উৎসব: সোমবার ছিল বিদ্যাসাগর সিংহের (ডান দিকে) জন্মদিন। মাঠে অনুশীলনের পরে তাঁর মুখে কেক মাখিয়ে দিলেন জবি জাস্টিনরা। নিজস্ব চিত্র
সুপার কাপে অভিযান শুরু করার সপ্তাহ দু’য়েক আগে ধাক্কা ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। এনরিকে এসকুয়েদাকে দল থেকে বাদ দিলেন কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া!
গোকুলম এফসি-কে হারিয়ে রবিবার রাতেই কোঝিকোড় থেকে দলের সঙ্গে কলকাতায় ফেরেন মেক্সিকান স্ট্রাইকার। সোমবার সকালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে অনুশীলনে খোশমেজাজেই ছিলেন তিনি। বিদ্যাসাগর সিংহ জন্মদিনের কেক কাটছিলেন, সেখানেও ছিলেন তিনি। ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় জার্সি খুলে উপহার দেন এক লাল-হলুদ সমর্থককেও। তিনি যে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে শেষ অনুশীলন করে ফেললেন তা জানা গেল কোচের সাংবাদিক বৈঠকে। আলেসান্দ্রো বললেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের হয়ে এনরিকে আর কোনও ম্যাচ খেলবে না।’’ এ দিকে, এনরিকের বিকল্পও খুঁজে ফেলেছেন কোচ। উরুগুয়ের অনুর্ধ্ব-১৭ দলের প্রাক্তন ফুটবলার ব্রুনো ফোরনারোলি মেজ়জ়াকে দেখা যেতে পারে লাল-হলুদ জার্সিতে। ৩১ বছরের এই ফুটবলার খেলছেন মেলবোর্ন সিটিতে।
সদস্যসমাপ্ত আই লিগে ন’টি গোল করেছেন এনরিকে। অশালীন আচরণের জন্য জবি জাস্টিন ছয় ম্যাচে নির্বাসিত হওয়ার পরে কার্যত একাই ইস্টবেঙ্গলকে জিতিয়েছেন ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন মেক্সিকো দলের সদস্য। ইস্টবেঙ্গল যদি সুপার কাপের ফাইনালে ওঠে, তা হলেই খেলতে পারবেন জবি। এই পরিস্থিতিতে এনরিকে-কে কেন ছেঁটে ফেললেন? ইস্টবেঙ্গল কোচ বলে দিলেন, ‘‘সম্পূর্ণ ভাবেই এটা আমার সিদ্ধান্ত।’’ লাল-হলুদের কর্তারা অবশ্য বলছেন, ‘‘৩১ মে পর্যন্ত এনরিকের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। কোচের কথা বলার পরেই জানতে পারব ওকে ছেঁটে ফেলার কারণ।’’ হঠাৎ কী এমন হল যে দলের সেরা স্ট্রাইকারকে বাদ দিয়ে দিলেন আলেসান্দ্রো? লাল-হলুদ অন্দরমহলের খবর, সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে দেখার জন্য গোকুলম এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচ না খেলেই মেক্সিকো ফিরতে চেয়েছিলেন এনরিকে। ক্ষুব্ধ আলেসান্দ্রো অনুমতি দেননি। তখন থেকেই কোচের সঙ্গে সংঘাত শুরু তাঁর। আলেসান্দ্রো ঠিক করেন, কলকাতায় ফিরেই এনরিকে-কে ছেঁটে ফেলবেন।
জবি নির্বাসিত। এনরিকেও থাকবেন না। সুপার কাপে কি স্ট্রাইকার ছাড়াই খেলবে ইস্টবেঙ্গল? আলেসান্দ্রো বললেন, ‘‘সুপার কাপের আগেই নতুন এক জন স্ট্রাইকার নেব।’’ দশ দিনের ছুটি কাটাতে সোমবার গভীর রাতের উড়ানে স্পেন যাচ্ছেন আলেসান্দ্রো। জানালেন, কলকাতায় ফেরার আগেই এনরিকের বিকল্প চূড়ান্ত করে ফেলবেন। কোচের সিদ্ধান্তে বিস্মিত এনরিকে বাবার সঙ্গে বসে ছিলেন ড্রেসিংরুমের বাইরে। সদ্য প্রাক্তন হয়ে যাওয়া সতীর্থেরা এসে দেখা করে গেলেন তাঁর সঙ্গে। হতাশ এনরিকে বললেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল চাইলে ফিরতেও পারি।’’