ডিয়ার জিন্দেগি ছবির কায়রাকে মনে আছে? একাকিত্ব আর অনিশ্চয়তায় ভুগে ছোট্ট কায়রা ফেল করেছিল ক্লাস টু-তে। সেই ফেল করার আতঙ্ক কিন্তু রয়ে গিয়েছিল তার অবচেতনে। কোনও ভাবেই আর জীবনের সেই সময়টা ফেরত চায়নি কায়রা। চোখ বুজে তাই দৌড়েছিল সাফল্যের পিছনে। ২৫ পূর্ণ করার আগেই কায়রা হয়ে উঠেছিলেন সফল ডিওপি। গল্পের কায়রাই যেন বাস্তবের রুক্মিনী রায়ার। চণ্ডীগড়ের রুক্মিনী বোর্ডিং স্কুলে পড়ার সময় ফেল করেছিল ষষ্ঠ শ্রেণিতে। কায়রার মতোই অবসাদ, অনিশ্চয়তা তাড়া করে বেড়াত তাকেও। সেই আতঙ্কের তাড়া খেয়েই বাঁচতে প্রাণপণে ছুটছিলেন স্বপ্নের পিছনে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ফেল করা সেই রুক্মিনীই আজ আইএএস পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন দেশে।
২৯ বছরের রুক্মিনী টাটা ইন্সটিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস, মুম্বই থেকে সোশ্যাল এন্টারপ্রেনারশিপে স্নাতকোত্তর পর্ব শেষ করেছেন। ডালহৌসির সেক্রেড হার্ট স্কুলে পড়ার সময় ষষ্ঠ শ্রেণিতে ফেল করার পর থেকেই ব্যর্থতার আতঙ্কে অবসাদে ভুগতেন তিনি। তবে সেই অবসাদের কাছে হার মানেননি। বরং ক্রমশই মাথায় চেপে বসে ছিল জেদ। আর কোনও ভাবেই ব্যর্থতাকে ছুঁতে দেওয়া চলবে না। ২০০৫ সালে ভর্তি হন স্কুল অব সোশ্যাল সায়েন্সে। ২০০৮ সালে ডিস্টিংশন নম্বর নিয়ে স্বর্ণপদক পেয়ে পাশ করেন রুক্মিনী।
আরও পড়ুন: পাইলট হওয়ার স্বপ্ন ছেড়ে ডাক্তারিই লক্ষ্য মাধ্যমিকে রেকর্ড গড়া মেয়ের
পড়াশোনা শেষ করে ভারতীয় সমাজকে ভাল করে জানার আগ্রহে কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্রের দুটি এনজিওতে কাজ করেন তিনি। এরপর যোগ দেন প্ল্যানিং কমিশন অব ইন্ডিয়ার চাকরিতে। চাকরি করতেই করতেই সিদ্ধান্ত নেন পাবলিক সার্ভিসে যাওয়ার। ২০১১ সালে ইউপিএসসি-তে পুরো দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিলেন রুক্মিনী। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিদ্যা নিয়ে প্রথম চেষ্টাতেই উত্তীর্ণ হন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায়। কোনও বিশেষ কোচিং ছাড়াই আইএএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করার কৃতিত্ব পরিশ্রমকেই দিলেন রুক্মিনী। বলেন, ‘‘পরিশ্রমের ফল পেয়েছি। আমার বাবা-মা, শিক্ষকদের, বন্ধুদের এবং অবশ্যই ভগবানকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আগামী দিনের পরীক্ষার্থীদের বলব- পরিশ্রম, লেগে থাকা আর লক্ষ্যে স্থির থাকাই সাফল্যের একমাত্র পথ। এখনই শুরু করো। যদি আমি পারি, বাকি সবাই পারে, তা হলে তোমাকেও কেউ আটকাতে পারবে না।’’