—ফাইল চিত্র।
বাংলা বা দেশের ক্রিকেটে বিন্দুমাত্র অবদান নেই। অথচ বছরের পর বছর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে ন্যাশনাল ক্রিকেট ক্লাব বা এনসিসি-র ভোটাধিকার নিয়ে অভিযোগ ক্রিকেট মহলে বহু দিন ধরেই।
বিসিসিআই প্রধান জগমোহন ডালমিয়া যে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট, সেই ক্লাবের মধ্যে থেকেই এ বার এনসিসি-তে নৈরাজ্যের অভিযোগ উঠল। যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, ৩০ বছর ধরে যে সংস্থার সব সদস্যদের ডেকে কোনও বার্ষিক সভা হয়নি, যে ক্লাবে এত দিন ধরে কোনও নতুন সদস্যপদও দেওয়া হয়নি, সেই ক্লাব বছরের পর বছর বোর্ডে ভোটাধিকার পায় কী করে?
অথচ বরাবর বোর্ড নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভোট দিয়ে আসছে এই সংস্থা। পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি রাজ্য সংস্থা ছাড়া একমাত্র ক্লাব, যারা ভোট দিয়ে থাকে, এই এনসিসি।
তিন দশক ধরে এই ক্লাবের সদস্য কলাকার স্ট্রিটের ব্যবসায়ী পান্নালাল ঝাওয়ারের এক ঝাঁক অভিযোগ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গত তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটিতে কোনও রদবদল হয়নি। আমি যত দূর জানি, ১৭ জনের এই কমিটির এক সদস্য এখন জীবিত নন। বাকি ষোলোজনের মধ্যে আটজন গুরুতর অসুস্থ, কর্মক্ষমতাহীন। অথচ নতুন সদস্যও নেওয়া হয় না।’’ এই নিয়ে এনসিসি সচিব কমলা প্রসাদ কাজারিয়ার (যিনি নাকি জগমোহন ডালমিয়ার বাল্যবন্ধু বলে দাবি করেছেন তিনি নিজেই) সঙ্গে আলোচনার জন্য পুত্র প্রভাতকে পাঠিয়েছিলেন বলে জানান ঝাওয়ার। সেই আলোচনায় নাকি কাজারিয়া তাঁকে বলেন, সিএবি-ই নাকি তাঁদের নতুন সদস্য নিতে বাধা দিচ্ছে। কাজারিয়া প্রতি বছর বার্ষিক সভার নোটিস সদস্যদের পাঠানো হয় বলে দাবি করলেও তার কোনও প্রমাণ নাকি দেখাতে পারেননি এবং সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করতেও তিনি অপারগ বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
সবচেয়ে মারাত্মক অভিযোগটি হল, এনসিসি সদস্যদের মধ্যে অনেকেই জীবিত নন এবং ইডেনে প্রতি আন্তর্জাতিক ম্যাচের টিকিট তাদের নামে তোলাও হয়। ৩০ বছর আগের পরিচয়পত্র দেখিয়েই নাকি যে কেউ সেই টিকিট তুলতে পারে ক্লাব থেকে। অনুপস্থিত সদস্যদের কাছ থেকে কোনও রকম মনোনয়নের চিঠি চাওয়ারও চল নেই। কাজারিয়া না কি এই নিয়ে বলেছেন, এক বছর ধরে নতুন পরিচয়পত্র পাওয়া যায়নি।
বুধবার রাতে জগমোহন ডালমিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। তাঁর বাড়ি থেকে বলা হয় লিখিত অভিযোগ না দেখে এই ব্যাপারে উনি কিছু বলবেন না। অথচ ঝাওয়ারের দাবি, এই সব অভিযোগ ও কাজারিয়ার বক্তব্য জানিয়ে ডালমিয়াকে একাধিক চিঠি দিয়েছেন তিনি।
শেষ চিঠিটা দিয়েছেন গত ২৭ মে। ঝাওয়ারের দাবি, তাঁর সঙ্গে দেখাও করেন তাঁর পুত্র। ডালমিয়া শুধু আশ্বাস দিয়েছেন। কিছুই করেননি। এ দিন কাজারিয়াও ফোন ধরেননি। তবে এর একটা হেস্তনেস্ত না হলে আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছেন ঝাওয়ার। বলে দিলেন, ‘‘জগমোহন ডালমিয়াকে অন্তত পাঁচখানা চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তিন সপ্তাহ হতে চলল। তিনি কিছুই করেননি। গণতন্ত্র বলে কিছু নেই ক্লাবে। এ বার শুধু আদালতের রাস্তাই খোলা। কিছু না হলে হয়তো সেখানেই যেতে হবে।’’