পীযূষের আতিথেয়তার পর কানপুরে জমজমাট লড়াইয়ের অপেক্ষায় আছি

কলকাতা থেকে পটনা, লখনউ হয়ে কানপুর। বুধবারের এই গোটা সফরটাই বেশ মজাদার ছিল। বিশেষ করে লখনউ থেকে কানপুরের অংশটুকু। আগের দিনই লিখেছিলাম, লম্বা সফর আমার খুব পছন্দের। এই সফরটা আমার সেই ভ্রমণ-প্রীতি যেন আরও বাড়িয়ে দিল।

Advertisement

গৌতম গম্ভীর

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৬ ০৩:২৩
Share:

কলকাতা থেকে পটনা, লখনউ হয়ে কানপুর। বুধবারের এই গোটা সফরটাই বেশ মজাদার ছিল। বিশেষ করে লখনউ থেকে কানপুরের অংশটুকু। আগের দিনই লিখেছিলাম, লম্বা সফর আমার খুব পছন্দের। এই সফরটা আমার সেই ভ্রমণ-প্রীতি যেন আরও বাড়িয়ে দিল।

Advertisement

দেড় ঘণ্টার রাস্তায় সফরটা ছিল মাখনের মতো মসৃণ। আর আমাদের খাবারের যেমন অবধারিত ভাবে মশলা থাকে, সে ভাবেই সারা রাস্তায় থ্রি জি সিগন্যাল ছিল সবসময়।

হয়তো ভাবছেন, আপনাদের ক্যাপ্টেন এত খাইখাই করছে কেন? যাই বলছি, তাতে খাবারের গন্ধ! এর কারণ কিন্তু পীযূষ চাওলা আর ওর অসাধারণ আতিথেয়তা।

Advertisement

দুর্দান্ত লেগ স্পিনার হওয়ার পাশাপাশি পীযূষ কিন্তু একজন অতিথিপরায়ণ ভদ্রলোকও বটে। উত্তরপ্রদেশের ছেলে ও। ঘরোয়া ক্রিকেটে ও উত্তর প্রদেশের ক্যাপ্টেনও। তাই আমরা যখন সেই রাজ্যেরই শিল্পনগরী কানপুরে যাচ্ছি, তখন আমাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য যেন ও তৈরিই ছিল।

লখনউ-কানপুর বাসযাত্রা থেকেই আমাদের রসনাতৃপ্তির কাজ শুরু করে দেয় পীযূষ। জানা ছিল না যে, লখনউতে ‘ছপ্পন ভোগ’ নামের অসাধারণ একটা খাবারের দোকান রয়েছে। সফরটা শুরু হল সেখানকার ধোকলা দিয়ে। নরম, গরম আর নিখুঁত। হাইওয়েতে গিয়ে যখন আমাদের বাসের গতি বাড়ল, তখন আমাদের জন্য এল ‘ছোলে’ আর ‘চানে কি চাট’।

জানি যে কোনও খেলোয়াড়ের পক্ষে এ সব খাওয়া মানে বিরাট অপরাধ করা। কিন্তু পীযূষের হাসি আর এইসব খাবারের সুগন্ধ আমাদের সমস্ত সংযমের বাঁধের দফা রফা করে দেয়। এমনকী আমাদের বিদেশি অতিথিরাও নিজেদের ধরে রাখতে পারেনি। এটা জানি যে সাইমন কাটিচ নাকি মশলাদার খাবার বেশ পছন্দ করে। তবে জাক কালিসও যে তাদের খাবারের স্বাদ চেখেছে, এটা ‘ছপ্পন ভোগ’ এ বার গর্ব করে বলতে পারে।

পীযূষ কিন্তু এখানেই থেমে যায়নি। কানপুর পৌঁছনোর পর ও আমাদের টিম ম্যানেজার অভিষেককে সঙ্গে নিয়ে এনে হাজির করে লখনউয়ি খানা-খাজানার আর এক পর্ব। ওদের দৌলতে এ বার তুন্ডে কাবাব আর মাটন স্টু-র বিলাসিতায় ডুবে যাই আমরা। উপলব্ধি করলাম, সত্যিই স্বর্গ বলে যদি কিছু থেকে থাকে, তা হলে নিশ্চয়ই সেখানে রোজ লাঞ্চে তুন্ডে কাবাব আর ডিনারে সুগন্ধি স্টু খেতে দেওয়া হয়। শেষে ফিরনির ব্যবস্থাও ছিল। কিন্তু শেষে আমরা আর পারলাম না। আন্দ্রে রাসেল থাকলে মনে হয় এটাও বারণ করত না। গোটা তিনেক ফিরনি খেয়েই নিত বোধহয়। ওকে কলকাতায় রেখেই আসতে হল। আপাতত আমাদের মেডিক্যাল টিমের তত্ত্বাবধানে রয়েছে ‘রাস’।

কানপুর আইপিএল ম্যাচ আয়োজন করাটা কতটা চ্যালেঞ্জের সেটা কাগজে দেখছি। হ্যাঁ, শহরে মাত্র একটা পাঁচতারা হোটেল রয়েছে, দূষণ রয়েছে, প্রচণ্ড গরম আর রয়েছে নিরাপত্তার কড়াকড়িও। তবে এ সবের পাশাপাশি আমি নিশ্চিত সমর্থকরা আমাদের মাঠে দেখে খুশি হবেন। আমার মনে হয় এ সব নিয়ে নিরাশ হওয়ার ব্যাপারটা থেকে আমরা অনেক দূরে চলে এসেছি। আইপিএলের নতুন একটা ভেনুতে হওয়ার আইডিয়াটা সব সময়ই সেলিব্রেট হওয়া উচিত, ব্যাস। আমি শুধু দেখতে চাই ফ্যানদের ভাল-মন্দের দিকটা। টিকিট পাওয়াটা যেন সহজ হয়, মাঠে ঢোকাটা যেন সংসদে প্রবেশ করার মতো না হয়ে দাঁড়ায়। পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা আর স্টেডিয়ামে পরিষ্কার শৌচালয় থাকে। বাকিটা কেকেআর আর গুজরাত দেখে নেবে।

ভাল পিচ আর ছোট বাউন্ডারি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে দেখে মনে হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি একটা লড়াই জমা হয়ে আছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় যা সব খেয়েছি দেখতে হবে আমি যেন জিমটা মিস না করে যাই। সে দিকেই যাচ্ছি তবে কাউকে বলবেন না আমি এই লেখাটার দ্বিতীয় প্যারায় মিথ্যে লিখেছি। ওই সব সুখাদ্য খাওয়ার জন্য আমার পীষূষের হাসির প্রয়োজন হয়নি। আমি ততক্ষণে ওগুলোর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন