চৈতালি ওয়াসনিক। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে
‘ভুল ব্যক্তিকে টার্গেট করেছিল ওরা। শেষ পর্যন্ত মার খেয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। বাড়ি গিয়ে শরীরের আঁচড়ানো, কামড়ানোর দাগগুলো নিজের মাকে দেখিও। আর বল, ‘নর্থওয়ালি লেড়কি’র হাতে মার খেয়ে এসেছি। আর কখনও কোনও মেয়েকে দেখে যৌন ইচ্ছা জাগবে না।’ সম্প্রতি নিজের নিগৃহকারীর উদ্দেশে ফেসবুকে এমনটাই পোস্ট করলেন চৈতালি ওয়াসনিক। ৩১ ডিসেম্বর রাতে বেঙ্গালুরুতে বর্ষবরণের আনন্দ উৎসবে সামিল ছিলেন চৈতালি। কিন্তু নতুন বছরের আনন্দ নিমেষে ফিকে হয়ে গিয়েছিল একাধিক মদ্যপ পুরুষের হাতে। তবে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েও দমে যাননি ২৪ বছরের চৈতালি। প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে বেছে নেন সোশ্যাল মিডিয়াকে। বাড়ি ফিরেই পোস্ট করেন একটি মেসেজ। পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় চার হাজার ‘হিট’ পেয়েছে এই পোস্ট।
এমনিতে মহিলাদের জন্য তুলনামূলক ভাবে সুরক্ষিত বলে সুনাম রয়েছে বেঙ্গালুরুর। কিন্তু বর্ষশেষের রাতে পুরোপুরি বদলে গিয়েছিল ছবিটা। বেঙ্গালুরুর এম জি রোড এবং ব্রিগেড রোডের মতো অভিজাত এলাকায় বর্ষবরণের জন্য একাধিক মহিলার যৌন হেনস্থার ঘটনায় নিন্দায় সরব হয় গোটা দেশ। এর মধ্যে কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরের একাধিক দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যে যেন ঘি পড়েছিল আগুনে। ঘটনার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে বিতর্কিত মন্তব্য করার তীব্র নিন্দা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুও। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্য হয় কর্নাটক প্রশাসন।
এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই মুখ খুলেছে সোশ্যাল মিডিয়া। চৈতালি ওয়াসনিকও ফেসবুকেই লিখলেন তাঁর প্রতিবাদ। চৈতালি লিখেছেন, ‘যদি কেউ মদ্যপান করে নিজেকে সামলাতে না পারে তা হলে খাওয়ার কী দরকার? ফ্রি-তে পেলে নিজের প্রস্রাবও খেয়ে ফেলতে পারে এরা।’ চৈতালির মতে, পুরো ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে দুঃখজনক, তাঁর চিকেন কারির বাক্সটা পড়ে গিয়েছিল। তবে জনৈক ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি চৈতালি। লিখছেন, ‘এক জন ‘ভালমানুষ’ আমার বিরিয়ানির বাক্সটা ফেরত দিয়েছিলেন। তাঁর নাম আমি জানি না। কিন্তু আমার বিরিয়ানির খেয়াল রাখার জন্য থ্যাঙ্ক ইউ ম্যান!’
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে যথেচ্ছ যৌন হেনস্থার ঘটনায় কর্নাটক সরকারের নিন্দায় কেন্দ্র
আরও পড়ুন: বর্ষশেষের রাতে বেঙ্গালুরুতে বহু মহিলার শ্লীলতাহানি!