অন্ধ ঘোড়ার দেখভালে ঘুম ছুটেছে নওয়াদার মানুষের

মাস পাঁচেক আগে হঠাৎই গ্রামে এসে হাজির হয় একটা ঘোড়া। তার হাঁটাচলা দেখেই গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়, ঘোড়াটি অন্ধ। সেই থেকে বাদামি রঙের ঘোড়াটিকে চোখে চোখে রাখাই কাজ নওয়াদাবাসীর। তাঁদের অভিযোগ, ঘোড়াটির পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে বন বিভাগ, প্রাণি সম্পদ দফতরে একাধিকবার গিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু কোথাও ঠাঁই মেলেনি। ঘোড়াটির চোখের চিকিৎসা করাতেও প্রশাসন কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে গ্রামবাসীদের দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুসকরা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৯
Share:

মাস পাঁচেক আগে হঠাৎই গ্রামে এসে হাজির হয় একটা ঘোড়া। তার হাঁটাচলা দেখেই গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়, ঘোড়াটি অন্ধ। সেই থেকে বাদামি রঙের ঘোড়াটিকে চোখে চোখে রাখাই কাজ নওয়াদাবাসীর।

Advertisement

তাঁদের অভিযোগ, ঘোড়াটির পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে বন বিভাগ, প্রাণি সম্পদ দফতরে একাধিকবার গিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু কোথাও ঠাঁই মেলেনি। ঘোড়াটির চোখের চিকিৎসা করাতেও প্রশাসন কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে গ্রামবাসীদের দাবি।

আউশগ্রাম থানার নওয়াদা গ্রামের বাসিন্দা আলি হোসেন মল্লিক বলেন, “হঠাৎই এক দিন গ্রামের মাঠে দেখতে পাই ঘোড়াটিকে। প্রথমে ভেবেছিলাম, কেউ ঘাস খাওয়াতে এনেছে। কিন্তু পরপর কয়েকদিন ধরে ঘোড়াটিকে ওখানেই দেখে আমাদের সন্দেহ হয়, ঘোড়াটি অন্ধ।” আরেক বাসিন্দা শেখ মনিরুলও বলেন, “একদিন দেখি ঘাস খেতে খেতে ঘোড়াটা ডিভিসি সেচখালের মধ্যে পড়ে গিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। গ্রামের ছেলেরা ছুটে এসে না বাঁচালে কি হত, কে জানে! তারপরেই আমরা নিশ্চিত হলাম, ঘোড়াটি অন্ধ!” গ্রামের পাশ দিয়েই গিয়েছে বর্ধমান-সাঁইথিয়া রেললাইন। একবার ঘোড়াটি ট্রেনে কাটা পড়তে পড়তে বেঁচে গিয়েছে বলেও গ্রামবাসীদের দাবি। ঘোড়াটিকে চোখে চোখে রাখতে গ্রামের কমবয়েসী ছেলেদের দিয়ে একটি নজরদার বাহিনীও গড়েছেন তাঁরা। নজরদার বাহিনীর শেখ বাদশা, শেখ রাজারা জানায়, ঘোড়াটি খাবার খুঁজতে খুঁজতে কোনও ভাবে রেল লাইনের ধারে বা ক্যানাল পাড়ে চলে গেলে আমরা বড়দের খবর দিই। বড়রা এসে তাকে সরিয়ে নিয়ে যান। তবে দিনের ব্যবস্থা করা গেলেও রাত নিয়ে চিন্তিত গ্রামের মানুষ। শেখ মুস্তাকিম বলেন, “ভয় তো লাগেই। রাতবিরেতে কখন ট্রেন লাইনের পাড়ে চলে গিয়ে কাটা পড়বে।” তাঁদের দাবি, ঘোড়াটির একটা স্থায়ী ঠিকানার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।

Advertisement

তবে জেলা বনাধিকারিক অজয়কুমার দাসের বক্তব্য, “ঘোড়া তো গৃহপালিত পশু। তাই ওই প্রাণিটিকে আমরা রাখতে পারব না। অন্য বন্য জন্তু হলে হয়ত রাখতাম।” আর আউশগ্রাম ১ এর বিডিও অরুন পাল বলেন, “খবর পেয়ে আমাদের ব্লকের লাইভ স্টক ডেভলপমেন্ট অফিসারকে গ্রামে পাঠিয়েছিলাম। তবে উনি ওই ঘোড়াটির চোখের চিকিৎসা করা সম্ভব কি না বুঝতে পারছেন না। ঘটনাটির কথা জেলা প্রশাসনকেও জনিয়েছি। আশা করি একটা ব্যবস্থা করা যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন