জুলিয়ন রিয়স কান্টু (বাঁ দিকে)। ঠিক এরকমই দেখতে হবে ওই ব্রা।
স্তন ক্যানসারের যন্ত্রণায় মাকে কষ্ট পেতে দেখেছেন। জুলিয়ন রিয়স কান্টু তখন অনেক ছোট। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, রোগটা আরও একটু আগে ধরা পড়লে মাকে বাঁচানো যেত হয়ত। মাকে বাঁচাতে পারেননি জুলিয়ন। কিন্তু মায়ের মতো আর কোনও মহিলাকে যাতে সেই যন্ত্রণার মুখোমুখি হতে না হয়, তার জন্যই ক্যানসার শনাক্তকরণে এক অভিনব ব্রা তৈরি করে ফেলছেন তিনি। খুব তাড়াতাড়ি যা বাজারে আসতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
জুলিয়ন মেক্সিকোর বাসিন্দা। বয়স মাত্র ১৮ বছর। ইতিমধ্যেই তিনি হিজিয়া টেকনোলজি নামে এক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সংস্থা মহিলাদের স্বাস্থ্য কী ভাবে ঠিক রাখা যায় সে দিকে খেয়াল রাখে। সেই সংস্থার সাহায্যেই নিজের ভাবনাকে বাস্তবের রূপ দিয়েছেন জুলিয়ন।
জুলিয়ন জানান, ওই ব্রা-এ ২০০টি বায়োসেন্সর লাগানো থাকবে। যা স্তনের ত্বকের সংস্পর্শে এলেই কাজ করতে শুরু করবে। মূলত স্তনের কোনও নির্দিষ্ট অংশের আকার, রং এবং তাপমাত্রার কোনও পরিবর্তন হলে বায়োসেন্সর তা তৎক্ষণাৎ শনাক্ত করে নেবে। সেন্সরগুলি ব্লু-টুথের মাধ্যমে স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে। স্তনের আকার, রং বা তাপমাত্রার পরিবর্তন ফুটে উঠবে স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের স্ক্রিনে। স্তন ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে এই তিনটিই প্রধান।
১৮ বছরের পর থেকে প্রত্যেক মহিলাকেই মাসে অন্তত একদিন সেল্ফ একজামিনেশন করতে বলেন চিকিৎসকেরা। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে স্তন ক্যানসার নিরাময় সম্ভব বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকেরা। কিন্তু বেশির ভাগ মহিলাই তা করেন না। ফলে ক্যানসার ধরা পড়ে অনেক দেরিতে। আর এই সচেতনতার অভাবেই বিশ্বব্যাপী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। হু-র একটি সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৯৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত শুধুমাত্র ভারতে স্তন ক্যানসারে ৮২ শতাংশ মৃত্যু বেড়েছে। যার মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যাটাই বেশি।
আরও পড়ুন: ফর্সা ত্বকে আকৃষ্ট সমাজকে সপাটে চড় কষালো এই তিন সুন্দরীর ছবি
কিন্তু বারবার সচেতন করা সত্ত্বেও সেল্ফ একজামিনেশন বেশির ভাগ মহিলাই করেন না। সেই সমস্ত মহিলাদের জন্য এই ব্রা খুবই কার্যকর হবে। জুলিয়ন জানান, এই ক্যানসার শনাক্তকরণ ব্রা সপ্তাহে একদিন মাত্র ১ ঘণ্টার জন্য পরলেই যথেষ্ট। মহিলাদের দৈনন্দিন জীবনে কোনও রকম অসুবিধার সৃষ্টি করবে না বলে দাবি করেছেন জুলিয়ন। এই ব্রা আবিষ্কার করে আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছেন জুলিয়ন। যার পুরস্কার মূল্য ২০ হাজার ডলার।