চিকিৎসায় ‘অক্সিজেন’ জুগিয়ে নোবেল পেলেন তিন বিজ্ঞানী

১৯৯৯ সালে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন সেমেনজ়া। ২০০৩-এ জনস হপকিনস ইনস্টিটিউটে ‘ভাসকুলার রিসার্চ প্রোগ্রাম’-এর ডিরেক্টর হন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

স্টকহলম শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩৭
Share:

গ্রেগ সেমেনজ়া, পিটার র‌্যাটক্লিফ ও উইলিয়াম কেলিন

সকলেই ‘অক্সিজেনের’ খোঁজে। বেঁচে থাকার জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান। কিন্তু দেহের কোষগুলির সঙ্গে অক্সিজেনের সম্পর্ক কী রকম, তার উপস্থিতিতে কোষেরা কী ভাবে কাজ করে, বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে কী করে কোষ— সেই সব খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করে এ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন দুই মার্কিন গবেষক উইলিয়াম কেলিন, গ্রেগ সেমেনজ়া এবং বিট্রেনের পিটার র‌্যাটক্লিফ।

Advertisement

রোজ আমরা যে-সব খাবার খাই, তা থেকে শক্তি তৈরি হওয়ায় অক্সিজেনের ভূমিকা ঠিক কী, সেটা জানা হয়ে গিয়েছে বহু দিন আগেই। কিন্তু অক্সিজেনের উপস্থিতিতে কোষ কেমন ব্যবহার করে, বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে কোষ কী ভাবে পরিস্থিতি সামলায়, কী ভাবে বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে কোষেদের মধ্যে পরিবর্তন ঘটে, জিন কী ভাবে সাড়া দেয়, এত দিন এ-সব প্রশ্নের উত্তর জানা ছিল না। এই সবই জানা গিয়েছে কেলিনদের গবেষণায়। ত্রয়ীর গবেষণায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে, অক্সিজেনের বদলে যাওয়া মাত্রায় একেবারে আণবিক পর্যায়ে জিন কী ভাবে কাজ করে। নোবেল অ্যাসেম্বলির মতে, প্রাণিজগতের কাছে অক্সিজেনের গুরুত্ব কতটা, তা বুঝতে এটা বড় আবিষ্কার। অ্যানিমিয়া, ক্যানসার-সহ আরও বেশ কিছু অসুখের চিকিৎসায় যা খুব উপযোগী হবে বলে মনে করছে তারা।

নোবেল অ্যাসেম্বলির অন্যতম সদস্য র‌্যান্ডাল জনসনের বক্তব্য, কেলিনদের এই গবেষণা একটা ‘টেক্সবুক’ আবিষ্কার। তাঁর কথায়, ‘‘পড়ুয়াদের জীববিজ্ঞানের বইয়ে জায়গা করে নেবে এই আবিষ্কার। এটা একেবারে প্রাথমিক স্তরের বিষয়— অক্সিজেনের উপস্থিতিতে কোষ কী ভাবে কাজ করে। জীববিদ্যা নিয়ে পড়াশোনার শুরুতেই বিষয়টা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।’’

Advertisement

২০০২ সাল থেকে হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলে অধ্যাপনা করছেন কেলিন। ডেনা-ফারবার ক্যানসার ইনস্টিটিউটে তাঁর নিজস্ব গবেষণাগার রয়েছে। তবে ১৯৯৮ সাল থেকেই মেরিল্যান্ডের হাওয়ার্ড হিউস মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটে এই সংক্রান্ত গবেষণা করছেন কেলিন।

লন্ডনের ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের ক্লিনিক্যাল রিসার্চের ডিরেক্টর র‌্যাটক্লিফ। অক্সফোর্ডের টার্গেট ডিসকভারি ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টরও তিনি। লুডউইগ ইনস্টিটিউট ফর ক্যানসার রিসার্চের সদস্যও র‌্যাটক্লিফ।

১৯৯৯ সালে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন সেমেনজ়া। ২০০৩-এ জনস হপকিনস ইনস্টিটিউটে ‘ভাসকুলার রিসার্চ প্রোগ্রাম’-এর ডিরেক্টর হন তিনি।

সুখবরটা যখন কেলিনের কাছে যায়, তিনি বাড়িতে একা ছিলেন। পরে বলেন, ‘‘বিজ্ঞানী হিসেবে জানি, ভোর ৫টায় সময় যদি ফোন আসে, তা-ও এতগুলো অঙ্কের একটা ফোন নম্বর থেকে, দারুণ কোনও খবরই হবে। হৃদ্‌যন্ত্রের গতি বেড়ে গিয়েছিল।’’ ৬৩ বছর বয়সি সেমেনজ়াও জানিয়েছেন, ভোর ৪টের সময় ফোনের আওয়াজে তাঁর ঘুম ভাঙে।

আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে ৯ লক্ষ ১৪ হাজার ডলার পুরস্কার তিন বিজ্ঞানীর হাতে তুলে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন