আফসোস নেই, বিরাট-লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন ঈশ্বরন

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০৩:৫৩
Share:

প্রত্যয়ী: নিজস্ব দক্ষতায় ভরসা রাখছেন অভিমন্যু। ফাইল চিত্র

ভারতীয় টেস্ট দলে এ বার হয়তো সুযোগ পাননি অভিমন্যু ঈশ্বরন। কিন্তু সময় তো আর ফুরিয়ে যাচ্ছে না। ২৩ বছর বয়সি বাংলার ওপেনার মনে করেন, সুযোগ এক দিন ঠিক আসবে। তখন কিছুতেই যাতে তা হাতছাড়া না হয়, তার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহালিই এখন তাঁর রোলমডেল।

Advertisement

বর্তমান ভারত অধিনায়ক তাঁর ১৩তম ইনিংসে দেশের হয়ে প্রথম ওয়ান ডে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। তার পর থেকে নিজের ক্রিকেট দর্শন সত্তাই ফেলেছেন বিরাট। টেকনিকের সঙ্গে শিখরে নিয়ে গিয়েছেন ফিটনেসকে। পরিবর্তন হয়েছে খাদ্যাভ্যাসে। অভিমন্যুও সেই পথেই হাঁটছেন। ভারতীয় টেস্ট দলে সুযোগ না হলেও ভারত ‘এ’ দলের তিনিই স্থায়ী ওপেনার। ২৪ জুলাই থেকে শুরু ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’-র বিরুদ্ধে প্রথম বেসরকারি টেস্টে ভাল পারফর্ম করাই এখন তাঁর লক্ষ্য।

রবিবার ভারতীয় সময় মধ্য রাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ফোনে অভিমন্যু বলেন, ‘‘টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে ভাবতে চাই না। আমি বর্তমানে বিশ্বাসী। ভারত ‘এ’ দলের হয়ে পারফর্ম করার সুযোগ পেয়েছি। সেটা কাজে লাগাতে চাই।’’

Advertisement

টেস্ট দলে সুযোগ না পাওয়ায় কোনও রকম আক্ষেপ থেকে গেল? ‘‘মোটেও আক্ষেপ বলব না। এখনও উন্নতি করার প্রচুর জায়গা রয়েছে। সে দিকেই মনোনিবেশ করছি। চোখের সামনে দেখি, টানা পারফর্ম করা সত্ত্বেও প্রস্তুতিতে বিরাট কোহালি কোনও ফাঁকি দেয় না। বিরাট ভাই বুঝিয়ে দিয়েছে, সারা দিন নেটে শুধু ব্যাট করলে বর্তমান ক্রিকেটে টিকে থাকা সম্ভব নয়। টেকনিকে উন্নতির সঙ্গে চাই দুরন্ত ফিটনেস। তাই আমিও বাংলায় থাকলে প্রত্যেক দিন নেট করা না হলেও ফিজিক্যাল ট্রেনিং করি। ফিটনেস বাড়াতে পারলে অনেক ক্ষেত্রেই বেশি সুবিধা পাওয়া যায়।’’

ভারতীয় ‘এ’ দলে অভিমন্যুর সঙ্গেই রয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা। রবিবারের ঘোষিত টেস্ট দলে জায়গা পেয়েছেন বাংলার উইকেটকিপার। সিনিয়রের সুযোগ পাওয়ার আনন্দে সারা দিন তাঁর সঙ্গে কাটিয়েছেন অভিমন্যু। বলছিলেন, ‘‘কনফারেন্স রুমে বসে সবাই একসঙ্গেই দল ঘোষণায় চোখ রাখছিলাম। ঋদ্ধিদার নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ওকে সবাই অভিনন্দন জানাই। এত দিন চোটের জন্য বাইরে থাকার পরে আবার ভারতীয় দলের জার্সি পরার সুযোগ পাওয়ার মতো আনন্দ আর কীই বা হতে পারে।’’

অভিমন্যুও স্বপ্ন দেখেন, তাঁর হাতে টেস্ট ক্যাপ তুলে দিচ্ছেন ভারত অধিনায়ক। সেই স্বপ্ন নিয়েই ছোটবেলায় বাবা আর পি ঈশ্বরনের হাত ধরে দেহরাদূন থেকে কলকাতায় আসা। ছেলের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নপূরণের জন্য দেহরাদূনেই একটি কোচিং সেন্টার খোলেন তাঁর বাবা। এখনও বাড়ি গেলে সেখানেই অনুশীলন করেন অভিমন্যু। ছোটবেলায় ছেলের ব্যাটিং রেকর্ড করে রাখতেন বাবা। আউট হলে সেই ভিডিয়ো দেখিয়ে ছেলের ভুল শোধরানোর চেষ্টা করতেন সিনিয়র ঈশ্বরন। সব চেষ্টাই ছেলেকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সিতে দেখার জন্য।

ছেলেও হতাশ করেননি। ২৩ বছর বয়সে ভারতীয় ‘এ’ দলের এক নম্বর ওপেনার। যে কোনও দিন ভারতীয় দলের দরজা খুলে যেতেই পারে। তবে বর্তমান ভারতীয় ওপেনার কে এল রাহুল ও মায়াঙ্ক আগরওয়ালদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাওয়া বেশ কঠিন। এঁদের মধ্যে তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কাকে দেখেন ঈশ্বরন? ‘‘কেউই প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। প্রত্যেককে সতীর্থ হিসেবে দেখি। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখে যদি পারফর্ম করতে না পারি, তা হলে কোনও লাভ নেই। নিয়মিত রান করে গেলে সুযোগ এক দিন আসবেই। তার সদ্ব্যবহার করাই আসল পরীক্ষা।’’

অভিমন্যু যদিও এখন থেকেই তৈরি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মায়াঙ্ক আগরওয়াল অথবা কে এল রাহুল চোট পেলে, তাঁকেই হয়তো কিট গোছাতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন