হাতি সুমারির জন্য জঙ্গলে নিষেধাজ্ঞা, ক্ষুব্ধ লজ মালিকেরা

চলতি মাসে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলগুলিতে শুরু হবে হাতি সুমারি। তার জেরে এই সময়ে জঙ্গলে পর্যটকদের প্রবেশ নিয়ে বনদফতরের এক এক জায়গায় এক এক রকম বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ জিপসি গাড়ি ও লজ মালিকদের একাংশ। কোথাও পাঁচ দিন পর্যটকদের জঙ্গলে ঢোকা বারণ। কোথাও আবার পর্যটকদের প্রবেশ নিয়ে শিথিল কড়াকড়ি। বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা পর্যটকদেরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:২৩
Share:

চলতি মাসে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলগুলিতে শুরু হবে হাতি সুমারি। তার জেরে এই সময়ে জঙ্গলে পর্যটকদের প্রবেশ নিয়ে বনদফতরের এক এক জায়গায় এক এক রকম বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ জিপসি গাড়ি ও লজ মালিকদের একাংশ। কোথাও পাঁচ দিন পর্যটকদের জঙ্গলে ঢোকা বারণ। কোথাও আবার পর্যটকদের প্রবেশ নিয়ে শিথিল কড়াকড়ি। বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা পর্যটকদেরও।

Advertisement

প্রতি চার বছর অন্তর উত্তরবঙ্গের জঙ্গলগুলিতে চলে হাতি সুমারি। এই বছর ১৫-১৭ ডিসেম্বর, এই তিন দিন ভারত নেপাল সীমান্তের মেচি নদী থেকে বাংলা অসম সীমানার সংকোশ নদী পর্যন্ত ইর্স্টান ডুয়ার্স এলিফ্যান্ট রির্জাভ বলে চিহ্নিত এই এলাকায় চলবে হাতি গননা। এর জন্য লাটাগুড়িতে ১৪-১৮ডিসেম্বর জিপসি সাফারি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, জলদাপাড়া এলাকায় আবার ১৩-১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাফারি বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্তারা এখনও পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। তাঁদের যুক্তি, জঙ্গলে যখন হাতি সুমারি হবে, শুধু মাত্র সেই সময়টুকুর জন্য পর্যটকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

রাজ্যের বনদফতরে এক এক জায়গায় এক সময়ে বন্ধের নোটিশ কেন? তা নিয়ে অবশ্য কিছুই জানেন না রাজ্যের মন মন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মন। তিনি বলেন, “এক একটি জঙ্গল কেন এক এক সময় বন্ধ রাখা হয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখব।” বনপাল বন্যপ্রান (উত্তর) তাপস দাস বলেন, “জলদাপাড়ায় ১৩-১৭ ডিসেম্বর বন্ধ। বক্সায় কী হচ্ছে, জানা নেই।” জলপাইগুড়ি বন্যপ্রাণ ২ বিভাগের ডিএফও সুনীতা ঘটক বলেন, “১৪ ডিসেম্বর বিকেল থেকে ১৮ ডিসেম্বর হাতি সুমারির জন্য পর্যটকদের সাফারি বন্ধ থাকবে।”

Advertisement

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিএফডি অপূর্ব সেন বলেন, “১২ ডিসেম্বর রাজাভাতখাওয়ায় বনকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে নিয়ে একটি কর্মশালা রয়েছে। তারপরেই আমারা জঙ্গলে হাতি গননার সময় পর্যটকরা কখন কোথায় যেতে পারবেন না, তা স্থির করব।”

চিলাপাতার লজ মালিক গনেশ শা বলেন, “পর্যটনের ভরা মরসুমে টানা পাঁচ দিন জলদাপাড়া, চিলাপাতা এলাকায় জঙ্গলসাফারি বন্ধ রাখা হচ্ছে। এক এক জায়গায় এক এক সময় তা বন্ধ রাখা হচ্ছে। ১৫-১৭ ডিসেম্বর হাতি গণনা শুরু হলেও তার দু’দিন আগে ১৩ ডিসেম্বর থেকে জঙ্গলে পর্যটকদের ঢোকা বারণ। কী যুক্তিতে এই সিদ্ধান্ত বুঝতে পারছি না।” লাটাগুড়ির লজ মালিক বিপ্লব দে বলেন, “ সব জায়গায় এক সঙ্গে চলবে হাতি গননা। বনদফতরের উচিত ছিল, সব জঙ্গলে এক সঙ্গে বন্ধ রাখা। এতে পর্যটকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ”

লাটাগুড়ির জিপসি ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সমীর দেব, চিলাপাতার জিপসি মালিক অনিল কার্জীরা জানান, এত দিন জঙ্গল বন্ধ থাকলে ব্যবসায় প্রভাব পড়বে। জলদাপাড়ার লজ মালিক বিশ্বজিত্‌ সাহা বলেন, “বনদফতরের কোনও নীতি নেই। ভরা পযর্টন মরসুমে হাতি গননা করে জঙ্গলে পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হচ্ছে। তাও আবার এক এক জায়গায় এক এক সময় বন্ধ রাখা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন