পুজোর পরে সাফ করা হয়নি করলা

একে গভীরতা কমেছে। তার উপরে ছট পুজোর পরে সাফাই না হওয়ায় জলপাইগুড়ির করলা নদীতে আবর্জনার স্তুপ ভাসতে দেখে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে পরিবেশপ্রেমীদের মধ্যে। প্রশ্ন উঠেছে করলা দূষণ প্রতিরোধে পুরসভার ভূমিকা নিয়েও। এক সময় দিনবাজার থেকে পণ্য বোঝাই নৌকা করলার জলে ভেসে কিং সাহেবের ঘাট হয়ে পৌঁছে যেত তিস্তায়। সেখান থেকে বার্ণিশ ঘাটে। একই পথে শহরে পণ্য সামগ্রী পৌঁছে যেত। টলটলে গভীর জল ছিল করলায়। গত কয়েক দিনে নদীর দুর্দশা দেখে শহরের কেউ ঘুণাক্ষরেও তা ভাবতে পারছেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৪১
Share:

করলা নদীতে ভাসছে কলাগাছ। ছবিটি তুলেছেন রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়।

একে গভীরতা কমেছে। তার উপরে ছট পুজোর পরে সাফাই না হওয়ায় জলপাইগুড়ির করলা নদীতে আবর্জনার স্তুপ ভাসতে দেখে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে পরিবেশপ্রেমীদের মধ্যে। প্রশ্ন উঠেছে করলা দূষণ প্রতিরোধে পুরসভার ভূমিকা নিয়েও। এক সময় দিনবাজার থেকে পণ্য বোঝাই নৌকা করলার জলে ভেসে কিং সাহেবের ঘাট হয়ে পৌঁছে যেত তিস্তায়। সেখান থেকে বার্ণিশ ঘাটে। একই পথে শহরে পণ্য সামগ্রী পৌঁছে যেত। টলটলে গভীর জল ছিল করলায়। গত কয়েক দিনে নদীর দুর্দশা দেখে শহরের কেউ ঘুণাক্ষরেও তা ভাবতে পারছেন না।

Advertisement

নদী বক্ষ জুড়ে ভাসমান রকমারি আবর্জনা। কোথাও কলা গাছ। কোথাও থার্মোকল, নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ, ফুল, পাতা, প্রতিমার কাঠামো। মাঝ নদীতে আটকে স্তুপ হয়ে জমেছে। স্রোত হারানো জলধারায় কয়েকদিনে বেড়েছে শ্যাওলার সংসার। নদীর সর্বত্র গেঁজে ওঠা দূষিত ফ্যানা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্গাপুজোতে তেমন সমস্যা হয়নি। প্রতিমা নিরঞ্জনের পরে তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু কালীপুজো থেকে পুরসভার নজরদারি ছিল না। ফলে নদী বেহাল হতে শুরু করে। ছট পুজোর পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। কেন এমন উদাসীনতা? জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সন্দীপ মাহাত বলেন, “পুজোর জন্য অফিস ছুটি থাকায় কিছু সমস্যা হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে সাফাই অভিযান শুরু হবে।”

কিন্তু পুর কর্তাদের ওই সাফাই মানতে নারাজ জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাব। সংস্থার সম্পাদক রাজা রাউত বলেন, “পুরসভার সব কর্মীর পুজোর ছুটি। এটা মানা যায় না। সচেতনতার অভাবেই এবার করলা দূষণের ঘটনা দেখছি। এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়।” শহরকে দুভাগে ভাগ করে বয়ে চলেছে করলা। একদিকে প্রশাসনিক কার্যালয়, হাসপাতাল, সংশোধনাগার। অন্যদিকে রয়েছে বানিজ্যিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে শহরের পেট চিরে এখন কাদোবাড়ির কাছে তিস্তায় মিলেছে ওই নদী। পরিবেশপ্রেমীদের মতে এমনিতে উৎসস্থলে বেপরোয়া বৃক্ষচ্ছেদনের ফলে ভূমিক্ষয় উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় করলা গভীরতা হারিয়েছে। তাঁর উপরে যদি বিভিন্ন উৎসবে এভাবে দূষণ বেড়ে চলে তবে আগামী দিনে নদীকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। পরিবেশ ও নদী বাঁচাও কমিটির আহ্বায়ক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নদীকে বাঁচাতে পুরসভাকে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন