রাজস্থান রয়্যালস আর কলকাতা নাইট রাইডার্স— প্লে-অফ থেকে দুটো টিমই মাত্র একটা জয় দূরে। এক নম্বরে থাকা চেন্নাই এ সব অঙ্কের বাইরে। চার নম্বর জায়গা নিয়ে লড়াই তিন টিমের— মুম্বই, বেঙ্গালুরু আর হায়দরাবাদ। আইপিএলের এই সময়টা বিশেষজ্ঞদের বোকা বানিয়ে দেয়।
কে ভেবেছিল মুম্বই, বেঙ্গালুরু আর হায়দরাবাদ এত হইচই ফেলে দেবে? ব্যাপারটা কী রকম বলুন তো? একটা হত্যারহস্য পড়তে গিয়ে প্রথম পরিচ্ছদেই মনে হল হত্যাকারী কে, সেটা বুঝে গিয়েছেন। সেখান থেকে একেবারে শেষ পাতায় গিয়ে দেখলেন যে, নতুন সব চরিত্র ঢুকে পড়ছে! বা আপনার একার সম্পত্তিতে ভাগ বসাতে হঠাৎ করেই তিন নতুন দাবিদারের আবির্ভাব। যা আপনার সুখের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করছে।
যাই হোক, শনিবারের কেকেআর বনাম পঞ্জাব ডুয়েল নিয়ে আলোচনায় আসি। আকাশ পরিষ্কার থাকলে বলতাম, এটা অসম লড়াই। কিন্তু গত কয়েক দিন হাওয়া যে দিকে চলছে, তাতে সতর্ক হওয়া ভাল। ভুলে যান যে নারিন ফিরে এসেছে। ম্যাচটা ই়ডেনে। ভুলে যান যে আন্দ্রে রাসেল আস্তে আস্তে গডজিলায় রূপান্তরিত হচ্ছে। এত কিছুর পরেও সোজাসুজি কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করা উচিত নয়।
কেকেআরের বারুদ ঠাসা বন্দুকে সুনীল নারিনের প্রত্যাবর্তনটা বাড়তি বারুদের মতো। নারিন এখন খুব স্পর্শকাতর অবস্থায় আছে। কিন্তু মনে হয় না তাতে কেকেআরের খুব বেশি আপত্তি আছে। দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ম্যাচে হয়তো নারিনকে দরকার ছিল না, কিন্তু কেকেআরের এই একটা ব্যাপার আছে— ওরা সব সময় নিজেদের প্লেয়ারদের পাশে দাঁড়ায়। যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ইউসুফ পাঠান। তবু একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে চার স্পিনার খেলানো, সঙ্গে পাঠানকে পঞ্চম স্পিনার হিসেবে রাখাটা প্রায় বৈপ্লবিক। যে সব ব্যাটসম্যান ভাবে স্পিনার মানেই সহজে রান তোলার সুযোগ, তাদের প্রতি অপমানজনকও!
সে সব যা-ই হোক, কেকেআরকে কিন্তু অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছে। রাসেল নিজের খেলাটাকে আরও কয়েক ধাপ উপরে নিয়ে গিয়েছে। ওর গতি আরও বেড়ে গিয়েছে। ইডেনের কিছুটা নরম চরিত্রের সঙ্গে যে শটটা মানায় না, সেই উঁচু লিফটটা রাসেল বেশ ভালই করছে। ওর শটের বেশির ভাগই কিন্তু শাঁসালো। আর ফিল্ডিংও অসাধারণ হচ্ছে। পেসাররাও দেখছি বাউন্ডারির ধারে দারুণ সব ক্যাচ ধরছে। আগের দিন উমেশ যাদব যেমন করল।
শনিবার ধাঁধার একটা দিক হয়তো পরিষ্কার হয়ে যাবে। আগেই বললাম, প্লে-অফের চেনা জায়গায় পৌঁছতে গেলে কেকেআরের চাই একটামাত্র জয়। অন্য দিকে পঞ্জাবের দুঃস্বপ্নের দৌড় প্রায় শেষের দিকে। ওদের এ বারের পারফরম্যান্স খুবই দুঃখের। আরও বেশি কারণ ওদের টিমে সন্দীপ শর্মার মতো দুর্দান্ত একজন ক্রিকেটার আছে।