত এ দেশের চেয়ে বেশি,’’ আক্ষেপ তাঁর।

Advertisement

আরও পড়ুন:মা ও শিশুদের উপরে চড়াও বিমানের কর্মী!

অঙ্ক আসলে অন্য ভাবে ভাবতে শেখায়। সেই ভাবনার জোরেই মিলে যায় সংখ্যার নানা জটিলকুটিল হিসেব। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সেই সূত্রে ছন্দ বেঁধে দিয়েছিলেন সঞ্চালক কৌশিক। সেই সুর ফুটে উঠেছে মঞ্চে হাজির অভিরূপ চক্রবর্তীর মতো প্রতিযোগিতার প্রাক্তন সেরাদের কণ্ঠেও। অঙ্ককে ভালবেসেই ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে অভিরূপ স্নাতকের বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন সংখ্যাতত্ত্বকে। অনুষ্ঠান শেষে ছিল সেরাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া। পঞ্চম থেকে নবম — সেরার শিরোপা পেল দশ জন। আর রেখে গেল প্রশ্ন।

এঁদের ক’জন আগামী দিনে অঙ্ককেই জীবনের অঙ্গ করে তুলবে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন