‘স্পাইডারম্যান’ ডিভিলিয়ার্সে মুগ্ধ কোহালি, প্লে-অফের দৌড়ে আরসিবি

চিন্নাস্বামীতে প্রথমে ব্যাট করে আরসিবি তোলে ৬ উইকেটে ২১৮। জবাবে হায়দরাবাদ শেষ করে তিন উইকেটে ২০৪ স্কোরে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৮ ০৩:৫৪
Share:

অবিশ্বাস্য: উড়ন্ত ডিভিলিয়ার্স। অসাধারণ সেই ক্যাচ। ছবি: আইপিএল।

এবিডি, এবিডি। ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিয়ে তিনি যখন হাতটা একবার তুললেন, চিন্নাস্বামী গর্জে উঠল। মাঠে হাজির দর্শকদের কাছে তাঁর নামটাই তখন জপমন্ত্র। আর হবে না-ই বা কেন। এবি ডিভিলিয়ার্সের অতিমানবীয় পারফরম্যান্স যে প্লে-অফের দৌড়ে রেখে দিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে।

Advertisement

বৃহস্পতিবারের নাটকীয় ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে তিন রানে হারিয়ে প্লে-অফের আরও কাছে চলে এল আরসিবি। দু’পয়েন্ট পাওয়াই নয়, ভাল নেট রানরেট থাকায় লিগ তালিকায় পাঁচ নম্বরে উঠে এলেন কোহালিরা। ১৯ তারিখ রাজস্থান রয়্যালসকে হারাতে পারলে প্লে-অফে ওঠার খুব ভাল সম্ভাবনা তৈরি হয়ে যাবে তাঁদের।

চিন্নাস্বামীতে প্রথমে ব্যাট করে আরসিবি তোলে ৬ উইকেটে ২১৮। জবাবে হায়দরাবাদ শেষ করে তিন উইকেটে ২০৪ স্কোরে। এই ম্যাচ আরসিবি জিতে যাওয়ায় কলকাতা নাইট রাইডার্সের ওপরও চাপ তৈরি হয়ে গেল। শনিবার হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কেকেআর শেষ ম্যাচে হেরে গেলে আর মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, আরসিবি নিজেদের শেষ ম্যাচ জিতলে কিন্তু ছিটকে যেতে পারেন দীনেশ কার্তিকেরা। নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকার কারণে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার চিন্নাস্বামী দেখল তিন ব্যাটসম্যানের তাণ্ডব। এক দিকে ডিভিলিয়ার্স-মইন আলি। অন্য দিকে কেন উইলিয়ামসন। শেষ হাসি অবশ্য হাসল কোহালির দলই। সৌজন্যে অবশ্যই ডিভিলিয়ার্স (৩৯ বলে ৬৯)। তিনি সঙ্গে পান মইনকে (৩৪ বলে ৬৫)। তবে ডিভিলিয়ার্সের ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি আলোচনায় উঠে এসেছে তাঁর নেওয়া আলেক্স হেলসের ক্যাচও। যা নিয়ে কোহালি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ ও সব করতে পারে না। ক্যাচটা নিল যেন একেবারে স্পাইডারম্যান!’’ পাশাপাশি এবি-র ব্যাটিং নিয়ে বলেন, ‘‘এবির শট আমাকে এখনও মুগ্ধ করে রেখেছে।’’ হেলসের মারা ওই শটটা ডিপ মিডউইকেট বাউন্ডারির ধারে শূন্যে লাফিয়ে উঠে ধরে নেন ডিভিলিয়ার্স। ঠিক যে ভাবে চুম্বক লোহাকে আকর্ষণ করে। একশো গজের ওপর দৌড়ে এসে ডিভিলিয়ার্সকে জড়িয়ে ধরেন কোহালি।

কিন্তু তা সত্ত্বেও একটা সময় মনে হচ্ছিল, হায়দরাবাদ ম্যাচ জিতে যেতে পারে। বিশাল রান তাড়া করতে নেমে দুরন্ত ব্যাট করছিলেন উইলিয়ামসন (৪২ বলে ৮১)। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান। কিন্তু মহম্মদ সিরাজের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান হায়দরাবাদ অধিনায়ক। বাকি রানটা আর তুলতে পারেননি মণীশ পাণ্ডে (৩৮ বলে অপরাজিত ৬২)।

ম্যাচের পরে কোহালি বলছিলেন, ‘‘বিপক্ষ ভয় পেয়েছে দেখলেই আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ছি। আমাদের শক্তি দেখে অন্য দলগুলো এখন চায় না, আমরা ম্যাচ জিতি। এটা আমাদের ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচ ছিল। দর্শকদের আনন্দ দিতে পেরে ভাল লাগছে।’’ ম্যাচের সেরা ডিভিলিয়ার্স বলেন, ‘‘স্টেডিয়াম জুড়ে দর্শকদের মুখে আমার নাম শুনতে শুনতে অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছিল। তবে আমি মানুষই! আমার লক্ষ্য থাকে বোলারদের ওপর চাপ তৈরি করা।’’ আর ওই ক্যাচটা নিয়ে কী বলবেন? ডিভিলিয়ার্স বলেন, ‘‘ক্যাচটা কঠিন ছিল না। আমি যে ভাবে ধরলাম, তাতে কঠিন দেখাল। ভাগ্য ভাল যে, বলটা হাতে আটকে গিয়েছিল।’’

এই ম্যাচে একটা সময় লড়াইটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল রশিদ খান বনাম আরসিবির মহাশক্তিশালী ব্যাটিংয়ের। ব্যক্তিগত লড়াইটা রশিদই জিতলেন। কিন্তু তাঁর দল হেরে গেল। আরসিবির সেরা তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন আফগানিস্তানের এই লেগস্পিনারই। প্রথমে কোহালি (১২)। তার পর একই ওভারে ডিভিলিয়ার্স এবং মইনকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আরসিবিকে দু’শো রানের আগে থামাতে পারেননি। যে রানটা তুলতে পারল না হায়দরাবাদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন