অবসর: আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে ‘স্টার ওয়ার্স: দ্য লাস্ট জেডাই’ দেখছেন নভশ্চরেরা। ছবিটি টুইট করেছেন বিজ্ঞানী ভ্যান্ডে হেই। ছবি: টুইটার
চারদিকে হাজারো বৈদ্যুতিক তারের মেলা, কঠিন-কঠিন সব যন্ত্রপাতি আর তার অদ্ভূতদর্শন সুইচ। সেই সবের মাঝখানে কেউ বাঞ্জি কর্ড চেয়ারে আধশোয়া হয়ে, কেউ আবার শূন্যে ভাসমান, বুঁদ হয়ে ছবির পর্দায়।
ঘটনাস্থল, আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র (ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন বা আইএসএস)। পৃথিবী যখন উৎসবে মেতে, গ্রহ থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে সেকেন্ডে ৮ কিলোমিটার গতিতে প্রদক্ষিণ করতে থাকা বাসযোগ্য কৃত্রিম উপগ্রহটির বাসিন্দারাও কাজ থেকে ছুটি নিলেন। বড়দিনে গবেষণার খুঁটিনাটি ভুলে, ভারী বইপত্র সরিয়ে রেখে বিজ্ঞানীরা মজলেন ফিল্মে। প্রোজেক্টরের আলোয় পর্দায় ভেসে উঠল— ‘স্টার ওয়ার্স: দ্য লাস্ট জেডাই’।
গত ১৩ ডিসেম্বর লস অ্যাঞ্জেলেসে মুক্তি পেয়েছিল ‘স্টার ওয়ার্স’ ট্রিলজির দ্বিতীয় ছবিটি। মহাকাশ নিয়ে ছবি, যদিও আইএসএস-এর বাসিন্দাদের সেই ফিল্ম দেখার সুযোগ হয়নি এত দিন। বড়দিন উপলক্ষে তাই বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছিল। স্পেস স্টেশনের আলোআঁধারিতে ঘেরা কেবিনে পানীয়ে (ভরশূন্য অবস্থার জন্য তৈরি বিশেষ ব্যাগে রাখা) চুমুক দিতে দিতে ফিল্মে মাতলেন গবেষকেরা। কেউ গা এলিয়ে দিলেন বাঞ্জি কর্ড চেয়ারে। কেউ কেউ আবার ভাসতে-ভাসতেই দেখলেন। আবার সেই ছবি তুলে টুইটারে পোস্ট করলেন বিজ্ঞানী ভ্যান্ডে হেই। লিখলেন, ‘‘স্পেস স্টেশন মুভি নাইট। কল্পবিজ্ঞানের ছবি, পানীয়ের ব্যাগ ও বাঞ্জি কর্ড চেয়ার!’’ জানালেন, এই অনুভূতির কোনও তুলনা হয় না।
তবে স্পেস স্টেশনে ফিল্ম দেখা নতুন কিছু নয়। ২০০৯ সালে মহাকাশচারী মাইকেল ব্যারাট নিজের ল্যাপটপে ‘স্টার ট্রেক’ দেখার ব্যবস্থা করেছিলেন। পরে ২০১৫ সালে নাসা এইচডিটিভি প্রোজেক্টর বসিয়ে দেয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে। আর তাতেই ‘দ্য লাস্ট জেডাই’ মুক্তির সাত দিনের মাথায় ফিল্ম দেখার সুযোগ হয়ে গেল নভশ্চরদের।