বছর পঞ্চান্ন বয়স। পরনে সাধারণ আটপৌরে শাড়ি। মাথায় ঘোমটা। কিন্তু মুখটা অসম্ভব দৃঢ়। হাত-পায়ের গঠন মজবুত। দিল্লির সঞ্জয় গাঁধী ট্রান্সপোর্ট নগরে (এসজিটিএন) গেলেই দেখা মিলবে তাঁর। তিনি শান্তি দেবী। সম্ভবত ভারতের প্রথম মহিলা ট্রাক মেকানিক তিনিই।
হয়তো মহিলা-পুরুষ সাম্য-বৈষম্যের এত তথ্য জানেন না তিনি। কিন্তু প্রতিদিন তথাকথিত ‘পুরুষ’দের কাজ করেই দিন গুজরান হয় শান্তিদেবীর। দিল্লির এসজিটিএন-এ চায়ের দোকানের পাশেই নিজের ট্রাক সারাইয়ের দোকান চালান তিনি। পাশের চায়ের দোকানটি শান্তিদেবীর স্বামীর। তাঁরা দু’জনে মিলে ২০ বছর ধরে এই ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
কিন্তু কী করে এই ব্যবসায় নামলেন শান্তিদেবী? মহিলাদের চিরাচরিত কাজগুলো ছেড়ে হঠাৎ ট্রাক মেকানিকই বা হতে গেলেন কেন? উত্তর দিলেন তিনি নিজেই। স্বামীর কাছ থেকেই নাকি এই কাজে হাতেখড়ি। বিয়ের পর থেকেই দেখতেন এসজিটিএন-তে ট্রাক সারাই করেন স্বামী। তখন থেকেই স্বামীর সঙ্গে তিনিও হাত লাগাতেন এই কাজে। এখন শান্তিদেবী একাই একশো। তাঁর দাবি, ‘‘পুরুষদের থেকেও এখন ভাল কাজ করতে পারি। প্রতিদিনের কাজে সেটা প্রমাণও করে দিই আমি।’’
তবে এ নিয়ে কোনও সামাজিক বাধা বা তীর্যক মন্তব্য কি ধেয়ে আসে তাঁর দিকে? ‘‘অনেকেই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। আর আমি আমার কাজ করি।’’— ঘোমটার আড়াল থেকে শান্তভাবে উত্তর দিলেন শান্তিদেবী।
আরও পড়ুন: ১১৭ বছরের দীর্ঘ জীবনের রহস্য লুকিয়ে রয়েছে প্রতি দিনের তিনটে ডিমে