ছেলেকে কোলে নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন জয়ী অধিনায়ক সনি নর্দে। —নিজস্ব চিত্র।
ভেবেছিলেন প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলকে জেতাবেন। ম্যাচের আগের দিন সেই আত্মবিশ্বাসের কথাই শুনিয়েছিলেন এডুয়ার্দো ফেরেরা।
কিন্তু, ম্যাচ শেষে একরাশ হতাশা। ভিআইপি গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে উত্তেজিত হয়ে কিছু বোঝাচ্ছিলেন ক্লাবের কয়েক জনকে। তাঁরাও মাথা নেড়ে সম্মতি জানাচ্ছিলেন। সাংবাদিকদের দেখে সেই ক্ষোভ যেন আবারও বেরিয়ে এল!
সত্যিই তো, তাঁর রক্ষণকেই তো গোল হজম করতে হয়েছে। খারাপ তো লাগবেই! গোল হজমের জন্য তো দায়ী সেই রক্ষণই। যখন কর্নার থেকে বলটা বক্সের মধ্যে ড্রপ খেল, তখন ক্লিয়ার করার জন্য কারও তৎপরতা দেখা যায়নি। যে কারণে ফাঁকায় হেড দিয়ে যেতে পেরেছিলেন কিংসলে। এডু বার বার বলছিলেন, ‘‘আমরা এত ভাল ট্রেনিং পাচ্ছি, এত ভাল কোচ, আমরা পারব না এই গোলটা আটকাতে? আমরা পারব না পাল্টা গোল দিতে?’’
নিজেকেই বার বার প্রশ্ন করে যাচ্ছিলেন যেন। সোনি ছাড়া সম্প্রতি কোনও বিদেশিকে হারের জন্য এতটা ভেঙে পড়তে দেখা যায়নি। বলছিলেন, ‘‘আমরা কী করে এ রকম ফুটবল খেললাম। আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। অনেক বেশি অনুশীলন করতে হবে।’’ বিশেষ করে সেটপিস থেকে গোল করতে না পারাটা যেন কিছুতেই মানতে পারছেন না। বলছিলেন, ‘‘কতগুলো কর্নার পেলাম, একটাও কাজে লাগাতে পারলাম না! ওরা কিন্তু কাজে লাগিয়ে ফেলল।’’ স্টেডিয়াম ছাড়তে ছাড়তে নিজের মনেই বিড় বিড় করছিলেন আর মাথা নাড়ছিলেন। তার পর হারিয়ে গেলেন জনসমুদ্রে। অচেনা-অজানা মানুষের ভিড়ে।
মাঠে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত এডু।
এডু এগিয়ে যেতেই স্বপরিবারে বেরিয়ে এলেন সনি নর্দে। দারুণ খোশ মেজাজে রয়েছেন তিনি। দল জিতেছে আর কী চাই। কোলে তখন জুনিয়র সনি। অত সংবাদ মাধ্যম দেখে একটু যেন ঘাবড়েই গিয়েছে। এক বার তো সনি ছেলেকেই বললেন, প্রশ্নের জবাব দিতে। সে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়ায় অগত্যা তাঁকেই জবাব দিতে হল। বলেন, ‘‘দল জিতলে তো ভালই লাগে। এই জয়টা দরকার ছিল। আগের ম্যাচটা ভাল খেলিনি আমরা। ঘুরে দাঁড়ানোর দরকার ছিল। যেটা দলের সবাই মিলে করতে পেরেছে।’’
আরও পড়ুন
শিল্টনের সেভ, কিংসলের গোলে ডার্বি জয় মোহনবাগানের
তবে, মোহনবাগান জিতলেও ইস্টবেঙ্গলকে ছোট করে দেখতে নারাজ সনি। বরং প্রতিপক্ষ যে কঠিন ছিল সেটাও মেনে নিলেন। বলছিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল খুব ভাল দল। ভাল সব প্লেয়ার রয়েছে ওই দলে। তার মধ্যে আমরা দলগত ভাবে নিজেদের সেরাটা দিয়েছি। পুরো দল একসঙ্গে খেলেছি। তার ফল পেয়েছি।’’
স্বপরিবারে স্টেডিয়াম ছাড়ার সময় বার বার আটকে যেতে হল সনি, ক্রোমাদের। একটাই আবদার, সেলফি চাই সেলফি। যাতে কোনও বিরক্তি নেই তাঁদের। হাসি মুখেই দিয়ে গেলেন।