জুনিয়র ক্রিকেটের ‘সহবাগ’ ঠাঁই পাননি শিবাজি পার্কে

‘চ্যালেঞ্জ ছুড়লেই আসল শ্রেয়সকে পাওয়া যায়’

রোহিত শর্মার তুলনায় টেকনিকে পিছিয়ে। ব্যাটিং-আগ্রাসনে আগে। দেশজ ক্রিকেটে তৈরি। আয়ত্তে আনছেন এখন বিদেশের উইকেটে সাফল্য রসায়ন। এবি ডে’ভিলিয়ার্স ‘সিনড্রোম’-এ ভুগছেন। বারবার বুঝিয়েও নাকি লাভ হচ্ছে না।

Advertisement

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪১
Share:

রোহিত শর্মার তুলনায় টেকনিকে পিছিয়ে। ব্যাটিং-আগ্রাসনে আগে।

Advertisement

দেশজ ক্রিকেটে তৈরি। আয়ত্তে আনছেন এখন বিদেশের উইকেটে সাফল্য রসায়ন।
এবি ডে’ভিলিয়ার্স ‘সিনড্রোম’-এ ভুগছেন। বারবার বুঝিয়েও নাকি লাভ হচ্ছে না।
ভারতীয় ক্রিকেটমহলে ছাত্রের হালফিল পরিচিতি ক্রমবর্ধমান ঠিকই, কিন্তু তাঁর ‘দ্রোণাচার্য’-র বোধহয় আরও বেশি। শ্রেয়স আইয়ারকে আইপিএল দর্শকের এখন না চেনার কিছু নেই। আইপিএলের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিমানদের এক জন ধরা হচ্ছে তাঁকে। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত মুম্বই তরুণের ছ’টা ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি দুই, স্ট্রাইক রেট একশো চল্লিশ। রোহিতের মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে তাঁর ৮৩ তো কোটলায় বছর দু’য়েক পর জেতাল দিল্লিকে। মুম্বইয়ের ‘ডেয়ারডেভিল’ তরুণকে তাই না চেনার কিছু নেই।
তাঁর কোচ প্রবীণ আমরেকে তো আরওই নয়। ভারতীয় দলের প্রতিনধিত্ব তো করেইছেন, কোচিংয়ে এসে রূপান্তর ঘটিয়েছেন রবিন উথাপ্পা থেকে শুরু করে অজিঙ্ক রাহানের জীবনের। এবং ছাত্র শ্রেয়স সম্পর্কে উপরের মন্তব্য তাঁরই।
কিন্তু মজার হচ্ছে, এ হেন শ্রেয়স আইয়ারেরই একটা সময় মুম্বইয়ের শিবাজি পার্ক জিমখানা ক্লাবে জায়গা হয়নি। ‘‘বারো বছর বয়স থেকে শ্রেয়সকে দেখছি। জিমখানা ক্লাবে তখন কোচিং করাতাম। কিন্তু পুরোটাই নিখরচায় হত বলে কুড়ি জনের বেশি নেওয়া যেত না। একটা বছর তাই ও ঢুকতে পারেনি,’’ শুক্রবার সন্ধেয় নয়াদিল্লি থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে বলছিলেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের সহকারি কোচ আমরে। জানেন যে, ছাত্র শ্রেয়স মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতিয়ে উঠে পুরো কৃতিত্ব দিয়েছেন ছোটবেলার গুরুকে। শুনেটুনে আমরে বললেন, শিবাজি পার্কে দেখেই হিরে চিনেছিলেন। ‘‘সুযোগ পেতেই পরপর স্থানীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি করতে শুরু করল শ্রেয়স। পরে জুনিয়র পর্যায়েও মারমার-কাটকাট ব্যাটিং শুরু করল।’’ যে ব্যাটিংয়ের জন্য জুনিয়র ক্রিকেটে এক সময় ‘সহবাগ’ বলে শ্রেয়সকে ডাকত তাঁর সতীর্থরা। যে ব্যাটিংয়ের জন্য ডেয়ারডেভিলসে কোচিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পরই আমরে দিল্লি কর্তাদের বলে দিয়েছিলেন, ‘‘আমার শ্রেয়সকে চাই।’’

কেন? আমরে যুক্তি দেন, শ্রেয়সের ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ের। এক-এক সময় যা দেখলে নাকি তাঁর মনে হয়, আগ্রাসনে এ রোহিতেরও আগে! ‘‘বাড়িয়ে বলছি না। রোহিতকে নিয়েও একটা সময় ভাল ভাল কথা আমি বললে লোকে অবাক হত,’’ বলে দিচ্ছেন আমরে। সঙ্গে সংযোজন, ‘শ্রেয়সের সবচেয়ে বড় গুণ, শ্রেয়স টি-টোয়েন্টিটা খেলবে টি-টোয়েন্টির মতো। ডে’জ ক্রিকেটটা ডে’জ ক্রিকেটের মতো।’’ শোনা গেল, টি টোয়েন্টিতে নাকি এখন এবি ডে’ভিলিয়ার্সকে ‘কপি’ করায় বেশি ব্যস্ত। ‘‘আরে, ও মাঝেমধ্যেই এখন এসে বলে এবির ব্যাটিংটা শিখিয়ে দিন তো! যত বলি পরে হবে, শোনে না,’’ ছাত্রের সারল্যের কথা বলতে গিয়ে হাসতে থাকেন আমরে।

Advertisement

কিন্তু এমন সরল ছাত্রের ভেতর থেকে বারুদটা বেরোয় কী ভাবে?

আমরের কথা ধরলে চ্যালেঞ্জ। ‘‘চ্যালেঞ্জের মুখে ফেললে আসল শ্রেয়স আইয়ারকে পাওয়া যাবে।’’ যেমন? যেমন, কেকেআরের বিরুদ্ধে ব্যর্থ হওয়ার পর শ্রেয়সের দ্রোণাচার্য তাঁকে একটা কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন, তুমি যখন সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে ৬০ করলে তা হলে কেকেআরে বিরুদ্ধে কেন পারলে না? মনে রেখো মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে তোমাকে কিন্তু একষট্টি করতে হবে।

একটু বেশি করেছেন। শ্রেয়স আইয়ার মোটে ৫৬ বলে ৮৩ করে ম্যাচটা জিতিয়েছেন মাত্র!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন