সদ্যোজাতের সঙ্গে মা। —নিজস্ব চিত্র।
বিয়ের পরে দীর্ঘ পনেরো বছরের অপেক্ষা। সন্তান হয়নি টিউমারের জন্য। শেষমেশ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে জরায়ু অক্ষত রেখেই সফল অস্ত্রোপচারে টিউমার বাদ দেওয়া হয় ফুলমণি বাস্কের। তারপর দিয়ে অন্তঃসত্ত্বা হন তিনি। আর এই ডিসেম্বরে সন্তানের জন্ম দিলেন ফুলমণি। নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রবিবার অস্ত্রোপচার করেই কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন বছর ছত্রিশের ফুলমণি। মা-মেয়ে দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন।
ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রামের বনিশোলের ছোটতালপাতা গ্রামের বাসিন্দা ফুলমণি। এত বছর পরে মা হতে পারায় খুশি তিনি। খুশি শ্বশুরবাড়ি ও বাপেরবাড়ির লোকজন। বাবা হওয়ার আশা একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছিলেন বলে জানালেন ফুলমণির স্বামী সুনারাম কিস্কু। খুশির বাঁধ ভেঙেছে তারও। নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ প্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রসূতির বয়স তুলনায় বেশি। গত বছর একটি জরায়ু অক্ষত রেখে সন্তান জন্মাবার সম্ভাবনাকে বাঁচিয়ে টিউমার অপারেশন করা হয়েছিল। ফলে ঝুঁকি না নিয়ে সিজার করতে হয়েছে। মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে ভাল লাগছে।’’
ফুলমণির প্রথম উপসর্গ ছিল তলপেট ফোলা, ব্যথা ও প্রস্রাবের সমস্যা। চিকিৎসকের পরামর্শে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করলে ধরা পড়ে প্রায় দেড় কেজি টিউমার রয়েছে। চিকিৎসক প্রসাদই সফল অস্ত্রোপচারে টিউমার বাদ দেন। তারপর থেকে নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল। ফুলমণির শাশুড়ি গাঙ্গুলি কিস্কু বলেন, ‘‘চিকিৎসকের হাতযশেই নাতনির মুখ দেখলাম। বিনা খরচে সব কিছুই হল।’’ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল আর সেই সূত্রে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে যাওয়াতেই এমন ঘটনা সম্ভব হচ্ছে বলে মত ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্বল দত্ত। নয়াগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার কৌশিক দাস বলেন, ‘‘এক মহিলা দীর্ঘদিন পরে মা হতে পেরেছেন, সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।’’