ক্যাপ্টেন তুমিই সেরা। হয়তো এটাই বলতে চাইছেন রাহানে। ছবি: এএফপি।
শ্রীলঙ্কা ২০৫ ও ১৬৬ (৪৯.৩ ওভার)
ভারত ৬১০/৬ (ইনিংস ঘোষণা)
এ ভাবেও ফিরে আসা যায়!
এক সময় শুধু সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রত্যাবর্তন নিয়ে এই উক্তিটি বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল। এ বার বিরাট কোহালি টিম ইন্ডিয়ার জন্যও একইভাবে এটা বলা যায়। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ইডেনে প্রথম টেস্টটা ভাল যায়নি। এক তো বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ তার উপর প্রথম ইনিংসে ভারতের খারাপ ব্যাটিং। যার ফল ম্যাচ ড্র। কিন্তু নাগপুরে দ্বিতীয় টেস্টেই দুরন্ত কামব্যাক। ইনিংসে জয়। তিনটি সেঞ্চুরি একটি ডবল সেঞ্চুরি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ফেরা হয়তো একেই বলে। ফেরা, সঙ্গে নিয়ে বেশ কিছু রেকর্ড। সেই তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেললেন বিরাট কোহালি ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
আরও পড়ুন
পঞ্চম ডাবল: সানিকেও পিছনে ফেললেন বিরাট
বিরাটই রাজা, স্মিথরা এখন অনেক দূরে
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ভারতীয় বোলিংয়ের দাপটে প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায় ২০৫ রানেই। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত রান চান্ডিমালের ৫৭। ৫১ রানের ইনিংস খেলেন করুনারত্নে। দলের সঙ্গে সঙ্গে বল হাতে ঘুরে দাঁড়ান রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাডেজা। যাঁদের ভবিষ্যত নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছিল। প্রথম ইনিংসে অশ্বিনের ৪ উইকেট, জাডেজার ৩। ইশান্ত শর্মা নেন ৩ উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৭ রান করে লোকেশ রাহুল প্যাভেলিয়নে ফেরার পর থেকেই যেন হাল ধরতে নেমে পড়েন সকলে। আর এক ওপেনার মুরলী বিজয়ের সঙ্গে জুটি বাঁধেন চেতেশ্বর পূজারা। বিজয়ের ব্যাট থেকে ২২১ বলে আসে ১২৮ রান। একইভাবে সমানে সমানে টক্কর দিয়ে পূজারার সংগ্রহ ৩৬২ বলে ১৪৩। মুরলী বিজয় আউট হতেই মাঠে নামেন ক্যাপ্টেন কোহালি। ঠিক যেখানে প্রথম টেস্ট শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাটিং শুরু বিরাটের। সঙ্গে জোড়া রেকর্ডও। এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ সে়ঞ্চুরি (১০) আর ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি (১২)। প্রথমটায় ছাপিয়ে গেলেন রিকি পন্টিং ও স্মিথ (৯)কে দ্বিতীয়টায় পেড়িয়ে গেলেন সুনীল গাওস্কর (১১)কে। যখন থামলেন তখন তাঁর নামের পাশে লেখা হয়ে গিয়েছে ২৬৭ বলে ২১৩ রান।
দুটো সেঞ্চুরি, একটি ডবল সেঞ্চুরিতেও শেষ হয়নি ভারতের ইনিংস। তখনও বাকি ছিল অনেকটা। আরও একটা সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল নাগপুর। যা এল রোহিত শর্মার ব্যাট থেকে। ১৬০ বলে ১০২ রান করে অপরাজিত থাকলেন এই ব্যাটসম্যান। এর মধ্যেও ২ রানে আউট হলেন রাহানে, ৫ রানে অশ্বিন। শ্রীলঙ্কার হয়ে বল হাতে সফল একমাত্র পেরেরা। নিলেন ৩ উইকেট। বিরাট রানের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ধারে কাছে পৌঁছতে পারল না লক্ষ্যের। একমাত্র অধিনায়ক চান্ডিমলের ৬১ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো কিছু নেই। চতুর্থ দিন লাঞ্চের পর ১৬৬ রানেই গুটিয়ে গেল শ্রীলঙ্কার ইনিংস। এ বারও বল হাতে দুরন্ত অশ্বিন। বিরাটের পর আরও একটা রেকর্ড নিয়েই একদিন বাকি থাকতে জয় ছিনিয়ে নিল ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়ে দ্রুততম ৩০০তম উইকেট শিকারি হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়ে ফেললেন অশ্বিন।
২৩৯ রান ও এক ইনিংসে ম্যাচ জিতে নিল ভারত। ম্যাচের সেরা হলে বিরাট কোহালি।