ছবি সৌজন্য: পৌলমী মল্লিক কুণ্ডু
পৌলমী বিয়ের পরে বিদেশ চলে গিয়েছে। আমার ছোট্টবেলার পুরনো বন্ধুটা একা ঘর সংসার গুছোতে গিয়ে কবেই যে এত বড় রাঁধুনি হয়ে উঠেছে, জানতেও পারিনি। সরষে দিয়ে মুরগীর মাংস রান্না করার ভাবনাটা ওর থেকেই ধার করা। সঙ্গে জোয়ানটা আমার নিজের সংযোজন। ভাতে-মাছে বাঙালির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে সর্ষে। এর গুণাগুণের কথা যদি না-ও বলি, যে কোনও রান্নায় এক চিমটে সরষে ফেলে দিন, দেখবেন তার স্বাদ হবে অপূর্ব। আমাদের বাড়িতে আজ অবধি সরষে গুঁড়ো কেনা হয় না। মা এখনও বড় কালো পাথরের শিলে সরষে বাটতে ভালবাসেন। অল্প খোসা থাকবে, নিজের ইচ্ছে মতো ঘনত্বে যদি সরষে বাটা না-ই বানানো গেল, তাহলে আর রান্নার স্বাদ খুলবে কি! এটা অবশ্য মায়ের মতো। আপনার হাতে সময় না থাকলে কিনে নিন বাজারের সরষের গুঁড়োর প্যাকেট। আর তা-ও না থকলে কাসুন্দি তো আছেই। তাই অল্প সময় বের করে চটপট বানিয়ে ফেলুন সরষে চিকেন।
উপকরণ:
মুরগির মাংস— ৫০০ গ্রাম
পেঁয়াজ— ২টি
রসুন— ৫-৬ কোয়া
আদা— ১ টেবিল চামচ
কাঁচা লঙ্কা— ৫-৬টি
সরষে— ৩ টেবিল চামচ
শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো— ১ চা চামচ
জোয়ান— ১ চা চামচ
নুন— স্বাদ মতো
চিনি— এক চিমটে
হলুদ— ১/২ চা চামচ
লেবু— ১টি
সরষের তেল— প্রয়োজন মতো
প্রণালী:
প্রথমে মুরগীর মাংস ভাল করে ধুয়ে নুন, অর্ধেক লেবুর রস, অল্প রসুন বাটা আর অর্ধেক সরষে বাটা দিয়ে অন্তত আধ ঘণ্টা মেখে রাখুন। কড়াইয়ে সরষের তেল গরম করে জোয়ান ফোড়ন দিন। এ বার কুচিয়ে রাখা পেঁয়াজ ভাজুন। হালকা সোনালি রং ধরতে শুরু করলে একে একে রসুন বাটা, আদা বাটা, হলুদ গুঁড়ো, শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো দিন। এ বার ম্যরিনেট করে রাখা মাংসের টুকরো করে তেলে ছেড়ে দিন। স্বাদ মতো নুন আর এক চিমটে চিনি দিন। ভালো করে কষতে থাকুন। তেল ছাড়তে শুরু করলে বাকি সরষে বাটা আর লেবুর রস দিয়ে দিন। সামান্য জল ছিটিয়ে দিন। চাপা দিয়ে আঁচ ঢিমে করুন। মাংস শুকনো শুকনো হয়ে এলে নামিয়ে নিন। উপর থেকে সরষের তেল ছড়িয়ে রুমাল রুটি বা ধোঁয়া ওঠা ভাতের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।
(যদি সরষে বাটার বা গুঁড়ো কেনার সময় না থকে, তাহলে কাসুন্দিও দিতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে নুনের পরিমাণটা অল্প দেবেন।)