সাহানা খাতুন
বাংলাদেশের এক গ্রামের দশ বছরের সাহানা খাতুনের শরীরে হঠাৎই কিছু ফুসকুরি দেখা যায়। সাহানার বাবা ভেবেছিল এগুলো হয়তো বসন্তের দাগ। কিন্তু দিনে দিনে অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকে। বসন্তের দাগের মতো আর থাকছিল না দাগগুলো। ছড়িয়ে পড়তে থাকে ছোট্ট সাহানার সারা শরীরে। সাহানার বাবা ভয় পেয়ে গ্রাম থেকে তড়িঘড়ি ঢাকায় নিয়ে আসেন মেয়েকে। কোনও দুরারোগ্য ব্যাধি নয় তো? রীতিমতো ভয় পেয়ে যায় সাহানার বাবা।
চিকিতসকেরা জানান, এর নাম ‘ট্রি ম্যান সিনড্রোম’। হতবাক হয়ে যান সাহানার বাবা। এ আবার কী ধরনের রোগ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিত্সক বলেন, “এই রোগের নাম এপিডারমোডিসপ্লেসিয়া ভেরুসিফরমিস। এর ফলে সারা শরীরে গাছের শিকড়ের মতো কিছু জিনিস বেরতে থাকে। মূলত হাত আর পায়ে ছড়িয়ে পড়ে এই ‘শিকড়’। সাহান এক্কেবারে ঠিক সময়ে এসেছে। এই রোগ এখন নির্মূল করা সম্ভব।” বিরল এই রোগের খবর বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক বার শোনা গেলেও সম্ভবত সাহানাই বিশ্বের প্রথম বৃক্ষমানবী।
বাবার সঙ্গে হাসপাতালে ছোট্ট সাহানা। ছবি: এএফপি
তবে সাহানার ক্ষেত্রে রোগের চিহ্নিতকরণ এনেক সহজ হয়েছে। গত বছর আবুল বাজনদার নামে ২৭ বছরের এক ব্যাক্তি এই একই রোগ আর লক্ষণ নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে আবুলের লক্ষণগুলো ছিল আরও প্রকট। হাত আর পা মিলিয়ে আবুলের প্রায় ৫ কিলোগ্রামের কাছাকাছি ‘শিকড়’ বেরিয়েছিল। ১৬টি পৃথক সার্জারির পর আবুলের এই শিকড়গুলো অনেকটাই নিরাময়ের পথে। আর কিছু দিনের মধ্যে তাকে হয়তো হাসপাতাল থেকে ছেড়েও দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ২২ বছর ধরে ড্রেনের মধ্যেই থাকেন এই দম্পতি!