প্রস্তুতি: কোচ দ্রাবিড়ের পরামর্শে তৈরি হচ্ছেন অভিমন্যু। —নিজস্ব চিত্র।
নিউজিল্যান্ডের হ্যামিল্টনে যখন পৌঁছন, তখন সেখানে চলছিল তুমুল ঝড়বৃষ্টি। পরের দিন ঝড় থামলেও বৃষ্টি কমেনি। তাই অনুশীলনেরও দফা-রফা। অথচ রাত পোহালেই নিউজিল্যান্ড ‘এ’-র বিরুদ্ধে চার দিনের ম্যাচ অভিমন্যু ঈশ্বরনদের। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়। ঘণ্টা খানেকের ক্লাস করেন তিনি। সেই ক্লাস থেকে যখন বেরোন ‘এ’ দলের ক্রিকেটাররা, প্রত্যেকেই বেশ চাঙ্গা।
সদ্য নিউজিল্যান্ড থেকে ফিরে শনিবার বিকেলে ইডেনের মাঠে দাঁড়িয়ে সেই ঘটনার কথাই শোনাচ্ছিলেন বাংলার ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরন। সে দিন ক্লাসে কী এমন বলেন রাহুল, যাতে এক ঘণ্টায় চাঙ্গা হয়ে ওঠেন অভিমন্যু, মায়াঙ্ক আগরওয়াল, করুণ নায়ার, শাহবাজ নাদিম, মহম্মদ সিরাজেরা? অভিমন্যু বলেন, ‘‘আমরা তো সে দিন মাঠেই নামতে পারিনি প্র্যাকটিসের জন্য। ইন্ডোরে হাল্কা প্র্যাকটিস করি। তাই রাহুলস্যর বলে দেন, কেমন হয় ওখানকার উইকেট। কুকাবুরা বলে বাউন্স বেশি থাকে, সিম অনেকক্ষণ পর্যন্ত শক্ত থাকে। তাই এ রকম উইকেটে ও পরিবেশে কোন ধরনের বোলারকে কী ভাবে সামলাতে হবে। রাহুল স্যরের এ রকম কয়েকটা টিপসেই আমাদের ধারণাটা পরিষ্কার হয়ে যায়। পরের দিন মাঠে গিয়ে দেখি উনি যা বলেছেন, তা ঠিকই। প্র্যাকটিস করতে না পারলেও তাই ওই ম্যাচে খেলতে আমাদের তেমন অসুবিধা হয়নি।’’
এই হ্যামিল্টনেই ১৯৯৯-এ একই টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করেছিলেন রাহুল। বছরের এই সময়েই খেলা সেই টেস্টের অভিজ্ঞতা দলের ছেলেদের জানান তিনি। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে অভিমন্যু ওপেন করতে নেমে ৪৭ রান করেন। দুই ম্যাচে ১০৫ রান করে আসা অভিমন্যু বলেন, ‘‘নিউজিল্যান্ডে পরিবেশ একেবারে অন্য রকম। মাঝে মাঝে খুব হাওয়া দেয়। বৃষ্টি পড়লে তো আরও কঠিন হয়ে যায় ব্যাট করা। ওখানে তা-ই হয়েছিল। তবু ওই অবস্থায় রাহুল স্যরের পরামর্শ সম্বল করেই আমরা ব্যাট করি।’’
পরের ম্যাচে ঝড়-বৃষ্টি বা পিচ নিয়ে সমস্যা ছিল না। ফলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা স্বচ্ছন্দে ব্যাট করেন। অভিমন্যু করেন ৫৬ রান। দুই ইনিংসেই সেট হয়েও আউট হন, যার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘একবার তো মনঃসংযোগে সমস্যা হয়। আর একবার একটা ভাল বলে আউট হই।’’ জেতার আনন্দ নিয়ে ফিরতে না পারলেও কিংবদন্তির কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাতেই বেশ খুশি তিনি। বলছেন এই শিক্ষা নিয়ে এ বার উন্নতি করতে চান তিনি। ইডেনে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে অনূর্ধ্ব ২৩ বাংলার হয়ে খেলছেন এখন। শুক্রবার থেকে হায়দরাবাদে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচেও খেলবেন। বললেন, ‘‘পরের রঞ্জি ম্যাচগুলোতে রাহুল স্যরের পরামর্শ কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’’ ইডেনে অবশ্য ছ’রান করেই আউট হয়ে যান শনিবার। তবে কথা দিলেন, রঞ্জিতে নিজেকে রাহুল-মন্ত্রেই তৈরি করে নামবেন।