চিড়িয়াখানার দুই নতুন সদস্য, তিন বছরের তিতি ও বছর পাঁচেকের রানি। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
প্রবীণারা বিদায় নিয়েছে সপ্তাহখানেক আগে। তাদের জায়গায় এ বার দর্শকদের সামনে হাজির হচ্ছে নতুন দুই খুদে। আজ, শুক্রবার থেকেই আলিপুর চিড়িয়াখানায় দেখা মিলবে তাদের।
রানি আর তিতি। ছোট্ট দুই হাতি চিড়িয়াখানার নতুন দুই সদস্য। প্রথম জনের বয়স পাঁচ বছর, অন্য জনের তিন। এ মাসের গোড়ায় জলদাপাড়া থেকে এ শহরে পৌঁছনোর পরে আবহাওয়ার বদলের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সপ্তাহ তিনেক সময় দেওয়া হয়েছিল তাদের। শীতের মরসুমে দর্শকদের ভিড় যখন বাড়ছে, তখন রানি আর তিনি তাঁদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
গত এক সপ্তাহ চিড়িয়াখানা ছিল হাতি-শূন্য। এত দিন এখানে ছিল তিনটি হাতি— মমতাজ (২৫), ফুলবন্তী (২২) ও উত্তরা (২০)। তিন জনই ২১ তারিখ জলদাপাড়া পাড়ি দিয়েছে। কুনকির কাজ করাতে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের। শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকায়, চিড়িয়াখানার গমগমে পরিবেশে জীবনযাপনে অভ্যস্ত মমতাজ, ফুলবন্তীরা যদিও নতুন জায়গায় মোটেই স্বস্তিতে নেই। তাদের বাগে আনতে হিমশিম অবস্থা জলদাপাড়ার মাহুতদের।
আলিপুরে এসে অবশ্য তেমন সমস্যা হচ্ছে না তিতি, রানিদের। তোর্সা নদীর চর থেকে উদ্ধার করে জলদাপাড়ায় পাঠানো হয়েছিল তিতিকে। রানি সেখানে যায় ঝাড়গ্রাম থেকে। দু’জনেই আলিপুরে এসে পৌঁছয় ৬ নভেম্বর। নতুন জায়গায় এসেও তারা দিব্যি আছে বলে এ দিন জানান চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
এ দিন তিতি আর রানির খাঁচার সামনে নিয়ে যাওয়া হয় সাংবাদিকদের। মাহুতদের সঙ্গেই সকলের সামনে এসে দাঁড়ায় তারা। আকারে নেহাতই ছোট। গলায় পিতলের চকচকে ঘণ্টা বাঁধা। মাথায় টোকা মারলে খোশমেজাজে শুঁড় নেড়ে টুংটাং শব্দ তুলছে তাতে।
চিড়িয়াখানার অধিকর্তা কানাইলাল ঘোষ জানান, রুটি, ভাত, খিচুড়ি, কলাগাছ-সহ নানা ধরনের গাছ, ঘাস খেয়ে ফুরফুরে মেজাজেই আছে পুঁচকে হাতিরা। জলদাপাড়ার স্যাঁতসেঁতে, ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে কলকাতায় এসে বেশ মানিয়েও নিয়েছে। সকাল-বিকেল নিয়ম করে হাঁটাহাঁটি করছে চিড়িয়াখানায়।
তবে দু’জনেই এখনও রয়েছে চিকিত্সকদের তত্ত্বাবধানে। তাই কিছুটা বাড়তি সতর্ক চিড়িয়াখানা-কর্তৃপক্ষ। তারা যাতে আচমকা অসুস্থ হয়ে না পড়ে, সে জন্য তিতি, রানিদের কাছ থেকে বাইরের খাবারও দূরে রাখতে চান তাঁরা। দর্শকেরা যাতে বাইরে থেকে হাতিদের খাবার ছুড়ে দিতে না পারেন, সে জন্য ওই খাঁচার বাইরে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কানাইলালবাবু।