Science

ইউরোপের সেই আতঙ্কের আগ্নেয়গিরি জেগে উঠল ফের

ভয়ে থরথর করে কাঁপছে গোটা ইউরোপ। যে কোনও মূহুর্তে পড়তে হতে পারে তার ‘রোষানলে’! পুড়ে ছাই হয়ে যেতে পারে ইউরোপের একটি বড় অংশ। ছাই হয়ে যেতে পারে ইতালি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৫:৫৪
Share:

সেই আগ্নেয়গিরি- ‘কাম্পি ফ্লেগরেই’।

ভয়ে থরথর করে কাঁপছে গোটা ইউরোপ। যে কোনও মূহুর্তে পড়তে হতে পারে তার ‘রোষানলে’! পুড়ে ছাই হয়ে যেতে পারে ইউরোপের একটি বড় অংশ। ছাই হয়ে যেতে পারে ইতালি।

Advertisement

গলগল করে তার ‘মুখ’ থেকে বেরিয়ে আসছে অসম্ভব রকমের গরম জলীয় বাস্প আর সালফিউরিক অ্যাসিড গ্যাসের ধোঁয়া। গলগল করে বেরিয়ে আসছে অ্যামোনিয়া, সালফার ডাই-অক্সাইডের মতো অত্যন্ত বিষাক্ত গ্যাস। দাউদাউ করে জ্বলা মাটির বিশাল বিশাল তাল। খুব শিগগিরই সে আবার ভয়ঙ্কর ভাবে ‘গর্জে’ উঠতে পারে। পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারে ইতালির একটি বড় অংশ। ইউরোপেরও কিছুটা। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে সম্প্রতি, দেওয়া হয়েছে তার আগাম বিপদ-সংকেত। বলা হয়েছে, যে কোনও মূহুর্তে রীতিমতো ফুৎকারে উড়ে যেতে পারে ইতালির একটি বড় অংশ, ‘কাম্পি ফ্লেগরেই’-এর লাভা-উদ্গীরণে।

নাম তার- ‘কালডেরা’। ইতালিতে যার নাম- ‘কাম্পি ফ্লেগরেই’। যার অর্থ- ‘জ্বলন্ত জমি’। বয়স তার কম করে ৪০ হাজার বছর। আর ইতিহাস বলছে, অতীতে সে বেশ কয়েক বার মহা-সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা ইউরোপে। এই সেই মহা-আগ্নেয়গিরির (সুপার-ভলক্যানো) ‘রোষানলে’ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েই ইউরোপ থেকে এক সময় মুছে গিয়েছিল আমাদের (হোমো সেপিয়েন্স সেপিয়েন্স প্রজাতি) ঠিক আগের ‘পূর্বপুরুষ’- নিয়ানডার্থাল প্রজাতির মানুষ। সেই মহা-রাক্ষসের (আগ্নেয়গিরি ‘কাম্পি ফ্লেগরেই’) ‘দেহ’টা এখন পড়ে রয়েছে রোমের ১২৫ মাইল দক্ষিণে, সাড়ে সাত মাইল এলাকা জুড়ে। যদিও তার ‘দেহে’র অর্ধেকটা বহু দিন আগেই তলিয়ে গিয়েছে ভূমধ্যসাগরের টলটলে নীল জলরাশির তলায়। আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে শেষ যে বার ভয়ঙ্কর ভাবে গর্জে উঠেছিল আগ্নেয়গিরি ‘কাম্পি ফ্লেগরেই’, সে বার তার জ্বালামুখ থেকে এত বিশাল পরিমাণে বেরিয়ে এসেছিল লাভাস্রোত যে তাতে আস্ত একটা পর্বত মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল। যার নাম- ‘মন্তে ন্যুভো’। ইউরোপের ২ লক্ষ বছরের ইতিহাসে এই ‘মহারাক্ষস’ই ক্ষতি করেছিল সবচেয়ে বেশি। অতীতে তার ‘রোষানলে’ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে ইউরোপের বিশাল বিশাল জনবসতি।

Advertisement

আরও পড়ুন- পৃথিবীতে এত বড়, এত ভারী, এত উজ্জ্বল হিরে এল কোথা থেকে?

‘নেচার’-এ প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে মূল গবেষক, রোমের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ জিওফিজিক্স’-এর এক আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ জিওভান্নি চিওদিনি লিখেছেন, ‘‘কোন আগ্নেয়গিরি কখন গর্জে উঠবে, আর তা কতটা দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে দেবে গনগনে লাভাস্রোত, তা কেউই বলতে পারেন না। তবে ‘কাম্পি ফ্লেগরেই’ এখন যে অবস্থায় রয়েছে, তাতে তার ‘গর্জে’ উঠতে বেশি সময় লাগবে না। আর তার ফলে তার আশপাশের এলাকায় থাকা পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারাতে পারেন।

এর আগে ৪০ হাজার বছরে ‘কাম্পি ফ্লেগরেই’ ভয়ঙ্কর ভাবে ‘গর্জে’ উঠেছিল মাত্র দু’বার।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, তৃতীয় বারের জন্য তৈরি হচ্ছে ‘কাম্পি ফ্লেগরেই’!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement