ভক্তদের গান শুনে আপ্লুত আলেসান্দ্রোর চোখে স্বপ্ন

আজ, শুক্রবার ভোরের বিমানে কোঝিকোড় যাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। গোকুলমের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ খেলতে। খেতাব জিততে হলে শনিবারের ওই ম্যাচে শুধু জিতলেই হবে না। লিগ শীর্ষে থাকা চেন্নাই সিটি এফ সিকেও পয়েন্ট নষ্ট করতে হবে।  কোঝিকোড়ের পাশাপাশি তাই এনরিকে এসকুয়েদাদের চোখ রাখতে হবে কোয়েম্বত্তূরেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫৮
Share:

প্রত্যয়ী: এসকুয়েদাদের সামনে আবার কঠিন পরীক্ষা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

আই লিগের শেষ ম্যাচে ভাগ্যের সাহায্য চাইছেন আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস। আর ইস্টবেঙ্গল কর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন রেফারিং নিয়ে।

Advertisement

আজ, শুক্রবার ভোরের বিমানে কোঝিকোড় যাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। গোকুলমের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ খেলতে। খেতাব জিততে হলে শনিবারের ওই ম্যাচে শুধু জিতলেই হবে না। লিগ শীর্ষে থাকা চেন্নাই সিটি এফ সিকেও পয়েন্ট নষ্ট করতে হবে। কোঝিকোড়ের পাশাপাশি তাই এনরিকে এসকুয়েদাদের চোখ রাখতে হবে কোয়েম্বত্তূরেও। ইস্টবেঙ্গল কোচ সে কথা ভেবেই সম্ভবত বৃহস্পতিবার অনুশীলনের পরে বলে দিলেন, ‘‘খেতাব জিতে সমর্থকদের উৎসর্গ করতে চাই। আমরা জেতার জন্য তৈরি। ফুটবলাররাও বিশ্রাম পেয়ে চনমনে। তবে এখন যা পরিস্থিতি তাতে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে ভাগ্যেরও সাহায্যও দরকার।’’

খেতাব জেতার আগেই অবশ্য এ দিন সকালে যুবভারতী সংলগ্ন অনুশীলনে অভিনব কায়দায় সমর্থকরা উদ্বুদ্ধ করলেন ফুটবলারদের। মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে গান গাইলেন, হাততালি দিলেন। আর তা দেখে লালরাম চুলোভার মতো ফুটবলারও ‘ভাইকিং ক্ল্যাপ’-এর সঙ্গে তাল মেলালেন। আলেসান্দ্রোকেও দেখা গেল হাসতে।

Advertisement

ভোরের বিমান। তার উপর কোঝিকোড়ে পৌঁছতে দুপুর হয়ে যাবে। ফলে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন করার সুযোগ নেই। সে জন্যই এ দিন অনুশীলনের আগে প্রায় পঁচিশ মিনিট ধরে গোকুলম দলকে নিয়ে ভিডিয়ো বিশ্লেষণ থেকে শুরু করে প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা করেন লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ। পরে বলেও দিলেন, ‘‘চেন্নাই কী করবে তা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। ফলে জেতা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। সেটা মাথায় নিয়েই সবাই যাচ্ছে।’’ পাশাপাশি আলেসান্দ্রোর মন্তব্য, ‘‘আমাদের দল এই মুহূর্তে শুধু গোকুলমকে নিয়েই ভাবছে।’’

আই লিগের শুরুতে ভাল শুরু করে মাঝপর্বে ধাক্কা এবং শেষ পর্যন্ত ফের খেতাবের লড়াইতে ফেরা। এর পিছনে রসায়ন কী? প্রশ্ন করা হয়েছিল আলেসান্দ্রোকে। তিনি বলে দেন, ‘‘কঠিন পরিশ্রম। আমাদের দল একটা পরিবারের মতো। সেটাই কাজ করেছে।’’

থুতু কাণ্ডে ছ’ম্যাচ সাসপেন্ড হওয়া জবি জাস্টিন যেতে পারছেন না দলের সঙ্গে। তবে এ দিন মাঠে এসেছিলেন। জবির এই কাজে ঘনিষ্ঠ মহলে বিরক্তি প্রকাশ করলেও চূড়ান্ত পেশাদার আলেসান্দ্রো বলে দেন, ‘‘জবি ভাল ফুটবলার। অনেক গোল করেছে। আমাদের দলের অপরিহার্য ফুটবলার হয়ে উঠেছিল। জবি যখন খেলতে পারছে না, তখন ওকে বাইরে রেখেই দল তৈরি করতে হবে।’’ আই লিগের চূড়ান্ত লড়াইয়ের তিন দিন আগে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আরও দু’বছরের চুক্তি করেছেন আলেসান্দ্রো। এর কারণ কী? রিয়াল মাদ্রিদ যুব দলের প্রাক্তন কোচ বলে দেন, ‘‘সমর্থকদের ভালবাসার জন্যই দু’বছরের চুক্তি করেছি। আমি অভিভূত। ওদের যদি ট্রফিটা দিতে পারি, তা হলে ভাল লাগবে।’’ গোকুলম ইতিমধ্যেই অবনমন বাঁচিয়ে ফেলেছে। ফলে তারা খোলা মনেই জনি আকোস্তাদের বিরুদ্ধে খেলবে। এবং পয়েন্ট কাড়ার চেষ্টা করবে, এটা জানেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। সে জন্যই দলে খুব একটা পরিবর্তন করার ইচ্ছে নেই তাঁর। সে ভাবেই এ দিন অনুশীলন করান তিনি। ম্যাচ জিততে এবং গোলের জন্য আলেসান্দ্রো যে মূলত কর্নার ও ফ্রি কিকের উপর নির্ভর করছেন তা বোঝা গিয়েছে অনুশীলনে। লালরাম চুলোভা, লালরিন্দিকা রালতে, কোলাদোকে নিয়ে আলাদা করে সেট পিস অনুশীলন করালেন লাল-হলুদ কোচ। বাকিরা সেই অনুশীলন সারলেন সহকারী কোচের কাছে।

কোচ যখন ‘ভাগ্যের সাহায্য’ চাইছেন শেষ ম্যাচে, তখন ক্লাবের শীর্ষ কর্তা আবার প্রশ্ন তুলে দিলেন রেফারিং নিয়ে। বলে দিলেন, ‘‘আমরা বারবার খারাপ রেফারিংয়ের শিকার হয়েছি। এ বারও আশঙ্কায় আছি।’’ পাশাপাশি ওই কর্তার মন্তব্য, ‘‘দলমত নির্বিশেষে সবার উচিত শনিবার ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন করা। কারণ ট্রফি এলে সেটা তো বাংলাতেই আসবে।’’ পনেরো বছর পরে ইস্টবেঙ্গলের সামনে ফের খেতাব জয়ের সুযোগ। কোচ এবং কর্তারা যে সেই স্বপ্নে বুঁদ হয়ে রয়েছেন, বৃহস্পতিবার যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে তারই আবহ ধরা পড়ল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন