দুর্নীতি ফাঁসের পিছনে বিরোধী হঠাও স্ট্র্যাটেজি, বলছে ফেডারেশন

ফিফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে দুর্নীতির অভিযোগে ফিফার ভাবমূর্তি কলঙ্কিত হলেও, তাঁর জেতার বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের। বরং ফিফাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে নির্বাচনের আগে এ সব নাকি খোদ সেপ ব্লাটারেরই চাল! শেষ মুহূর্তের ‘মাস্টারস্ট্রোক’।

Advertisement

প্রীতম সাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৫ ০৩:১৬
Share:

ফিফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে দুর্নীতির অভিযোগে ফিফার ভাবমূর্তি কলঙ্কিত হলেও, তাঁর জেতার বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের। বরং ফিফাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে নির্বাচনের আগে এ সব নাকি খোদ সেপ ব্লাটারেরই চাল! শেষ মুহূর্তের ‘মাস্টারস্ট্রোক’।

Advertisement

ফিফা নির্বাচনে যোগ দেওয়ার জন্য জুরিখে আছেন এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল ও সচিব কুশল দাস। তাই ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত বললেন, ‘‘ফিফা বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সংস্থা। এখানে দুর্নীতি হবে, এটা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। তবে ব্লাটারও এক জন দক্ষ প্রশাসক। আর আমার ধারণা, উনি হয়তো দুর্নীতি দমন করতে পারছিলেন না। তাই এ সব ঘটনা তিনি নিজেই ঘটিয়েছেন। যাতে ফিফা একেবারে পরিষ্কার হয়। তিনিও বিরোধীশূন্য থাকতে পারেন। কেন না যাঁরা ধরা পড়েছেন বেশির ভাগই ব্লাটারের বিরোধী শিবিরের লোক।’’

সুব্রতবাবুর যুক্তি কতটা বাস্তব, তা সময় বলবে। কারণ ভারতীয় ক্রিকেটে এন শ্রীনিবাসনের কী দুরবস্থা হয়েছে, সেটা এখনও তরতাজা সবার মনে। সেক্ষেত্রে শুক্রবার ফিফার নির্বাচন জিতলেও যে ব্লাটারকে ধরা হবে না, সেই সম্ভবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এখন প্রশ্ন, ২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ কি হবে ভারতে? ব্লাটারের ভবিষ্যতের ওপর কতটা নির্ভরশীল ভারতের বিশ্বকাপ ভাগ্য? সুব্রতবাবু বললেন, ‘‘শনিবার থেকে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে নিউজিল্যন্ডে। সেটা যেমন সময়ে হচ্ছে, অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপও হবে ভারতে। ব্লাটার জিতুক বা হারুক, কোনও প্রভাব পড়বে না।’’

Advertisement

এতটা নিশ্চিত হয়ে বলার পিছনে অবশ্য কারণটাও ব্যাখ্যা করলেন তিনি। সুব্রতবাবুর কথায়, ‘‘২২ মে ফিফার টুর্নামেন্ট ডিরেক্টর স্মিথ কলিন এসেছিলেন ভারতে। তাঁর কাছে আমরা জানতে চেয়েছিলাম এই বিষয়টা। ওঁর সাফ কথা, নতুন প্রেসিডেন্ট যে-ই হোক না কেন, বিশ্বকাপ আয়োজনে কোনও অসুবিধা হবে না। এই বিষয়টা এখন পুরোপুরি তাঁর হাতে। নতুন প্রেসিডেন্ট চাইলেও সেটা বাতিল করতে পারবেন না।’’

তবে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ নিয়ে সেই ভাবে কোনও প্রশ্ন না উঠলেও, রাশিয়া এবং কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রবল বিতর্কের ঝড় উঠেছে বিশ্ব ফুটবলে। এমনকী সেই চিন্তায় এতটাই চাপে ব্লাটার যে, তিনি বৃহস্পতিবার ফিফা মেডিক্যাল কমিটির সভাতেও আসেননি। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এত বছরে প্রথম বার ফিফা প্রেসিডেন্ট এই সভায় যোগ দিলেন না। ফিফা মুখপাত্রের দাবি, ‘‘ব্লাটারের এ দিন অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সভা ছিল। সেগুলো করে আর সময় পাননি তিনি।’’

কিন্তু সেটাই কি একমাত্র কারণ? ব্লাটারের ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, তিনি নাকি নির্বাচনের ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত। যে ন’জন কর্তা গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁর মধ্যে আছেন ব্লাটারের কিছু ভোটারও। তাই বিরোধীশূন্য অভিযানের মধ্যে কী ভাবে তাঁদের আড়াল করা যায়, সেই রণনীতি ঠিক করতে কিছু বিশেষ পরামর্শদাতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন তিনি। একেবারে বন্ধ ঘরে। শুধু তাই নয়, নির্বাচনের আগে যে কাণ্ড ঘটেছে, তাকে ফিফার ‘শুদ্ধ ভাবমূর্তি’ হিসেবে কী ভাবে চালানো যায়, সে দিকেও নজর আছে শাসকগোষ্ঠীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন